আপনারা উভয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে আপনাদের জন্য বিবাহ করা জায়েজ আছে। এ বিয়ে শরয়ী মূলনীতি অনুপাতে শুদ্ধও হয়ে যাবে। বাকি পিতা-মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করা ভাল নয়। তারা জানতে পারলে কষ্ট পাবেন। আর পিতা-মাতাকে কষ্ট দেয়া জায়েজ নয়। তবে পিতা-মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করার দ্বারাও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। আর বিয়েটা রেজিষ্ট্রি করিয়ে নিবেন। যাতে করে পরবর্তীতে কেউ অস্বিকার করলে প্রমাণ বাকি থাকে। ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺑُﺮَﻳْﺪَﺓَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺟَﺎﺀَﺕْ ﻓَﺘَﺎﺓٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ” : ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﺯَﻭَّﺟَﻨِﻲ ﺍﺑْﻦَ ﺃَﺧِﻴﻪِ، ﻟِﻴَﺮْﻓَﻊَ ﺑِﻲ ﺧَﺴِﻴﺴَﺘَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻗَﺪْ ﺃَﺟَﺰْﺕُ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻊَ ﺃَﺑِﻲ، ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺃَﺭَﺩْﺕُ ﺃَﻥْ ﺗَﻌْﻠَﻢَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﺃَﻥْ ﻟَﻴْﺲَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺂﺑَﺎﺀِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ ﺷَﻲْﺀٌ “ হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের [চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫}
অভিভাবককে না জানিয়ে তাদের অজান্তে বিয়ে করা ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কোন স্ত্রীলোক তার অভিভাকের অনুমতি ব্যতীত কাউকে বিবাহ করে তবে তার বিবাহ বাতিল হবে। আর তিনি এই উক্তিটি তিনবার উচ্চারণ করেন। আর সে যদি তার সাথে সহবাস করে তবে ঐ সহবাসের কারণে তাকে পূর্ণ মাহর প্রদান করতে হবে। আর উভয় পক্ষের অভিভাবকরা যদি এ সম্পর্কে মতবিরোধ করে তখন দেশের সরকার তার অভিভাবক হবে। কেননা, যার কোন অভিভাবক নাই, দেশের সরকারই তার অভিভাবক। (সূনান আবু দাউদ, হাদিস নম্বরঃ ২০৭৯) [সাইয়্যেবা স্ত্রীলোক নিজের বিবাহের ব্যাপারে ওলীর চাইতে নিজেই বেশী হকদার। আর বালিগা কুমারী মেয়ের বিবাহের সময় তার পিতা যেন তার অনুমতি গ্রহণ করে।]
প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেÑমেয়ে যদি মা বাবার অনুমতি ব্যতীত নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে নিজেরাই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাহলে তা সহীহ হয়ে যায়। তবে শরীয়ত সম্মত গৃহিত কারণ ছাড়া মা-বাবাকে অসস্তুষ্ট করে বিবাহ বন্ধনে হওয়া জায়েজ নয়, যদিও বিবাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে। উল্লেখ্য,কুফু তথা বৈবাহিক সমতার ক্ষেত্রে ছেলে যদি মেয়ের সমপর্যায়ের না হয়, তাহলে মেয়ের অবিভাবকের অনুমতি ব্যতিরেকে বিবাহ সংঘটিত হবে না।