এখন নাক দিয়ে রক্ত পড়তেছে।নাকের হাড় বাড়ার কারনে রক্ত পড়ছে কি??না অন্য রোগের কারনে পড়ছে??যদি নাকের হাড় বাড়ার কারনে যদি পড়ে তাহলে কী নাকের হাড় বাড়ার ঔষধ খেলে হবে কী??অপারেশন বাদ দিয়ে বলবেন??
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
simpleboy

Call

বেশির ভাগ মানুষেরই নাকের হাড় বাঁকা থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মনে করেন, অন্তত ৯০ শতাংশ মানুষের নাকের হাড়ই বাঁকা। তবে এ জন্য তাদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না বা সমস্যা দেখা দেয় না। আর এ কারণে বেশির ভাগ মানুষকে নাকের বাঁকা হাড় নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় না।

তবে এমন সৌভাগ্য সবার হয় না। কারো কারো জন্য নাকের বাঁকা হাড় বেশ সমস্যা ডেকে আনে। তাই নাকের হাড় বাঁকা ও তার প্রতিকার নিয়ে আমরা আপনার স্বাস্থ্য অনুষ্ঠানে আলোচনা করেছি। আর আলোচনা করেছেন ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের নাক কান ও গলা বা ইএনটি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা.মাহবুবুর রহমান।

কোনো জনগোষ্ঠির প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষেরই নাকের হাড় বাঁকা এ কথা আগেই একবার বলেছি। সে জন্য নাকের হাড় বাঁকা থাকলেই চিকিৎসা করতে হবে এমনটি ভাবা ঠিক নয়। আসলে নাকের হাড় বাঁকার কারণে যদি কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় তাহলেই চিকিৎসার প্রয়োজন পড়বে। এবার নাকের হাড় বাঁকা থাকার কারণে কি ধরণের অসুবিধা হতে পারে সে ব্যাপারে আলোচনার আগে বরং জেনে নেই নাকের হাড় কেন বাঁকা হয়।

হ্যাঁ, এ ধরণের প্রশ্নের জবাবে নাক কান গলার যে কোনো চিকিৎসকই বলবেন, মূলত নাকের হাড় বাঁকা হয় ট্রমা বা আঘাতজনিত কারণে। শিশুর নাকের হাড় বাঁকা হয়ে মূলত জন্মের সময় নাকে আঘাত পাওয়ার কারণে। গর্ভবতী মায়ের প্রসবের সময় দীর্ঘায়িত হলে তাতে সন্তানের নাকের উপর অবিরাম চাপ পড়বে। আর এ কারণে তার নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সূচনা হতে পারে।

এ ভাবে যে শিশুর নাকের হাড় জন্মের সময়ই বেঁকে গেছে তার বয়স বাড়ার সাথে সাথে নাকের হাড় আরো বাঁকা হতে থাকবে। এ ছাড়া মায়ের পেটে থাকার সময় শিশুর অবস্থান বা পজিশন কি তাও নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার কারণ হতে পারে। মাতৃগর্ভে এ ধরণের অবস্থান নাকের উপর চাপের কারণ হতে পারে। আর অবিরাম এ ধরণের চাপের কারণে শিশুর নাকের হাড় বাঁকা হয়ে যেতে পারে তার জন্মের আগেই।

এ ছাড়া শিশু যখন হাঁটতে শেখে বা খেলতে যায় তখন নানাভাবে নাকে আঘাত পেতে পারে। সাধারণভাবে চেহারার মধ্যে নাকের অবস্থানটি এমন যে মুখে কোনো আঘাত লাগলে তা প্রথমেই নাকে লাগতে পারে। বিশেষ করে বাচ্চারা যখন উপুড় হয়ে পড়ে তখন তাদের নাকেই প্রথম আঘাত লাগতে পারে।

তরুণাস্থি এবং হাড় মিলে নাকের হাড় গঠিত। এই হাড় সব সময় একই রকমভাবে বাঁকা হয় না। নাকের হাড় বাঁকা হওয়ারও নানা রকম ফের আছে। নাকের হাড়ের বাঁকা হওয়ার ধরণের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করে থাকেন। কোনো কোনো নাকের হাড় বেশ জটিলভাবেই বাঁকা হতে পারে আবার কোনো কোনো নাকের হাড় বাঁকা হলেও তাতে জটিলতা না থাকতেও পারে। তবে নাকের হাড় বাঁকা থাকার জন্য যখন কোনো সমস্যা দেখা দেয় তখনই শুধু রোগী চিকিৎসকের কাছে যান।

নাকের হাড় বাঁকা থাকার কারণে রোগীর নানা রকম সংকট বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। নাকের হাড় বাঁকা থাকার জন্য রোগীর এক নাক বা দুই নাকই বন্ধ থাকার কষ্ট হতে পারে। কিংবা নাকের হাড় বাঁকা থাকার কারণে সেখানকার স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে তীব্র ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে। নাকের হাড় বাঁকা থাকার কারণে কখনো কখনো কোনো কোনো রোগীর সাইনোসাইটিস হতে পারে। আর সাইনোসাইটিস হলে রোগীর অবিরাম মাথা ব্যাথা হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নাকের বাঁকা হাড় বাইরের থেকেই দেখা যায় এবং এই ধরণের বাঁকা হাড় রোগীর সৌন্দর্যহানির কারণ হতে পারে।

নাকের হাড় বাঁকা থাকলে তার চিকিৎসা কোনো অবস্থায়ই ওষুধ দিয়ে সম্ভব নয়। বা এ ধরণের চিকিৎসা ওষুধ দিয়ে আদৌও হয় না। সাধারণভাবে নাকের হাড় কতোটা বাঁকা তার উপর নির্ভর করে অপারেশন করতে হয়। বাংলাদেশের মতো দেশের উপজেলা পর্যায়েও এ ধরণের অপারেশন হতে পারে। এই অপারেশন করার জন্য রোগীকে পূর্ণভাবে অজ্ঞান করে নেয়া হতে পারে। আবার যদি নাকের হাড় তেমন মারাত্মকভাবে বাঁকা না হয় তবে নাকের যে স্থানের অপারেশন করা হবে সে স্থানকে অবশ করে নিয়ে অপারেশন করা যেতে পারে। আর শিশুদের বেলায় এ ধরণের অপারেশন সাধারণভাবে আঠার বয়সের আগে করা হয় না। কারণ আঠারো বয়সের আগে এ ধরণের অপারেশন করা হলে শিশুটির চেহারার সৌন্দর্যহানি ঘটতে পারে।

এই আলোচনার শেষে এসে নাক কান ও গলা বা ইএনটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা.মাহবুবুর রহমান বলেছেন, নাক বাঁক থাকলেই অপারেশন করতে হবে এমন ধারণার কোনো যুক্তি নেই। বাঁকা থাকার কারণেই যদি নাকে কোনো সমস্যা হয় তা হলেই নাক অপারেশন করতে হবে। অর্থাৎ নাকের বাঁকা হাড় যদি কোনো সমস্যার কারণ হয়ে দেখা না দেয় তবে তার জন্য কোনো ধরণের চিকিৎসা করার কোনো দরকার নেই।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ