বাবা যদি সন্তানদের সাথে বিনা দোষে মারধর, বকা-ঝকা, গালি-গালাজ, অশ্লীল ভাষা, সন্তানদের সাথে জুলুম, নির্যাতন, অধিকার নষ্ট করে তাহলে এ ব্যাপারে ইসলাম বা কুরআন-হাদিস কি বলে??????
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

কোনো মুসলিম যদি অন্য মুসলিমকে গালি দেয়, তাহলে সে ফাসেকদের অন্তর্ভুক্ত। হোক সে নিজের ছেলে কিংবা অন্য কেও। এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীসে বর্ণিত আছে, "যুবায়দ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আবূ ওয়াইল (রহঃ)-কে মুরজিআ’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বললেন, ‘আবদুল্লাহ (ইব্‌ন মাস‘ঊদ) আমার নিকট বলেছেন, নবী (সাঃ) বলেছে, 'মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তাঁর সাথে লড়াই করা কুফরী।" (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৮), (৬০৪৪,৭০৭৬; মুসলিম ১/২৮, হাঃ ৬৪, আহমাদ ৩৬৪৭ ) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬)। এছাড়াও, নিজের সন্তানের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ইসলামে নিষেধ। কেননা এ সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত আছে, "তোমরা তোমাদের সন্তানদের উপর এবং নিজের ধন-সম্পদের উপরও জুলুম ও বদদু’আ করো না। (ই.ফা. ৭২৪০, ই.সে. ৭২৯৪), (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭৪০৫)। তাই, উক্ত হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী বলা যায়, সন্তানের প্রতি জুলুম-নির্যাতন, অশ্লীলতা ইত্যাদি করা ইসলামে নিষেধ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

বাবা যদি সন্তানদের সাথে বীনা দোষে মারধর, বকা- ঝকা, গালি-গালাজ, অশ্লীল ভাষা, সন্তানদের সাথে জুলুম, নির্যাতন, অধিকার নষ্ট করে তাহলে এ ব্যাপারে ইসলাম বা কুরআন-হাদিস বলে যে তবুও তাদের কর্মকান্ড মুখ বুজে সহ্য করতে হবে। পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে হবে তারা একজন বা উভয়ই আপনার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তারা যেন 'উহ!' শব্দ না বলে এমন আচরন করা যাবে না এবং তাদেরকে ধমক দেওয়া যাবে না তাদের সাথে সম্মানসূচক বা বুঝিয়ে কথা বলতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আপনার প্রতিপালক হুকুম জারি করেছেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করো না, আর পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাদের একজন বা তাদের উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে বিরক্তি বা অবজ্ঞাসূচক কথা বলো না, আর তাদেরকে ভৎর্সনা করো না। তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। (বনী ইসরাইলঃ ২৩) এখানে আল্লাহ তাআলা একমাত্র তার ইবাদত করার নির্দেশ দেয়ার সাথে সাথে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনের প্রত্যেক স্থানে আল্লাহ তাআলা তার নিজের হকের তথা একমাত্র তার ইবাদতের নির্দেশের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি সৎ ব্যবহার পাওয়ার হকদার তথা পিতা-মাতা তাদের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর ও কোন কিছুকে তার সাথে শরীক কর না, এবং পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার কর (সূরা নিসাঃ ৩৬) এরূপ কুরআনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে যেখানে পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি যদি পিতা-মাতা মুশরিকও হয় তাহলেও তাদের সাথে সৎ ব্যবহার করতে হবে, তবে আল্লাহর আনুগত্য বহির্ভূত কোন কাজ বা তার সাথে শিরক করার নির্দেশ দিলে তাদের কথা মানা যাবে না, কিন্তু বিআদবীও করা যাবে না, সুন্দরপন্থায় বর্জন করতে হবে। হাদীসেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর ইবাদতের পর পিতা-মাতার হকের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন কবীরাহ গুনাহ হল আল্লাহর সাথে শিরক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া। (সহীহ বুখারীঃ ৬৮৭০) এক ব্যক্তি বললো হে আল্লাহর রাসূল! আমার কিছু আত্মীয় আছে, আমি তাদের সাথে আত্মীয়তা বজায় রাখি, আর তারা ছিন্ন করে। আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করি, আর তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। তারা কষ্ট দিলে আমি সহ্য করি, আর তারা আমার সাথে মূর্খের আচরণ করে। তিনি বললেন, যদি তা-ই হয়, তাহলে তুমি যেন তাদের মুখে গরম ছাই নিক্ষেপ করছ অর্থাৎ এ কাজে তারা গোনাহগার হয়। এবং তোমার সাথে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্যকারী থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এর উপর অনড় থাকবে। (রিয়াযুস স্বা-লিহীন, হাদিস নম্বরঃ ৩২৩) জনাব! কষ্ট সহ্য করার মাহাত্ম্য সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ অর্থাৎ 'সেই ধর্মভীরুদের জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যারা' ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন।” (সূরা আলে ইমরানঃ ১৩৪) তিনি অন্য জায়গায় বলেন, অর্থাৎ অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে, নিশ্চয় তা দৃঢ়-সংকল্পের কাজ। (সূরা শূরাঃ ৪৩)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ