ইদানিং লক্ষ করছি নামাজ পড়ে ওঠার পর খুব ফ্রেশ লাগে হালকা হালকা এবং শান্তি লাগে কিন্তু এমন কেন হয়?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
HMMOBAROKBD

Call

আলহামদুলিল্লাহ! আপনি অতি ভাগ্যবান যে,আপনি আল্লাহর নবীর ১৪ শত বছর আগে দেওয়া ভবিষ্যৎবাণী মতো নামাজের উপকারিতা  বুঝতে পেরেছেন৷ আপনি জানতে চেয়েছেন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি কোণে নামাজের উপকারিতা/কেন নামাজে এতো প্রশান্তি?বিজ্ঞান কি বলে?-নামাজ আল্লাহর বিশেষ এক এবাদত,যা আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের সহায়ক, একমাত্র নামাজ মুসলিম-অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী এক বিশেষ এবাদত,তাছাড়া হাজারো উপকারীতার কথা আমরা কোরআন-হাদীস থেকে জানতে পারি। কিন্তু আজকাল বিজ্ঞান আমাদের নামাজ সম্পর্কে কি বলে তা নিয়েই আলোচনা করবো। তবে একথা দিবালোকের ন্যায়ই সত্য যে কোরআন বুঝতে আমাদেরকে বিজ্ঞান বুঝতে হবেনা তবে বিজ্ঞান বুঝতে হলে কোরআন বুঝতে হবে। তবে আজকাল বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন গবেষনার মাধ্যমে আমাদেরকে কোরআন বুঝতে অনেকাংশে সহায়ক হচ্ছে ।

আমরা অনেকেই জানি নামাজের বিভিন্ন ধরনের রুহানী উপকারীতার সঙ্গে সঙ্গে বৈজ্ঞানিক উপকারিতাও রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল শারীরিক উপকারীতা। যার উপর অনেক গবেষনা হচ্ছে ঐ সকল গবেষনার থেকে গুটি কয়েক উপস্হান করছি।

(ক) স্বাস্হ্য বিজ্ঞানের একটা মূলনীতি হল এই যে " মানুষের অন্তরে যখন শান্তি লাভ হয় তখন দেহের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির শক্তিও কয়েকগুন বেড়ে যায়" । আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শক্তি শারীরিক সুস্হতার ভিত্তি হিসাবে কাজ করে"। যার ফলে মানুষের শুধু প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তার বিক্ষিপ্ততা এবং চিন্তার ভিড় থেকে নিঃস্কৃতি লাভ হয় না বরং শারীরিক দিক দিয়েও মানুষের শক্তি সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়।

বর্তমান যুগের মানুষ বিশেষ করে পাশ্চাত্য জগত দুষিত ও বিকৃত ধ্যানধারনার এমনভাবে শিকার হয়ে পড়েছে যার ফলে শান্তির মহৌষধ এবং ঘুমাবার পিলও তাদের কোন কাজে আসছেনা । বস্তুত প্রকৃত আরোগ্য শুধুমাত্র বাহ্যিক বস্তুসমূহে অন্বেষন করাই তাদের বঞ্চিত হওয়ার প্রধান কারন । সুস্হতা একমাত্র আল্লাহর হাতে এটা তারা ভুলেই গিয়েছে।

যেমন ইব্রাহীম আঃ বলেছেনঃ "এবং আমি অসুস্হ হয়ে গেলে তিনিই আমাকে সুস্হতা দান করেন । সূরা শুআরাঃ আয়াতঃ ৮"এ ব্যাপারে সর্বোত্তম পন্থা হল ঔষধের সাথে সাথে দুআ করা আর নামাজই সর্বোত্তম দোয়া বা এবাদত। তাই বেশী বেশী করে আল্লাহর স্মরন করা এবং আল্লাহর প্রতি রুজু হওয়া। আর নামাযের মাধ্যমে এই কাজটা আমরা সবচেয়ে সুন্দরভাবে করতে পারি।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম প্রায় ১৪০০বছর আগে বলে গিয়েছিলেন -" নিশ্চয়ই নামাযে শেফা ও আরোগ্য রয়েছে "। (ইবনে মাজাহ) মুসলমান ছাড়া এমনকি বিধর্মীরা পর্যন্ত জানেন এবং অনেকে মানেন যে নবীজী কখনও মিথ্যা বলেননি।তাই তারা এই হাদীসটির বৈজ্ঞানিক ব্যাখা চেয়েছেন বিভিন্ন ভাবে।তাই মুসলমানদের মধ্যে পাকিস্তানের বিখ্যাত হৃদরোগ চিকিৎসক ডাক্তার মুহাম্মদ আলমগীর একটি মেডিক্যাল টীম তৈরী করেন যখন বিধর্মীরা এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখা চান । পাকিস্তানী একজন নামাজীর শরীরে তারা নামাযরত অবস্থায়ই ইলেকট্রনিক radiology মাধ্যমে পরীক্ষা করেন এবং নবীজীর কথার সত্যতা যাচাই করেন। আমি নিচে তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ননা করছি।

মানুষের বয়ঃবৃদ্ধির সাথে সাথে তার দেহের কোল্যাষ্টোল (CHOLESTEROLF) চর্বির দ্বারা দেহের শিরাগুলি ক্ষীন হতে ক্ষীনতর হতে থাকে । এই ক্ষীনতার কারনেই অসংখ্য রোগ-ব্যাধি দেখা দেয় । যেমন, ব্লাড প্রেসার, অর্ধাঙ্গ, হৃদরোগ, বৃদ্ধতা, হজম মন্দা ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখ্য । এই চর্বির বৃদ্ধিতারোধ করার সর্বোওম পন্হা হলো ব্যায়াম । যা নামাযের মাধ্যমে অতি উওমভাবে পূরন হয়ে যায় ।নামাজের প্রত্যেকটি রুকনই এক একটি প্রেসক্রিপশান

যেমন *তাকবীরে উলা, তাকবীরে উলা অর্থাৎ নিয়ত বাঁধার জন্য যখন কনুই পর্যন্ত হাত কাঁধ বরাবর উঠানো হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই রক্ত সঞ্চ।লনের তীব্রতা বেড়ে যায় ।

*কিয়াম – অর্থাৎ দাড়ানো অবস্হায় হাত বেঁধে রাখার সময় কনুই থেকে কব্জি ও আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত হাত ব্যবহৃত হয় ।এতে রক্তের চলাচল তীব্র হয় ।

*রুকু – রুকুর সময় হাঁটু কনুই কব্জি এবং কোমরের সবগুলি জোড় প্রবলভাবে ঝাকুনী দেয় ।

*সেজদা – সেজদার অবস্হায় হাত পা পেট পিঠ কোমর রান ও শরীরের সবগুলি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জোড়ায় নাড়া পড়ে এবং টানটান অবস্হায় থাকে । সেজদারত অবস্হায় মেয়ে লোকদের বুক রানের সাথে মিশে থাকে । এতে তাদের বিশেষ অভ্যন্তরীন রোগব্যাধির উপশম হয়। এতদ্ব্যতীত সেজদার সময় রক্ত মস্তিষ্ক পর্যন্ত সঞ্চালিত হয়। যা সুস্ততার জন্য একান্ত আবশ্যকীয় ।

*তাশাহহুদ - এই অবস্হায় কোমর থেকে পা পর্যন্ত রগগুলি টানটান হয়ে থাকে । একদিকে থাকে টাখনো ও পায়ের অন্যান্য জোড় এবং অন্যদিকে থাকে কোমর এবং গর্দানের জোড়াগুলি ।

*সালাম – সালাম ফেরানোর সময় গর্দানের দুই দিকের জোড়াগুলিই কাজ করে এবং গর্দান ঘুরানোর সময় রক্ত সঞ্চালন তীব্র হয় ।

নামাযের এই নড়চড়াগুলির দ্বারা একটি উত্তম ব্যায়াম হয়ে থকে । নামাযের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকার কারনে কুদরতী ভাবে ব্যায়ামের মধ্যেও একটি সামঞ্জস্য সৃষ্টি হয় । অন্যান্য ব্যায়ামের মত এতে কোন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্হার সৃষ্টি হয়না । উত্তম পন্থায় রক্ত সঞ্চালিত হওয়ার কারনে হৃদযন্ত্র সম্পূর্ন রূপে সুস্থ থাকে। এতে না রক্ত ঘন হয়ে যায় আর না রক্তের সঞ্চালনে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় ।তবে এ ক্ষেত্রে যথাযথ উপকারীতা সুন্নতি তরিকার নামাজেই সম্ভব।

নামাজের এরকম হাজারো উপকারিতা আছে যা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আমরা মুসলিমরা সালাত আদায় করি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আর তার প্রশংসা করবার জন্য। তাই আমাদের মুসলিমদের জন্য উপরে উল্লেখ করা উপকারগুলো হল এক ধরনের সাইড ডিশ(side dishes)।


বলতে পারেন ডেজার্ট(dessert), যা মূল খাবারের পরে সামান্য পরিমাণে খাওয়া হয়। একজন অমুসলিমকে নামাজের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য উপরোক্ত উপকারগুলুর কথা বলতে পারেন আপনি; তা হয়ত তাকে নামাজের দিকে আকৃষ্ট করবে, কিন্তু আমাদের মুসলিমদের জন্য প্রধান বা মূল খাবার অর্থাৎ নামাজের মূল উদ্দেশ্য হল আল্লাহর হুকুম পালনে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করার সাথে তাঁর প্রিয় বান্দা ও তার রসূলের বিধান মেনে চলা। এখানে একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন যে আমরা অনেকে নামাজ আদায় করি কিন্তু তার ফলাফল ঘরে তুলতে অক্ষম,তাহলে বুঝতে হবে যে,যেভাবে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সুন্নত তরীকা মোতাবেক নামাজ আদায় করা প্রয়োজন ছিল,তা আমার আপনার দ্বারা সে ভাবে নামাজ হচ্ছেনা। যদি কেউ মুরগীর ঠোকরের ন্যায় নামাজ পড়ে তাহলে কি আদৌ সেই নামাজ এই সকল রুহানী ও জাগতীক উপকার সাধন সম্ভব? 

নামাজ সর্বোত্তম পর্যায়ের চিকিৎসা এসম্পর্কে এক পাকিস্তানি ডাক্তার মাজেদ জামান উসমানী ইউরোপে ফিজিওথেরাপির ওপর উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণের জন্য গিয়েছেন। যখন সেখানে সম্পূর্ণ নামাজের ব্যায়াম পড়ালেন এবং বুঝালেন তখন তিনি এ ব্যায়াম দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে গেলেন যে, আমরা এতদিন পর্যন্ত নামাজকে এক ধর্মীয় আবশ্যক বলেই জানতাম এবং পড়তে থাকতাম, অথচ এখানে তো আশ্চর্য ও অজানা জিনিসের আবিষ্কার হয় যে, নামাজের মাধ্যমে বড় বড় রোগ নিরাময় হয়ে যায়।

ডাক্তার সাহেব তাকে একটি তালিকা প্রদান করেন যা নামাজের মতো ব্যায়ামের মাধ্যমে নিরাময় হয়— ১. মানসিক রোগ (Mental Diseases) ২. স্নায়ুবিক রোগ (Nerve Diseases) ৩. মনস্তত্ত্ব রোগ (Psychic Diseases) ৪. অস্থিরতা, হতাশা ও দুশ্চিন্তা রোগ (Restlessness, Depression and Anxiety) ৫. হার্টের রোগ (Heart Diseases) ৬. জোড়ার রোগ (Arthritis) ৭. ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ (Diseases due to Uric Acid) ৮. পাকস্থলীর আলসার (Stomach Ulcer) ৯. চিনি রোগ (Diabetes Mellitus) ১০. চোখ এবং গলা ইত্যাদির রোগ (Eye and E.N.T. Dieases)।

সুতরাং -সুন্নাত তরিকায় নামাজ রুহানীয়াত প্রশান্তির সাথে সাথে শারীরিক  শান্তিরও মাধ্যম এবং এটা বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত৷ 

এসম্পর্কে আরো জানতে পারেন এখানে- https://www.google.com/url?sa=t&source=web&rct=j&url=http://www.newsbybd.net/blog/blogdetail/detail/2300/salamat/70200&ved=2ahUKEwiM5K21kIHkAhX0unEKHd7vDQAQFjAHegQIBhAB&usg=AOvVaw0DPV54tzCIQGKxKYwmTOyI

https://www.google.com/url?sa=t&source=web&rct=j&url=http://www.newsbybd.net/blog/blogdetail/detail/2300/salamat/70200&ved=2ahUKEwiM5K21kIHkAhX0unEKHd7vDQAQFjAHegQIBhAB&usg=AOvVaw0DPV54tzCIQGKxKYwmTOyI

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ