এই বিষয়টা লেখার মাধমে বোঝাতে পারবো কিনা জানিনা। আপনি জানেনকি যে মহাবিশ্বের তলা নাই, আমাদের পৃথিবী বা চাঁদ বা অন্য কোন গ্রহেরও তলা বলে কিছু নাই। মহাবিশ্ব হচ্ছে মহাশুন্য, তবে মহাশুন্য একটি ধারনা। এই ধারনা করা হয় এই কারনে যে মহাবিশ্বের অধিকাংশ ফাকা। আকাশ যেমন ফাকা। কিন্তু বাস্তবে টোটাল ফাকা না, ধরুন আকাশ ফাকা কিন্তু একটি বিমান যাচ্ছে বা পাখি উড়ে যাচ্ছে তাহলে ঐ মুহুর্তে ফাকা না। তবে আকাশের তুলনা পাখির দখল করা যায়গাটা এতই ক্ষুদ্র যে তা ধরা হয়না। তেমনি এই মহাশুন্যে রয়েছে হাজার গ্রহ নক্ষত্র। আমাদের পৃথিবীয় তেমনি একটি গোল গ্রহ।, আর চাঁদ উপগ্রহ। এখন ধরুন একটি ফুট বলের উপর একটি পিপড়া রাখা হল। তো পিপড়ার পা থাকবে বলের কেন্দের দিকে।আর পিঠ থাকবে বাইরের দিকে। এখন বলটা আপনি উচুতে ছুড়ে দিলেন, এই অবস্থায় পিপড়ার জন্য ফুটবলটা হচ্ছে তার পৃথিবী। তার পা মাটির গায়ে মানে ফুট বলে লাগানো আর চারপাশে বা পিঠের দিকে যে শুন্য জায়গা তা পিপড়ার কাছে মহাশুন্য। মনে করি বলটি নিচে না পড়ে উপরে স্থির আছে, এমন অবস্থায় একটি ক্রিকেট বল ফুটবল থেকে ২০ গজ দূরে ফুটবলের মত শুন্যে কিন্তু ফুটবলের উপরের রাখি। তাহলে ফুটবল ও ক্রিকেট বলের সোজা পিপড়া টা আসলে পিপড়ার কাছে মনে হবে ক্রিকেট বল তার মাথার উপর। এখন ক্রিকেট বলটা উপরের দিক থেকে নিচের দিকে নিলেন। পিপড়া ঘুরতে ঘুরতে ফুটবলের নিচের দিক মানে আবার ফুটবল ও ক্রিকেট বলের সরল রেখায় আসলো। এখন পিপড়া ফুটবলের নিচে কিন্তু পিপড়া তা বুঝতে পারবেনা কারন তার পা ফুটবলের কেন্দ্রের দিকে দাঁড়িয়ে আছে, পিপড়ার জন্য ওটায় সে দাঁড়িয়ে আছে, আর পিঠের দিকে মানে নিচে ক্রিকেট বল দেখলে পিপড়া ভাববে ক্রিকেট বল তার মাথার উপরেই আছে। কাজেই গোলাকার বস্তু ও ঘুর্ননের জন্য এমন হয়। এখন মনে করি পিপড়া বিমানে চড়ে ক্রিকেট বলে আসলো তখন অভিকর্ষজ বলের জন্য ক্রিকেট বলই হবে পিপড়ার পৃথিবী। তাহলে পিপড়ার পা ক্রিকেট বলের কেন্দ্রের দিকে থাকবে, ফলে সে ভাববে যে, সে উপর থেকে নিচে এসেছে, তখন ফুটবল যে অবস্থানেই থাকুক না কেন একই রেখায় আসলে পিপড়ার পিঠের দিকে থাকবে। তাই পিপড়ার কাছে ফুটবল হবে মাথার উপরে। আমার পৃথিবী ও চাঁদ দুটোই এমন মহাশুন্যে আছে। আর আমরা ফুটবলের উপর পিপড়ার মত গোল পৃথিবীর উপর আছি। তাই যেখানেই যায় সবকিছু উপরে মনে হয়। আর উপরের গ্রহে গেলে পৃথিবী উপরে আপনার মাথার দিক মানে উপরে মনে হবে।
কোনটা তল বা নিচ আর কোনটা উপর সেটা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়।যেমন,সূর্য যেদিকে উঠে বা প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে যেদিকে সূর্যকে প্রথম দেখা যায় সেদিক কে পূর্ব দিক বলি।সেটি যে পূর্ব দিক সেই বিষয়টা কিন্তু আমাদের ভাষ্য,আমরাই আমাদের সুবিধার্তে তার নাম পূর্ব দিক হিসেবে রেখেছি।যাহোক আমরা স্বাভাবিকভাবে যেটাকে তল আর উপর বলি সেটা নিয়েই আলোচনা করব।কিন্তু তার মাঝে এটা আনার কারণ সেই বিষয়টা বুঝতে এটা জানা থাকার প্রয়োজন রয়েছে।কেননা কোন বস্তুর অবস্থান অন্য বস্তুর সাপেক্ষে হিসেব করা হয়।ধরুন,এখন আমি খাটে শুয়ে আছি।খাটটি মেঝের উপর রয়েছে,তাহলে খাটটি মেঝের সাপেক্ষে উপর।কিন্তু খাটটির উপর আমি রয়েছি।আমার সাপেক্ষে খাটটি তল এবং খাটের সাপেক্ষে আমি উপর।এখন কিন্তু আমি মেঝের সাপেক্ষেও আমি উপর।আর এই পুরো বিষয়টা পৃথিবীর পৃষ্টকে তল হিসেবে ধরে হিসাব করা হয়েছে।কারণ আমরা পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তির উপর ভর করে পৃথিবীর পৃষ্টে আটকে থাকি।বাস্তবে যে মহাবিশ্ব রয়েছে তার এক অতি ক্ষুদ্র কোণে আমাদের পৃথিবী রয়েছে।পৃথিবী সূর্যের একটি গ্রহ,সূর্য আবার মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র একটি নক্ষত্র।আবার মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মত অসংখ্য গ্যালাক্সি নিয়ে এই মহাবিশ্ব গঠিত।তো এতবড় মহাবিশ্ব যেখানে কোনটা আসলেই শুরু আর কোনটা শেষ তা বের করা সম্ভব নয়।তাই আমরা কাছের জিনিসটাকেই কেন্দ্র ধরে হিসাব করি।যেমন পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় সবসময় ভূপৃষ্টকে তল হিসাবে কেন্দ্র করে সব কিছুর অবস্থান বের করি।একইভাবে,আমরা যখন বিমানে যাত্রা করে ভুপৃষ্ট থেকে উপরে অবস্থান করি তখন পৃথিবীকে তলেই দেখি।কারণ তখনও বিমানটি পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণে থাকে এবং ভূপৃষ্টের সাপেক্ষে উপরে অবস্থান করে।আর যখন আমরা চাঁদে থাকি বা সেখানে গিয়ে পৃষ্টে অবস্থান করি,তখন আমরা চাঁদের আকর্ষণে চাঁদের পৃষ্টে থাকি।তখন চাঁদের ভূপৃষ্ট বা পাথুরে অঞ্চল যেটাই বলি তাকেই আমাদের তল হিসেবে ধরা হয়,আর তখন পৃথিবী থাকে উপর দিকে।এবং পৃথিবীর সাপেক্ষে সেখানের মানুষের অবস্থান মনে হবে ১৮০ ডিগ্রি উল্টো।এভাবেই চাঁদ থেকে পৃথিবীকে উপরে দেখা যায় এবং চাঁদকেও পৃথিবী থেকে উপরে দেখা যায়।