আমাকে অনুচ্ছেদটি লিখে দিন

  • ইন্টারনেট থেকে কপি করে দিবেন না
  • গাইড থেকে কপি করবেন না 
  • সুন্দর করে একটা সুন্দর কবিতাসহ লিখে দিন।খাতায় লিখলে 2-3 পৃষ্ঠা হলে হবে। দয়া করে লিখে দিন,খুব দরকার।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
RushaIslam

Call

বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আমাদের জাতীয় উৎসব। আমাদের আরও উৎসব আছে। তার কিছু ধর্মীয় উৎসব আর কতক ঋতু উৎসব। আবার একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের মাতৃভাষার উৎসব। সে উৎসব রাজনৈতিকও বটে। আমাদের তরুণেরা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এই উৎসবের সৃষ্টি করেছেন। বাংলা নববর্ষ উৎসব আর একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাংলাদেশের সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মহান উৎসব।গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাংলাদেশের প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে চান্দ্রসৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। এছাড়াও দিনটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গৃহীত। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দিনটি নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেয়।ঐতিহ্যগত ভাবে সূর্যোদয় থেকে বাংলা দিন গণনার রীতি থাকলেও ১৪০২ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ থেকে বাংলা একাডেমী এই নিয়ম বাতিল করে আন্তর্জাতিক রীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে রাত ১২.০০টায় দিন গণনা শুরুর নিয়ম চালু করে।এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। এই কৃষিকাজের সুবিধার্থেই মুগল সম্রাট  আকবর ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০/১১ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং তা কার্যকর হয় তাঁর সিংহাসন-আরোহণের সময় থেকে (৫ নভেম্বর ১৫৫৬)। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসনকে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়। নতুন সনটি প্রথমে ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত ছিল, পরে তা  বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত আকবরের সময় থেকেই। সে সময় বাংলার কৃষকরা চৈত্রমাসের শেষদিন পর্যন্ত জমিদার, তালুকদার এবং অন্যান্য ভূ-স্বামীর খাজনা পরিশোধ করত। পরদিন নববর্ষে ভূস্বামীরা তাদের মিষ্টিমুখ করাতেন। এ উপলক্ষে তখন মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। ক্রমান্বয়ে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে পহেলা বৈশাখ আনন্দময় ও উৎসবমুখী হয়ে ওঠে এবং বাংলা নববর্ষ শুভদিন হিসেবে পালিত হতে থাকে।নববর্ষকে উৎসবমুখর করে তোলে বৈশাখী মেলা। এটি মূলত সর্বজনীন লোকজ মেলা। এ মেলা অত্যন্ত আনন্দঘন হয়ে থাকে। স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব প্রকার হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী এই মেলায় পাওয়া যায়। এছাড়া শিশু-কিশোরদের খেলনা, মহিলাদের সাজ-সজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন লোকজ খাদ্যদ্রব্য যেমন: চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা, বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি প্রভৃতির বৈচিত্র্যময় সমারোহ থাকে মেলায়।দিনটিকে বরণ করে নিতে, শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাওয়া নানা আনুষ্ঠানিকতার মাঝে বর্ণিলরূপে ধরা দেয় চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। অনেক ঘটনা -দুর্ঘটনা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ অতিক্রম করে শেষলগ্নে ,প্রস্তুতির ঘটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থাকে উৎসবমুখর।বৈশাখের প্রথম সকালে এই প্রাঙ্গন থেকেই বের হয় ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই আয়োজনের ব্যয় মেটাতে চারুকলা প্রাঙ্গণে চলছে বিভিন্ন চিত্রকর্ম ও মুখোশ বিক্রি। নববর্ষের ক্ষণ এগিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে এসব শিল্পকর্মের ক্রেতার ভিড়। এই আয়োজনটি একইসঙ্গে চারুকলার নতুন-পুরোনো সবার পুনর্মিলনী বটে। সবাই ছুটে আসেন কাজের তালে। এতো আলোচনা , ব্যস্ততা , রঙের ছড়াছড়ি সব পূর্ণতা পাবে নতুন বছরের প্রথমদিনের বণ্যাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে। ত্রিশ বছরের ঐতিহ্য ধরা দেবে মাথা নত না করার প্রত্যয়ে।বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ক্ষদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, বিসিক নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলার আয়োজন করে। রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ও রেস্টুরেন্টেগুলোর উদ্যোগেও উদযাপিত হয় নতুন বছরের উৎসব।সবশেষে রবির কিরণে হাসি ছড়িয়ে অপ্রাপ্তি বেদনা ভুলে  নব আনন্দে জাগবে গোটা জাতি পহেলা বৈশাখ পালন করে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ