আরবীতে ওহী (وحی) শব্দটি বাবে ضرب এর মাসদার। এটির আভিধানিক অর্থ হলোঃ গোপনে জানিয়ে দেয়া, ইঙ্গিত করা, প্রেরণ করা - ইত্যাদি।
পরিভাষায়, নবী-রাসূলদের ওপর আল্লাহ তা'য়ালার অবতারিত বাণীকে ওহী বলে। কিংবা, গোপনে আল্লাহ প্রদত্ত নবী-রাসূলদেরকে কোনকিছু জানানোর নামই ওহী।
ওহী দু'প্রকার।
ওহী শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, এমন সূক্ষ্ম ও গোপন ইশারা, যা ইশারাকারী ও ইশারা গ্রহণকারী ছাড়া তৃতীয় কেউ টের পায় না। এ সম্পর্কের ভিত্তিতে এ শব্দটি ইলকা বা মনের মধ্যে কোনো কথা নিক্ষেপ করা ও ইলহাম বা গোপনে শিক্ষা ও উপদেশ দান করার অর্থে ব্যবহৃত হয়। ব্যবহারিক ভাবে ওহী দ্বারা ইসলামে আল্লাহ কর্তৃক রাসূলদের প্রতি প্রেরিত বার্তা বোঝানো হয়। ওহী প্রধাণত দুই প্রকারঃ ১। ওহীয়ে মাতলুঃ প্রত্যক্ষ জ্ঞানের মাধ্যমে প্রাপ্ত, ইহা কিতাবুল্লাহ বা পবিত্র কোরান শরীফ, যার ভাব ও ভাষা উভয়ই মহান আল্লাহ তালার। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা হুবহু আল্লাহ তালার ভাষায় প্রকাশ করেছেন। ২। ওহীয়ে গায়ের মাতলুঃ পরোক্ষ ওহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান। এরই নাম সুন্নাহ বা হাদিস। এর ভাব মহান আল্লাহর, কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের ভাষায়, নিজের ভাব-ভঙ্গি, কাজ, কথা, আচার-ব্যাবহার ও আদেশ-নিষেধ এবং সম্মতির মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর কোন মানুষেরই এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ছাড়া, অথবা পর্দার আড়াল ছাড়া, অথবা এমন দূত প্রেরণ ছাড়া, যে দূত তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ওহী করেন, তিনি সর্বোচ্চ, হিকমতওয়ালা। (আশ-শুরাঃ ৫১) এই আয়াতে অহীর তিনটি প্রকারের কথা বর্ণিত হয়েছে। ১। অন্তরে কোনো কথা প্রক্ষিপ্ত করা অথবা স্বপ্নে বলে দেয়া এই প্রত্যয়ের সাথে যে, তা আল্লাহরই পক্ষ হতে। ২। পর্দার আড়াল থেকে সরাসরি কথা বলা। যেমন, মূসা (আঃ)-এর সাথে তুর পাহাড়ে বলা হয়েছিল। ৩। মালাকের মাধ্যমে অহী প্রেরণ করা। যেমন, জিবরীল (আঃ) অহী নিয়ে আগমন করতেন এবং নবীদেরকে শুনাতেন।