ধূমপান ছাড়ার ১৪ কৌশল জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডি। ঠাণ্ডা স্থানে যাবেন না আপনি হয়তো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ধূমপান ত্যাগ করবেন। কিন্তু ঠাণ্ডা স্থানে গেলে সেটি হয়তো আবার মাথা চাড়া দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ মানুষ ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেও ছাড়তে পারেন না কেবল নিকোটিনের প্রভাবে। কেননা সিগারেটের ভেতর যে নিকোটিন থাকে সেটি নেশা তৈরি করে। মস্তিস্ক একপর্যায়ে নিকোটিন নিতে নিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বার বারই গ্রহণ করতে চায়। ঠাণ্ডা স্থানে গেলে নিকোটিন গ্রহণের চাহিদা বেড়ে যায়। এই দুর্বল মুহূর্তে ছেড়ে দেওয়া বদ অভ্যাসটি আবার ধরে ফেলতে পারেন আপনি। লজেন্স খান, চুইঙ্গাম চাবান যখন আপনি সিগারেট ছাড়তে চাইবেন তখন আপনার হতাশ ও বিষণ্ণ লাগতে পারে। তাই সিগারেটের বিকল্প কিছু ভাবুন। গবেষণায় বলা হয়, সিগারেটের বিকল্প হিসেবে নিকোটিন গাম, লজেন্স খেলে বা চুইঙ্গাম চাবালে বদ অভ্যাস এড়ানো কিছুটা সহায়ক হতে পারে। সিগারেট ছাড়ার জন্য এখন বাজারে কিছু চুইঙ্গাম পাওয়া যায় যেগুলো বেশ কার্যকর। সেগুলো খেয়ে দেখতে পারেন। পরিপূরক ওষুধ গ্রহণ যদি আপনি মানসিক চাপ দূর করতে সিগারেটকে অবলম্বন ভেবে থাকেন তবে ভিন্ন চিন্তা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিগারেটের বদলে মানসিক রোগের ওষুধ সেবন করতে পারেন। আশপাশের মানুষের সহায়তা নিন আপনি ধূমপান বন্ধ করতে চাইছেন বিষয়টি বন্ধুবান্ধব,পরিবারের সদস্য এবং অফিসের সহকর্মীদের জানান। তাদের বলুন আপনাকে উৎসাহিত করতে। হয়তো কোনো পার্টিতে গিয়ে একটি সিগরেট ধরিয়েই ফেললেন তখন আশপাশের লোকজন নিষেধ করলে বিষয়টি কাজে লাগতে পারে। গবেষণায় বলা হয়, আমাদের বিভিন্ন বাজে অভ্যাস বর্জনে মিলিত আচরণগত চিকিৎসা বেশ কাজে আসে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন অনেকে মানসিক চাপের ফলে ধূমপান করেন। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ দূর করতে নিয়মিত ম্যাসাজ করান, মনকে হালকা করতে গান শুনুন। যোগ ব্যয়ামও করতে পারেন। এগুলো আপনাকে চাপমুক্ত করে ধূমপান নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। এলকোহল বাদ দিন ধূমপানের মতোই এলকোহলও আরেক ধরনের ক্ষতিকর বস্তু। তাই এলকোহল পান করাও বাদ দিতে হবে। এলকোহলের নেশা চাপলে দাঁত ব্রাশ করুন বা চুইঙ্গাম চাবান। বাড়ি পরিষ্কার করুন ঘর পরিষ্কার করুন। শুনতে বেশ মজার মনে হচ্ছে? চেষ্টা করে দেখুন, নিজের হাতে ঘর পরিষ্কার করুন দেখবেন সিগারেট পানের নেশা অতটা চাপছে না। কাপড় ধোয়া,কার্পেট পরিষ্কার ইত্যাদি ঘরের কাজ করুন। এরপর ঘরে সুন্দর গন্ধের এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করুন। এই গন্ধ আপনাকে সিগারেটের ধোঁয়ার কথা ভুলে যেতে সাহায্য করবে। চেষ্টা করুন বারবার ধূমপান ত্যাগের জন্য বারবার চেষ্টা করার কোনো বিকল্প নেই। নিজেকে সময় বেঁধে দিন কত সময়ের মধ্যে আপনি ধূমপান ত্যাগ করতে চান। একটু একটু করে সেই পথে আগান। শারীরিক পরিশ্রম করুন শারীরিক কাজ আপনাকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করবে। যখন ধূমপান করতে ইচ্ছা করবে হাঁটা শুরু করুন বা জগিং করতে পারেন। শারীরিক পরিশ্রমের ফলে আপনার ধূমপান করার ইচ্ছা চলে যেতে পারে। এর ফলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরিও দূর হবে। ফল এবং শাকসবজি খান ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, প্রচুর পরিমাণ ফল এবং শাকসবজি খেলে সিগারেটের স্বাদ খারাপ লাগতে শুরু করে। তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ফল ও সবজি রাখুন। অর্থ সঞ্চয় হচ্ছে, এ কথা ভাবুন সিগারেট খেলে প্রতিদিন বেশ কিছু টাকা পকেট থেকে বেড়িয়ে যায়। ভাবুন, সিগারেট ছাড়লে আপনার কিছু টাকাও সঞ্চয় হবে। এটিও আপনাকে সিগারেট ছাড়তে সাহায্য করতে পারবে। শরীর ভালো থাকবে টাকা সঞ্চয়ের থেকেও বড় বিষয় হলো সিগারেট ছাড়লে অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন আপনি। সিগারেট না খেলে আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে, রক্তের কার্বন মনোক্সাইড স্বাভাবিক থাকবে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে এবং ফুসফুস ভালো থাকবে। কাজেই সিগারেট ছাড়ুন।