আমি মনে করি বউ হিসাবে এমন মেয়ে দরকার যে ভাল চরিত্র বান।
বউ হিসেবে কেমন মেয়ে ভাল হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমি নিজে কেমন তার উপর... আমি যদি আলট্রা মর্ডান মেয়ে পছন্দ করি তবে সাধারন মেয়ে আমার জন্য ভাল হবে না. তবে দেখা যায় যে মেয়ের মা ভাল গুনের অধিকারী হয় সে মেয়ে ভাল বউ হয়। যে মেয়ে আমাকে পুরাপুরি বুঝতে পারবে এবং আমার ভালবাসার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে সেই মেয়ে বউ হিসেবে ভাল হবে...। আমি যদি তাকে রানীর মত সন্মান করি তবে সে আমায় রাজার মত সন্মান করবে... এটাই স্বাভাবিক না!
আমার মতে বউ হবে এমন যে খোদার উপর বিশ্বাস রাখে, নিয়মিত সালাত আদায় করবে। বাহিরে সৌন্দর্যের যে মনের সৌন্দর্য অনেক ভালো। একটা মেয়ের মন ভালো হলে আর ধার্মিক হলে ইনশাল্লাহ সব দিক থেকে সে ভালো থাকে। আর কিছুটা শিক্ষিত তো হতেই হবে। কারণ আমরা প্রায় সবাই এই বাক্যটা জানি "একজন শিক্ষিত মা একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে পারে।"
আমি একটি ইসলামিক বক্তৃতায় শুনেছি বউ হিসেবে কেমন মেয়ে ভালো হবে বা কেমন মেয়ে নির্বাচন করা উচিত সে বিষয়ে বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) 4 টি দিক দেখে একজন মেয়েকে বিয়ে করার জন্য নির্বাচন করতে বলেছেন । চারটি দিক হচ্ছে, 1) মেয়ের সম্পদ দেখতে হবে । এখানে মেয়ের সম্পদ বলতে মেয়ের পারিবারিক স্বচ্ছলতার কথা বলা হয়েছে । 2) মেয়ের বংশ দেখতে হবে । অর্থাৎ মেয়ের বংশ ভালো কিনা , মেয়ে যথাযথ শিক্ষায় শিক্ষিত কিনা, মেয়ের বাবা -মা কেমন প্রকৃতির মানুষ ইত্যাদি । 3) মেয়ে দ্বীনদার কিনা তা দেখতে হবে । অর্থাৎ মেয়েটি যথাযথ ভাবে মহান আল্লাহ রব্বুল আলআমিনের ইবাদত করে কিনা, পর্দানশীল কিনা ইত্যাদি ।( 4 টি দিকের মধ্যে এই দিকটাকেই প্রধান এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে বলেছেন ।) 4টি দিকের কোনটি না থাকলেও এই বৈশিষ্ট্যটি থাকা আবশ্যক । 4) মেয়ের সৌন্দর্য দেখতে হবে । বর্তমানে আমরা আসল বৈশিষ্ট্য না খুঁজে 4 নাম্বার বৈশিষ্ট্যকেই বেশী প্রাধান্য দেই । এটা মোটেও উচিত না । একজন আদর্শ পাত্রী নির্বাচনে আমাদের প্রিয় রাসূল(সা:) যে চারটি জিনিস বা বৈশিষ্ট্য দেখে বিয়ে করতে বলেছেন এর বাহিরে আরো কিছু কি খোঁজার প্রয়োজন আছে?? আমি মনে করি মোটেই নেই । এটাই সর্বোত্তম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নির্দেশনা ।
বউ হিসেবে যেমন মেয়ে সবচেয়ে ভালোঃ ১। অল্পতে সন্তুষ্ট থাকে। ২। স্বামীর সুখেরও সাথী, আবার দুঃখেরও সাথী। ৩। নামাজী। ৪। কুরআন তিলাওয়াত ক্বারী। ৫। পরহেজগার। ৬। আল্লাহভীরু ও আল্লাহওয়ালা। ৭। রাগ-অভিমান করে না। ৮। স্বামীকে কষ্ট দেয় না। ৯। বদমেজাজি বা ঝগড়াটে নয়। ১০। সুন্দর মন ও সুন্দর চরিত্রের অধিকারী। ১১। সুশিক্ষিত। ১২। বুদ্ধিমতী। ১৩। নিঃস্বার্থভাবে সংসারের জন্য কাজ করে। ১৪। জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। ১৫। লাজুক। ১৬। ধৈর্যশীল, যে গুণ দিয়ে বিপদের সময়ও স্থির থাকা যায়। ১৭। সহ্যশক্তি, যে গুণ দিয়ে সকল দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে নেয়া যায়। ১৮। রোজা রাখে। ১৯। স্বামীর ভালোর জন্য দোয়া করে। ২০। স্বামীর আসার জন্য অপেক্ষায় থাকে। ২১। স্বামীকে জ্ঞান আহরণ ও জ্ঞান বিতরণে সাহায্য করে। ২২। স্বামীকে বিপদে বা কষ্টে সান্ত্বনা দেয়। ২৩। স্বামীর দুঃসময়ে কখনো স্বামীকে ছেড়ে চলে যায় না। ২৪। স্বামীকে নামাজের তাগিদ দেয়। নামাজ কায়েম করে। ২৫। মাদ্রাসা পড়ুয়া বা স্কুল পড়ুয়া পর্দানশীল মেয়ে। ২৬। স্বামী-স্ত্রীর গোপন বিষয় অন্য কারো কাছে প্রবেশ করে না। ২৭। স্বামীর গায়ে হাত তুলে না। ২৮। ফিঙ্গারিং, সমকামিতা, পরকীয়া, যিনা, ব্যভিচার থেকে দূরে থাকে। ২৯। ইসলামী হামদ-নাত, ওয়াজ-মাহফিল শুনতে পছন্দ করে। ৩০। অক্ষম ভিক্ষুককে কখনো খালি হাতে ফিরিয়ে দেয় না। ৩১। লোভ, হিংসা, অহংকার, অলসতা থেকে দূরে থাকে। ৩২। নিজে সতী স্ত্রী হয়ে স্বামীকে সৎ স্বামী রাখতে চেষ্টা করে। ৩৩। অল্প কথা বলে, কিন্তু মিষ্টি ও ইসলামিক কথা বলে। ৩৪। স্বামীর সাথে খোশগল্প বা দুষ্টুমি করে। ৩৫। কখনো মিথ্যা কথা বলে না। ৩৬। পরনিন্দা বা গীবত করে না। ৩৭। সদা হাসি-খুশি ও লাবণ্যময়ী থাকে। ৩৮। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বামীর কাছে সদা সুন্দর সাজে থাকে। ৩৯। কষ্ট পেলে নীরবে কান্না করে। ৪০। স্বামীর মঙ্গল কামনা করে এবং পরস্পরের ভালোর জন্য যা যা করা দরকার, সব করে। তবেই তো বউ হিসেবে সেই মেয়ে সবচেয়ে ভালো ও সতী স্ত্রী। ধন্যবাদ।