শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

হাত-পায়ে অবশ বা অনুভূতিহীন হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা আমাদের যে কারোরই হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এটা সাময়িকের জন্য যে কোনো কারণে হতে পারে, আবার অনেক সময় প্রায়ই আমাদের যে কারও এই সমস্যা অনুভূত হতে পারে। তবে যাদের ক্ষেত্রে প্রায়ই এই সমস্যা অনুভূত হয়, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, কারণ হাত ও পা অবশ হয়ে যাওয়া হতে পারে মারাত্মক কিছু রোগের পূর্ব লক্ষণ। যেমন-

ডায়াবেটিস

অনেক মানুষই ডায়াবেটিসে ভুগে থাকেন। পেরিফেরাল স্নায়ুরোগের এটি একটি সাধারণ কারণ। এর ফলে পায়ের পাতা অবশ হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়, যা আস্তে আস্তে ওপরে ওঠে।

সিস্টেমিক ডিজিজ

এই রোগে শুধু শরীরের একটি অঙ্গই আক্রান্ত হয় না। কিডনি রোগ, ভাস্কুলার ডিজিজ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার বা দুর্ঘটনায় কোনো স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে তা সমগ্র শরীরের ওপর এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এসব প্রতিক্রিয়ার উপসর্গ হিসেবে শরীরের কোনো অংশ অবশ হয়ে পড়তে পারে।

মাল্টিপল সেক্লরোসিস

প্রাথমিক অবস্থায় অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হালকা থাকলেও ঘন ঘন এমন হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এবং চিকিৎসককে দেখানো উচিত। কারণ এটি মাল্টিপল সেক্লরোসিসে পরিণত হতে পারে। এই সমস্যার ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্রের মায়োলিন সিথ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে ভারসাম্যের ওপর প্রভাব পড়ে, মাথা ঘুরায় এবং ক্লান্তি ভর করে।

পেরিফেরাল আরটারি ডিজিজ

এই রোগে মস্তিস্ক, বাহু ও দেহের বিভিন্ন অঙ্গে যে ধমনী রক্ত সরবরাহ করে নিয়ে যায় তাতে পল্গাকের সৃষ্টি হয়। ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ফাইবারস টিস্যু এবং কোলেস্টেরলের কারণে প্লাক গঠিত হয়। চিকিৎসা করা না হলে পল্গাক জমে শক্ত হয়ে যায় এবং ধমনীর পথকে সরু করে দেয়। এর ফলে পায়ের ওপর প্রভাব পড়ে এবং ওই অংশে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

টারসাল টানেল সিনড্রোম

পায়ের পাতার পেছনের অংশে গোড়ালির ভেতরের দিকে এই টানেল থাকে। টারসাল টানেল সিনড্রোমটি পোস্টেরিওর টিবিয়াল নিউরালজিয়া নামেও পরিচিত। গোড়ালির ভেতরের দিকের টিবিয়াল স্নায়ুর সঙ্কোচনের ফলে এমন হয়। চিকিৎসা করা না হলে গোড়ালির অসাড়তা আস্তে আস্তে ছড়িয়ে যেতে থাকে এবং স্নায়ুর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।

কারপাল টানেল সিনড্রোম

কবজির মিডিয়ান স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে কারপাল টানেল সিনড্রোম হতে দেখা যায়। এই মিডিয়ান স্নায়ুটি হাতের তালু এবং প্রথম তিনটি আঙুলের অনুভূতি এবং নড়াচড়ায় সাহায্য করে।

নিউরালজিয়া

স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে তীব্র ব্যথা এবং জ্বলুনির অনুভূতি হতে দেখা যায়। শরীরের যে কোনো স্থানেই হতে পারে এই রোগ। বিশেষ করে সংক্রমণ এবং বয়সের কারণে হতে পারে এই রোগ।

স্ট্রোক

হৃদপিণ্ডে যদি পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ না হয় তাহলে স্ট্রোক হয়। বিশেষ করে রক্তনালিতে ব্লকেজ হলে এমন হয়। স্ট্রোকের প্রথম লক্ষণ বাম হাত অবশ হওয়া, যা হাতের তালু পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন, ভারসাম্য নষ্ট হয়, কথা বলায় সমস্যা হয় এবং হাত, মুখ ও পা অবশ হয়ে যায়।

লাইম ডিজিজ

এটি একটি পতঙ্গবাহিত ইনফ্লামেটরি ডিজিজ, যা খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তি, জ্বর, পেশি ও জয়েন্টের ব্যথা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এবং লিল্ফম্ফ নোড ফুলে যাওয়া। সময়মতো চিকিৎসা করা না হলে স্নায়ুর জটিলতা সৃষ্টি হয়, হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়।  সূত্র: 


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ