Call

কুরআন শরীফের গুরুত্বপূর্ণ সূরা হলো ফাতিহা। সূরাটিকে আল কুরআনের সার সংক্ষেপও বলা হয়। কেউ কেউ এই সূরাটি কে সুরাতুস সালাতও বলে ।এ সূরা নাজিল হয়েছে মানুষের সার্বিক কল্যাণ মুক্তি ও পথপ্রদর্শক হিসেবে। সূরা ফাতিহার পাঠের ফজিলতঃ সূরা ফাতিহার ফজিলত অপরিসীম। এর ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি নিন্মরূপ। উবাই ইবনু কাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ উম্মুল কুরআনের মত তাওরাত ও ইনজিলে কিছু নাযিল করেননি। এটিকেই বলা হয়, আস-সাবউল মাছানী 'বারবার পঠিত সাতটি আয়াত', যাকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। আর আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, সে যা চাইবে। (নাসায়ীঃ ৩১৯) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা সূরা ফাতিহা পড়। কোন বান্দা যখন বলে, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। যখন বলে, আর-রহমানির রহীম, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। বান্দা যখন বলে, মালিকি ইয়াউমিদ্দীন। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। বান্দা যখন বলে, ইয়্যাকানা বুদু ওয়া ইয়্যা কানাস্তাইন, আল্লাহ বলেন, এ হচ্ছে আমার ও আমার বান্দার মাঝের কথা। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। বান্দা যখন বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম...(শেষ পর্যন্ত)। আল্লাহ বলেন, এসব হচ্ছে আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। (মুসলিম শরীফঃ ৩৯৫) এছাড়া সূরা ফাতিহাকে সূরাতুল হামদ, উম্মুল কুরআন, আসসাবউল মাছানি, ওয়াকিয়াহ, সূরাতুল কাফিয়্যাহ, সূরাতুল কানয, সূরাতুশ শিফা ও সূরাতুল আসাস নামেও অভিহিত করা হয়। সর্বশেষ কথা হলো সূরা আল ফাতিহা সর্ব রোগের মহৌষধ। এই সূরা নিয়মিত পাঠ করলে কিছু উপকার পাওয়া যায়ঃ (ক) হযরত জাফর সাদেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, সূরা ফাতিহা ৪০ বার পাঠ করে পানির ওপর দম করে কোনো জ্বরে আক্রান্ত লোকের মুখমণ্ডলে ছিঁটিয়ে দিলে, আল্লাহ জ্বর এ সূরার বরকতে জ্বর দূরীভূত করে দেন। (খ) ফজরের নামাজের সুন্নত ও ফরজ নামাজের মধ্যে ৪১ বার এ সূরা পাঠ করে চোখে ফুঁ দিলে চোখের ব্যথা দূর হয়। (গ) রাতের শেষ প্রহরে ৪১ বার এসূরা পাঠ করলে আল্লাহ পাক রিযিক বৃদ্ধি করে দেন। (ঘ) দাঁতের ব্যথা, পেটের ব্যথা, মাথা ব্যথার জন্যে ৭ বার এ সূরা পাঠ করে দম করলে আল্লাহ পাক ব্যথা দূর করে দেন। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তিরিশজন অশ্বারোহীকে এক ক্ষুদ্র সামরিক অভিযানে পাঠান। আমরা এক সম্প্রদায়ের নিকট পৌঁছে যাত্রাবিরতি করলাম এবং আমাদের মেহমানদারি করার জন্য তাদের অনুরোধ করলাম, কিন্তু তারা অস্বীকার করলো। ঘটনাক্রমে তাদের নেতা 'বিষাক্ত প্রাণীর' হুলবিদ্ধ হলো। তারা আমাদের কাছে এসে বললো, তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে বিছার কামড়ে ঝাড়ফুঁক করতে পারে? আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি পারি। তবে তোমরা আমাদেরকে একপাল ছাগল-ভেড়া না দিলে আমি ঝাড়ফুঁক করবো না। তারা বললো, আমরা তোমাদেরকে তিরিশটি বকরী দিবো। আমরা তা গ্রহণ করলাম এবং আমি তার উপর সাতবার ‘আলহামদু’ সূরাটি পাঠ করলাম। সে সুস্থ হয়ে উঠলো এবং আমরা ছাগলগুলো গ্রহণ করলাম। পরে এ ব্যাপারে আমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হলে আমরা বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আমাদের না পৌঁছা পর্যন্ত তোমরা তাড়াহুড়া করো না। আমরা তাঁর নিকট উপস্থিত হওয়ার পর আমি যা করেছি তা তাঁকে অবহিত করলাম। তিনি বলেনঃ তুমি কিভাবে জানলে যে, এটা দ্বারা ঝাড়ফুঁকও করা যায়! তোমরা সেগুলো বণ্টন করে নাও এবং তোমাদের সাথে আমাকেও একটি ভাগ দাও। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বরঃ ২১৫৬ হাদিসের মানঃ সহিহ) [সংগ্রহ বিস্ময়ে থেকে]

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ