শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

মীলাদ শব্দটি আরবী। যার অর্থ হল জন্ম। সুতরাং মীলাদুন্নবী মানে হল নবীর জন্ম। একজন সাধারণ মুসলমানও বুঝবেন জন্মদিন উদযাপনের কোন বিষয় নয়। এটি কেবলি আলোচনার বিষয় হতে পারে। এটি পালনীয় বিষয় হলে রাসূল (সাঃ) নিজেই তা পালন করে দেখাতেন। সাহাবাগণ যারা সবচেয়ে বেশি আশেকে রাসূল ছিলেন। নবীজী (সাঃ) এর প্রতি মুহাব্বাতের চূড়ান্ত পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে যারা অকাতরে জীবন বিলিয়েছেন। সন্তান এতিম করেছেন। স্ত্রী বিধবা করেছেন। পরিবার, সমাজ, অর্থ, বিত্তবৈভব সবই বিসর্জন করেছেন নবীজী (সাঃ) এর মোহাব্বতে। কিন্তু সেসব সাহাবাগণ কেন নবীজী (সাঃ) এর জন্মদিন পালন করেননি? কেন, আবু বকর (রাঃ), ওমর (রাঃ) উসমান (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) এরমত খুলাফায়ে রাশেদীনের জামানায় এ ঈদ উদযাপিত হয়নি? এসব কি প্রমাণ করে? এটি উদযাপনের বিষয়? যদি এটি সওয়াবের বিষয় হতো, তাহলে সাহাবায়ে কেরামগণ কেন এটি পালন করেননি? কেন তাবেয়ীগণ পালন করেননি? কেন তাবে তাবেয়ীগণ পালন করেননি? কেন এ ঈদের কথা কুরআন, হাদীস এবং ফিক্বহের কিতাবে লিখা হয়নি? যা পরিস্কার প্রমাণ করে এটি একটি পরিস্কার বিদআত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

আসছে ১২ রবিউল আউয়াল। এ দিনকে নবীজির জন্মদিবস নির্ধারণ করে উপমহাদেশের বহু সংখ্যক মানুষ ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করে থাকেন। এ কাজ ধর্মের নামে চালালেও ধর্মে এমন কোন কাজ স্বীকৃত নয়। কেননা তা ধর্মের মাঝে নব আবিষ্কৃত বিষয়। ইসলামী পরিভাষায় একে বিদআত বলা হয় – যা অবশ্য পরিত্যায্য। এ ঈদ পালনকারীদের অনেক ভ্রান্ত দাবীর মাঝে একটি দাবী হল যে, এটা নবীজীর (স.) প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন। আসলে কি তাই? নবীজীকে শ্রদ্ধা করার উপায় হচ্ছে তাঁর আনুগত্য করা, তিনি যেমনটি আদেশ করেছেন, তেমনটি করা আর তিনি যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করা; বিদাত, কল্পকাহিনী এবং পাপাচারের মাধ্যমে তাঁকে সম্মান করতে বলা হয়নি। মিলাদুন্নবী উদযাপন এরকমই এক দূষণীয় কাজ, কারণ এটা একধরনের পাপাচার। নবীজীকে(স.) যারা সবচেয়ে বেশী শ্রদ্ধা করেছিলেন, তারা ছিলেন সাহাবীগণ। যেমনটি উরওয়াহ ইবনে মাসউদ কুরাঈশদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন: “হে লোকসকল! আল্লাহর কসম আমি রাজরাজড়াদের দেখেছি। আমি সিজার, কায়সার এবং নেগাসের দরবারে গিয়েছি, কিন্তু আল্লাহর শপথ, আমি এমন কোন রাজা দেখিনি যার সাথীরা তাকে এতটা সম্মান করে, যতটা গভীরভাবে মুহাম্মাদকে(সঃ) তাঁর সাথীরা শ্রদ্ধা করে। আল্লাহর শপথ তাঁর কোন থুথুও মাটিতে পড়ত না, বরং তাঁর সাথীরা হাত দিয়ে ধরে নিতেন এবং তা তাদের চেহারা ও ত্বকে বুলিয়ে নিতেন। যদি তিনি তাদেরকে কোন আদেশ দেন, তবে তারা সেটা পালন করার জন্য দ্রুতগামী হয়। তাঁর ওযুর সময় তারা ওযুর পানি গ্রহণ করার জন্য প্রায় লড়াই করতে উদ্যত হয়। তিনি কথা বললে তাঁর উপস্থিতিতে তারা তাদের কন্ঠস্বরকে নীচু করে ফেলে। এবং তারা গভীর শ্রদ্ধাবোধের কারণে তাঁর দিকে সরাসরি তাকিয়েও থাকে না।” (বুখারী) তাঁর প্রতি এত শ্রদ্ধা থাকা সত্ত্বেও সাহাবারা কখনও মিলাদুন্নবীর দিনকে ঈদ হিসেবে পালন করেননি। যদি ইসলামে একে পালন করার উৎসাহ দেয়া হত, তবে তারা কিছুতেই একে অবহেলা করতেন না। বড় কথা হল, ১২ রবিউল আউয়াল যে নবীজির জন্মদিবস – এ কথা প্রমাণসিদ্ধ নয়। বরং এ বিষয়ে পূর্বসূরি ওলামায়ে কেরাম যথেষ্ট মতবিরোধ করেছেন। এখন কথা হল, এ দিবস যদি আসলেই পালনীয় কিছু হতো, তাহলে সাহাবায়ে কেরাম থেকে এর কোন না কোন বর্ণনা অবশ্যই পাওয়া যেতো। নিশ্চয়ই সাহাবায়ে কেরাম পরবর্তী যুগের মুসলমানদের চেয়ে নবীজিকে বেশি ভালবাসতেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ﻭَﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺕِ ﺍﻷُﻣُﻮﺭِ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﺿَﻼَﻟَﺔٌ ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺩْﺭَﻙَ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻪِ ﺑِﺴُﻨَّﺘِﻰ ﻭَﺳُﻨَّﺔِ ﺍﻟْﺨُﻠَﻔَﺎﺀِ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﺪِﻳﻦَ ﺍﻟْﻤَﻬْﺪِﻳِّﻴﻦَ ﻋَﻀُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﺟِﺬِ » “তোমরা আমার সুন্নাত এবং আমার পরবর্তী খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত পালন করবে। আর তা দৃঢ়তার সাথে ধারণ করবে। সাবধান! তোমরা দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাকবে। কারণ প্রত্যেক নব প্রবর্তিত বিষয়ই বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা”। (তিরমিযী, অনুচ্ছেদ: সুন্নত গ্রহণ, ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ) রাব্বুল আলামিন আমাদের বোঝার ও এমন বিদআতকে পরিত্যাগ করার তাওফিক দান করুন। আমীন। তথ্যসুত্রঃ পরিবর্তন ডট কম

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ