এই প্রশ্নটি জানার দরকার
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বাংলাদেশের জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।আর এই বাড়তি জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন বাড়তি বাসস্থান।যার ফলে মানুষ বনজঙ্গল উজার করে ঘর-বাড়ি তথা বাসস্থান নির্মান করছে যার ফলে বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ সহ অন্যান্য পশু দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে।এছাড়াও বড়ধরনের ঘুর্নিঝড়,জলোচ্ছাস ও সাইক্লোনে অনেক বাঘ মারা যাচ্ছে যা দেশের জাতীয় পশুর বিলুপ্তির কারন।,,

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বনজঙ্গল ধ্বংস ও মানুষের নেতিবাচক কর্মকা-ের কারণে অনেক বন্যপ্রাণী বহু আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। আবার কোনো কোনো বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পথে। বাংলাদেশ থেকে ঈগল, বনমহিষের মতো অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে। শকুনও বিলুপ্তির পথে। এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ বা বাঘ নিয়ে। বাংলাদেশ তো বটেই, পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষণীয় প্রাণী হচ্ছে বাঘ। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের বাঘ মূলত ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ নামে খ্যাত। বছর যাচ্ছে আর সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমছে। বাঘের বিলুপ্তির পেছনে মানুষের নানা কর্মকা-ই দায়ী। 
সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিপর্যায়ের বিভিন্ন জরিপ বলছে, ৪২ বছরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। সরকারের বন বিভাগের জরিপে ২০০৪ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০। একই সংস্থার জরিপে ২০১৫ সালে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৬-এ। বেসরকারি বিভিন্ন জরিপেও প্রায় একই রকম তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছর অক্টোবর মাসে যুক্তরাজ্যের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত ‘সুন্দরবনের বাঘ সমীক্ষায়’ বলা হয়েছে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১২১। বিভিন্ন জরিপে যেভাবেই বলা হোক না কেন, এ কথা সত্যি, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। কিন্তু বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির দিক দিয়ে বিশ্বের চিত্র ইতিবাচক। বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিলের (ডব্লিউডব্লিউএফ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২০০, আর ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮৯০। বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, এমন দেশের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, ভারত ও নেপাল। 
বাংলাদেশের জাতীয় বন সুন্দরবন। বিশ্বে বাংলাদেশ ‘সুন্দরবনের দেশ’ হিসেবেও অধিক পরিচিত। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যে দেশের জাতীয় বনে জাতীয় পশু থাকে। সুন্দরবনের সৌন্দর্যের প্রতীক ও সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রাণী বাঘ কমতে থাকলে সুন্দরবন ভালো থাকবেÑ এমনটি মনে করার কারণ নেই। সুন্দরবন ও এর আশপাশের পরিবেশ এখন বদলে যাওয়া শুরু করেছে। ধীরে ধীরে বনের আশপাশে গড়ে তোলা হচ্ছে শিল্পকারখানা। বনের ভেতর দিয়ে এখন প্রায় প্রতিদিনই নৌযান চলাচল করছে। আগে এমনটি ছিল না। বনে চোরা শিকারিদের সংখ্যা বাড়ছে। বাঘের আবাসস্থল নানা কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশে-বিদেশে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের চাহিদা থাকায় পাচারকারীরা বাঘ হত্যা করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুন্দরবনে প্রতি বছর কমপক্ষে চার-পাঁচটি বাঘ হত্যা করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন কারণে সুন্দরবনে বাঘের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। পশুরা কথা বলতে পারে না; কিন্তু তাদের বোবা কান্না প্রকৃতি ঠিকই শুনতে পায়। শুধু শুনতে পান না বন ও বাঘ রক্ষায় কর্তাব্যক্তিরা। 
বাঘ নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জিতলে খবরের শিরোনাম হয়Ñ ‘বাঘের গর্জন শুনেছে বিশ্ব’ বা ‘এবার টাইগারদের জয়’। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের লোগোতেও বাঘের ছবি আছে। তাই সময় থাকতে বাঘ রক্ষায় আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চোরা শিকারিদের ধরে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এমনিতেই পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বন ও বন্যপ্রাণীদের ওপর পড়তে শুরু করেছে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থেই বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্যোগও জোরেশোরে নেয়া হচ্ছে। ২০১০ সালে রাশিয়ায় ‘বিশ্ব বাঘ সম্মেলনে’ ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে। সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সুন্দরবনে ৪৪০টি বাঘ রয়েছে। বাংলাদেশও এ সংখ্যা দ্বিগুণ করবে। কিন্তু সত্য হলো, বাংলাদেশ বাঘ রক্ষায় সঠিক পথে নেই। 
সুন্দরবন কেমন আছে, তা বোঝা যায় বাঘের সংখ্যা দেখে। প্রয়োজনে যেসব দেশে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে, সেসব দেশের সহায়তা নেয়া যেতে পারে। বাঘ রক্ষায় ও বাঘের সংখ্যা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে সুন্দরবন থেকে বাঘ চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখনই বাঘ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। 




তাছাড়া

এখান থেকেও জেনে নিন 

সুন্দরবনে কেন কমছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার

Indien bengalischer Tiger
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

আমাদের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগের একমাত্র বাসস্থান হচ্ছে "ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট " তথা সুন্দরবন। কিন্তু বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন,  ভূমিক্ষয়, সমুদ্রসীমার উচ্চতা বৃদ্ধি, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদির ফলে এই বন খুব দ্রুত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মানুষ গাছ কেটে বন উজাড় করার ফলেও সুন্দর তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। ম্যানগ্রোভ বনের এই অবনতির ফলে বাঘ ঝুকির মধ্যে রয়েছে। যেহেতু বাঘের উপযুক্ত আবাস্থল বিপর্যয়গ্রস্ত, সেহেতু বাঘের জিবনযাত্রার ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সুন্দরবনের বাঘ আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে হাটছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ