মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো সাপ মারার আগে তিনবার তাকে সাবধান করবে। এর পরও যদি সে (গর্ত থেকে) বের হয়, তখন তাকে মেরে ফেলবে। কেননা সে শয়তান।’ (সুনানে আবু দাউদ; হা. নং ৫১৬৮)

হজরত সালিম (রহ.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সেই সাপ মারবে, যার পিঠে দুটি সাদা রেখা আছে এবং যার লেজ নেই। কেননা এরা বিষধর হওয়ার কারণে দর্শনশক্তি বিনষ্ট করে দেয় এবং গর্ভস্থিত সন্তান ধ্বংস করে দেয়।বর্ণনাকারী বলেন, এর পর থেকে আবদুল্লাহ (রা.) যেকোনো সাপ দেখতে পেলে তা মেরে ফেলতেন। একবার আবু লুবাবা (রা.) অথবা জায়েদ ইবনে খাওয়াব (রা.) তাঁকে একটি সাপ মারতে উদ্যত দেখে বললেন, নবী করিম (সা.) ঘরে বসবাসকারী সাপ মারতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ; হা. নং ৫১৬২)

অনেক সময় সাপের রূপ ধারণ করে নেককার জিনরা বিচরণ করে থাকে। যেমনটি হাদিস থেকেও জানা যায়। হজরত ইয়াজিদ ইবনে মাওহাব (রহ.) আবু সাইদ (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনএকদা আমি আবু সাঈদ খুদরি (রা.)-এর কাছে এসে বসি। এ সময় আমি তাঁর চৌকির নিচে কিছুর আওয়াজ শুনতে পাই। আমি তাকিয়ে দেখি যে একটি সাপ। তখন আমি দাঁড়ালে আবু সাইদ (রা.) জিজ্ঞাসা করেন, তোমার কী হয়েছে? তখন আমি বললাম, এখানে একটা সাপ আছে। তিনি বলেন, তুমি কী করতে চাও? তখন আমি বললাম, আমি তাকে মেরে ফেলব। তখন তিনি তাঁর বাড়ির একটি ঘরের দিকে ইশারা করে বলেন, এখানে আমার চাচাতো ভাই থাকত। খন্দকের যুদ্ধের সময় সে রাসুল (সা.)-এর কাছে ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চায়। কেননা সে তখন নতুন বিয়ে করেছিল। তখন রাসুল (সা.) তাকে অনুমতি দেন এবং বলেন, তুমি তোমার হাতিয়ার নিয়ে যাও। সে নিজ ঘরে ফিরে তার স্ত্রীকে ঘরের দরজার ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে তার (স্ত্রীর) প্রতি কলম দিয়ে ইশারা করে। তখন তার স্ত্রী বলল, তাড়াহুড়ো কোরো না। এসে দেখো কী যেন আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। তখন সে ঘরে ঢুকে একটি কুৎসিত  সাপ দেখতে পায়। সে তাকে বল্লম দিয়ে হত্যা করে এবং বল্লমে তার দেহ ফুঁড়ে বাইরে নিয়ে আসে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি জানি না, এরপর কে আগে মারা গিয়েছিললোকটি, না সাপটি। তখন তার জাতির লোকেরা রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলেছে, আপনি দোয়া করুন, যাতে আমাদের সঙ্গী বেঁচে যায়। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করো।এরপর তিনি বলেন, ‘মদিনার একদল জিন ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাই তোমরা যখন তাদের (সাপ) কাউকে দেখবে, তখন তাকে তিনবার ভীতি প্রদর্শন করবে যে আর বের হবে না, অন্যথায় মারা পড়বে। এরপর যদি সে (গর্ত থেকে) বের হয়, তখন তাকে মেরে ফেলবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হা. নং ৫১৬৭)

আমর ইবনু মুহাম্মদ আন নাকিদ (রা) তার পিতা সূত্রে বর্ণনা করেন, নাবী করিম (স) ইরশাদ করেছেন, ‘সব সাপ মেরে ফেলো। বিশেষ করে পিঠে দুটি সাদা রেখাবিশিষ্ট ও লেজ কাটা সাপ। কেননা এ দুটি গর্ভপাত ঘটায় এবং দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেয়।বর্ণনাকারী বলেন, ‘ইবনে ওমর (রা) যে কোনো সাপ দেখলে মেরে ফেলতেন। একদিন আবু লুবাবা ইবনে আব্দুল মুনজির (রা) দেখলেন যে, তিনি একটি সাপ ধাওয়া করছেন। তখন তিনি বললেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স) বাড়িঘরে অবস্থানকারী সাপ মারতে নিষেধ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৩১) মহানবী (স) আরো বলেন, ‘কোনো সাপ মারার আগে তিনবার তাকে সাবধান করবে। এর পরও যদি সে (গর্ত থেকে) বের হয়, তখন তাকে মেরে ফেলবে। কেননা সে হলো শয়তান।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৬৮)

তাই আমাদের উচিত বুঝেশুনে সাপ মারা। তবে তা হত্যা করা নাজায়েয নয়। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

সাপ মারা জায়েয। তবে ঘরে থাকলে এদেরকে তিনবার সাবধান করতে হবে এরপরও তা হতে ক্ষতিকর কিছু প্রকাশ পেলে তবে এটাকে মেরে ফেলতে পারেন। মুসলিম ইবনে ইবরাহীম (রহঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কষ্টদায়ক কাল রঙয়ের সাপ ও বিচ্ছুকে তোমরা নামাজরত অবস্থায়ও হত্যা করবে। ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিম্বারের উপর ভাষণ দানের সময় বলতে শুনেছেন, সাপ মেরে ফেল। বিশেষ করে মেরে ফেল ঐ সাপ, যার মাথার উপর দুটো সাদা রেখা আছে এবং লেজ কাটা সাপ। কারণ এই দুই প্রকারের সাপ চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয় ও গর্ভপাত ঘটায়। (সহীহ বুখারী হাদিস নম্বরঃ ৩২৯৭, সূনান আবু দাউদ হাদিস নম্বরঃ ৯২১ হাদিসের মানঃ সহিহ)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ