ঘুমঃ
দিনের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ঘুম হচ্ছে সেই সময় যখন আমরা আমাদের চারপাশ সম্বন্ধে অবহিত থাকি না। প্রধানত দুধরনের ঘুম হয়ঃ
সারা রাতের পাঁচ ভাগের এক ভাগ আমাদের এই ঘুমে কাটে। রেম ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক সজাগ থাকে, আমাদের মাংসপেশি শিথিল থাকে, আমাদের চোখ এদিক থেকে ওদিকে ঘুরতে থাকে এবং আমরা স্বপ্ন দেখি।
এই ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় থাকে, তবে শরীর নড়াচড়া করতে পারে। এই সময় হরমোন নি:সৃত হয় এবং দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর আবার সতেজ হয়ে ওঠে। নন রেম ঘুমের চারটি স্তর আছে।
১। ঘুমের আগের স্টেজ - মাংসপেশি শিথিল হয়, হৃদস্পন্দন কমে আসে, শরীরের তাপমাত্রা কমে।
২। হাল্কা ঘুম - এই স্টেজে সহজেই ঘুম ভেঙ্গে যায়, চারপাশ সম্বন্ধে স্বাভাবিক সচেতনতা থাকে।
৩। ‘স্লো ওয়েভ ঘুম’ – ব্লাড প্রেসার কমে, এই স্টেজে লোকে ঘুমের ঘোরে হাটে বা কথা বলে।
৪। গাঢ় ‘স্লো ওয়েভ ঘুম’ – ঘুম সহজে ভাঙতে চায় না। ভেঙ্গে গেলে চারপাশ সম্বন্ধে স্বাভাবিক সচেতনতা থাকে না।
আমরা রাতে রেম এবং ননরেম ঘুমের মধ্যে থাকি, অন্তত পাঁচবার এই স্টেজগুলি ঘুরে ঘুরে আসে। সকালের দিকে আমরা বেশি স্বপ্ন দেখি।
বিশ্রামঃ
বিশ্রাম কি ও কেন? সবার কাছে এর উত্তর এক হলেও বিশ্রামের ধরন নিয়ে অবশ্য মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ যেমন নিজ ঘরেই বিশ্রাম নিতে পছন্দ করেন, কেউ-বা আবার দূরে কোথাও নির্জন স্থানকে প্রাধান্য দেন। কারো কাছে আবার বিশ্রাম মানে জনবহুল কোনো উৎসব বা স্থানে ঘুরতে যাওয়া। তবে বিশ্রামের জন্য নির্জন ও নির্মল স্থানকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক সচিত্র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশ্রামের এমনই কিছু সংজ্ঞা।
১. মাথার উপর খোলা নীল আকাশ, সামনে নীল সাগর আর তার বয়ে চলা মৃদু ঢেউ! মন আর দেহকে চাঙ্গা করতে এমন প্রাকৃতিক পরিবেশের জুড়ি নেই।
২. আবার জেনেকে ক্লপের কাছে বিশ্রামের জন্য বিশুদ্ধ বায়ু সেবনে পর্বতারোহনের বিকল্প নেই। মেঘের উপর মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিলে মন ও দেহের কি উপকারিতা তা জানতে ক্লপের পাশে বসতে পারেন। ছবিটি রোমানিয়ার বুচেজি পর্বতের উপর থেকে তোলা।
৩. বিশ্রাম বলতে কারো কাছে সুন্দর পরিবেশের মাঝে এক কাপ গরম চা আর ভালো একটি বই।
৪. কেউ আবার বিশ্রাম বলতে বোঝেন ইয়োগার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলা। চিত্রগ্রাহক এলেক্সা রবিনের মতে, দিন দুনিয়ায় যাই হোক না কেন যোগ ব্যায়ামের মাঝে থাকলে তার সব কিছু শান্ত ও মনোরম মনে হয়।
৫. লুসি ম্যানিংয়ের মতো কেউ কেউ আছেন যারা চুপচাপ বসে থাকতে পারেন না। কাজেই হাতে প্রয়োজনীয় কাজ না থাকলে তিনি বিশ্রাম বলতে বোঝেন ঝুঁকিপূর্ণ দুর্গম রাস্তায় সাইকেল চালানো।