যদি ঐ ব্যাক্তি তথা যিনি মুয়াজ্জিন,ইমাম,ওয়ায়েজিন;তিনি যদি ইচ্ছা করে টাকা না নেন,অর্থাৎ তিনি যদি টাকা নির্ধারন না করেন,তাহলে টাকা নেয়া ঠিক হতে পারে।যেমন-অমুক ওয়ায়েজিনের বেতন ৪০হাজার টাকা।এমনটা নির্ধারন করে ওয়াজ করে টাকা নেয়া হারাম।আর যদি ওয়ায়েজিন,ইমাম,সইচ্ছায় লিল্লাহিয়াতের জন্য ওয়াজ করেন ইমামতি করেন অযান দেন,তারপরও লোকে খুশি হয়ে টাকা দেয়।সেটা নেয়া ঠিক হবে।এছাডা কুরআনের হাদীসের প্রমান আমার জানা নেই।
ইমামতি করে এবং আজান দিয়ে পারিশ্রমিক নেয়া হারাম হওয়ার পক্ষে একটি মত থাকলেও বর্তমানে পারিশ্রমিক নেয়া আরেকটি মত অনুযায়ী বৈধ।নিচে হারাম হওয়ার পক্ষে কোরআন,সুন্নাহ ও যুক্তি তুলে ধরা হলো;
কোরআন থেকে দলীল,
•সূরা নজমের ৩৯ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, মানুষ তার চেষ্টার প্রতিফল পায়। অর্থাৎ যে আমল সে করে তার প্রতিদান হিসেবে নেকি পায়। ইমামতি ও মুআজ্জিনী যেহেতু আমল,আর আমলের প্রতিদান আল্লাহ পাক দেন, তাই পার্থিব পারিশ্রমিক নেয়া বৈধ নয়।
• সূরা কলমের ৪৬ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, আপনি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চাইবেন? তাহলে তো তাদের উপর বোঝা পড়বে। অর্থাৎ দ্বীনি কাজ-কর্ম করে এর পারিশ্রমিক যদি চান তাহলে এটাকে তারা বোঝা মনে করে দ্বীন থেকে সরে পড়বে। ইমামতি মুআজ্জিনী যেহেতু দ্বীনি কাজ, এর বিনিময় নেয়াও দ্বীন থেকে মানুষের সরে পড়ার কারণ হওয়ায় তা নেয়া বৈধ নয়।
•সূরা জাছিয়ার ১৫ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, যে নেক কাজ করে সেটা সে তার নিজের জন্যই করে। ইমামতি ও মুআজ্জিনী যেহেতু নেক কাজ সুতরাং ইমাম মুয়াজ্জিন ও তা নিজের জন্যই করে।আর নিজের কাজ করে অন্যের কাছে পারিশ্রমিক চাওয়া যেমন অবৈধ তেমনিভাবে এগুলো করেও পারিশ্রমিক নেয়া অবৈধ।
সুন্নাহ থেকে দলীল,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,তোমরা কোরআন পড়ো.....তবে এর বিনিময় গ্রহণ করোনা।মুসনাদে আহমাদ,১৬৬৬৮
অর্থাৎ দ্বীনি কাজে যেহেতু নেকি আল্লাহ পাক দেন তাই এর বিনিময় গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে; যা আবশ্যকতা বুঝায়।তাই পারিশ্রমিক গ্রহণ বৈধ নয়।
যুক্তির আলোকে দলীল,
ইমামাত ও আজান দেয়ার জন্য মুসলমান হওয়া শর্ত। কারণ তা ইবাদত।আর ইবাদতের জন্য নেকি পারিশ্রমিক হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।এখন যদি সাধারণ পারিশ্রমিক নেয়া হয় তাহলে তা সাধারণ কাজের পারিশ্রমিক নেয়ার মত হবে যেখানে মুসলমান হওয়া শর্ত নয়।তাই পারিশ্রমিক নেয়া বৈধ হবেনা।
ওয়াজের বিষয়ও এমনটাই,যা উপরে বর্ণনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্যঃ কুরআন, সুন্নাহ ও যুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি হারাম সাব্যস্ত হলেও অন্য দলীলের মাধ্যমে বৈধতার হুকুম দেয়া হয়েছে।