এমন কি কোনো হদিসে আছে যে মিলাদ পড়া জায়েজ?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মিলাদ এর শাব্দিক অর্থ হল জন্ম। মিলাদুন্নবী মাহফিল এর উদ্দেশ্য হল হুজুর সা.- এর জীবন বৃত্তান্ত আলোচনা করা। মিলাদের উদ্দেশ্য এটাই হলে তবে হুজুর সা. এর জীবনী আলোচনা করে এবং এর শেষে দরুদ (আর সবচেয়ে বড় দুরুদ হচ্ছে দরুদে ইব্রাহীম) ও দোয়া করে নিলে তবে মিলাদ করা জায়েজ আছে। কিন্তু আমাদের দেশে মিলাদ ও কিয়াম সাধারনত যে নিয়মে করা হয় এবং আজগুবি কবিতা ”ইয়ানবী সালামু আলাইকা” ধরনের শাব্দিক ও অর্থগত ভুল দরুদ পড়া হয় তা আপত্তিকর ও কুরান হাদিসের নীতি বহির্ভুত। ৬০৪ হিজরীতে ফাসিক বাদশাহ আবু সাঈদ মুযাফফরুদ্দীন , আবুল খাত্তাব ইবনে দিহইয়া নামক জনৈক দরবারী আলেম দ্বারা মিলাদ মাহফিলের ব্যাবস্থা করেন। আল্লামা আব্দুর রহমান রহ. প্রচলিত মিলাদকে বেদাত বলেন। খোলাফায়ে রাশেদিন , সাহাবাগন রা. আইম্মায়ে মুজতাহিদগন তা করেন নি।(প্রমান আশশিরাতুল ইলাহিয়া ২৫৩ পৃ) আল্লামা আহমদ বিন মুহাম্মদ মিসরী রহ. লিখেন মাযহাব চারের ইমামগন মিলাদ মাহফিলের জঘন্যতার উপরে একমত পোষন করেন। (প্রমানঃ রাহে সুন্নাত ২৫৩ পৃ) ”যদি কেউ আমার এই দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু আবিষ্কার করতঃ অনুপ্রবেশ করায় তাহলে সে কাজ হবে প্রত্যাখ্যাত। কিছুতেই তা গ্রাহ্য হবেনা” (বুখারী ও মুসলিমঃ মিশকাত শরীফ ২৭ পৃ) উল্লেখ্য মিলাদে কিয়াম করা শিরক ও নাজায়েজ। তবে প্রচলিত পন্থা ছাড়া কেউ মিলাদ পড়াতে চাইলে নিয়ম এই যে, কোন একজন হক্কানী আলেম রসুল সা.- এর জীবনী নিয়ে আলোচনা করবেন এবং দরুদ পড়ার ফযীলত বলবেন এবং সবাই মহব্বতের সহিত দরুদ পড়বে। পরিশেষে আলেম সাহেব সবাই কে নিয়ে দোয়া করবেন। (প্রমানঃ মিশকাত ২৭, ৪০৩, ওয়াফ্যাতুল আয়ান ৪ঃ১১৭ইতেসাম ১;১১৪, মজলিসে আবরার ২১৩ ফাতয়াওয়ায়ে রাহিমীয়া ২;২৮৩ মুসলিম শরীফ ২;৭৭, আবু দাউদ শরীফ ২;৭১০) হক্কানী আলেমদের মতঃ ইয়া নবী সালামু আলাইকা- এখানে যে “ইয়া” শব্দটা বলা হয় সেটা তখনি বলা হয় যখন কেউ উপস্থিত থাকে কিন্তু নবী করিম সা.- এর সাথে এই ইয়া বলে বেদাতিরা বেয়াদবি করে। কারন নবী সা.- কে তারা হাজির নাজির বলে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেহ-ই হাজির নাজির নয়। রাসূল সা.- এর কি এত সম্মান কম (নাউযুবিল্লাহ্) যে ওনি সৌদি থেকে মিলাদ শোনার জন্য বাংলাদেশে আসবেন? আর যারা কিয়াম করে, তারা তাদের কিয়ামের অল্প সময় শুধু দাঁড়িয়ে থাকে আর বাকি সময় বসে থাকে। রাসূল সা. কে সম্মান জানাতে হলে তো সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে তাইনা? যাদের সামান্য জ্ঞান বুদ্ধি আছে তারা এইসব পাগলামী করবে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কুরআন ও হাদিসের সঠিক জ্ঞান অর্জন করে আমল করার তৌফিক দান করুন আমীন। কিয়াম না করার পে দলীল: নির্ভরযোগ্য হাদিস গ্রন্থসমূহ থেকে কিছু প্রমান নিম্নে দেয়া হল। আল মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা থেকে প্রমান পেশ করা হলো। عن أبي أمامة قال خرج علينا رسول الله صلى الله عليه وسلم متوكئا على عصا فقمنا إليه فقال لا تقوموا كما تقوم الاعاجم يعظم بعضها بعضا (২) أبو أسامة عن حبيب بن شهيد عن أبي مجلزقال دخل معاوية بيتا فيه عبد الله بن عامر وعبد الله بن الزبير فقام عبد الله بن عامر ولم يقم عبد الله بن الزبير فقال معاوية لابن عامر اجلس ، فإني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من سره أن يتمثل به الرجال قياما فليتبوأ مقعده من النار (আল মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা -২১/২২৭, সুনানে আবু দাইদ-৫/১০০ হাদিস নং ৫২৩০, শুয়াবুল ইমান লিআবি বকর-৬/৪৬৯ হাদিস নং ৮৯৩৭, আউনুল মাবুদ শরহে সুনানু আবু দাউদ ২৬/৩৭৪ ফাতহুল বারী লি ইবনে হাজার-৫/৮১ কানযুল উমাল-১০/২৯৪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল-৫/২৫৩ হাদিস নং ২২২৩৫,) ১.হযরত আবি উমামাত থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সা. (একবার) আমাদের নিকট লাঠিতে ভর করে আসলেন, তখন আমরা তাঁর (উপস্থিতির কারনে) দাঁড়িয়ে গেলাম অতঃপর রাসূল সা. আমাদেরকে বললেন, তোমরা দাঁড়াবে না ঐ সমস্ত বেদুঈনদের মতো যারা একে অপরকে সম্মান দেখানোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। ২. একদা হযরত মুআবিয়া একটি ঘরে প্রবেশ করলেন যে ঘরে আব্দুল্লাহ ইবনে আমের ও আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের ছিলেন অতপর আব্দুল্লাহ ইবনে আমের হযরত মুআবিয়া রা. কে দেখে দাঁড়িযে গেলেন কিন্তু আব্দুল্লা ইবনে যুবায়ের দাঁড়ালেন না। হযরত মুআবিয়া আব্দুল্লাহ ইবনে আমেরকে বললেন, তুমি বসে পর। আমি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি যদি কোন ব্যাক্তি কাউকে দাড়িয়ে সম্মান করে খুশি হয় (তাদের মতো কোন মানুষকে) তবে তার ঠিকানা জাহান্নামে সে বানিয়ে নিল

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ