নিয়ত কিভাবে করব? উত্তরঃ নিয়তের স্থান হল মানুষের অন্তর। সকল ইবাদতের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। সুতরাং নিয়ত অন্তরেই করবে, মুখে উচ্চারণ করার কোন প্রয়োজন নেই। মুখে উচ্চারণ করা বরং শরিয়ত পরিপন্থি। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবিদের কারো থেকে এ ধরনের কোন বর্ণনা পাওয়া যায়নি যে, তারা কখনো বলেছেন ﻧﻮﻳﺖ ﺃﻥ ﺃﺻﻮﻡ বা ﻧﻮﻳﺖ ﺃﻥ ﺃﺻﻠﻲ ইত্যাদি। সুতরাং নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বিদআত । রোজার নিয়তে সেহর- ইফতার খাওয়াই যথেষ্ট। এতে রোজা আদায় হয়ে যাবে। শায়খ তকি উদ্দিন ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, রোজাদার যখন রাতের খাবার খায় রোজা রাখার ইচ্ছায়ই খায়। এ কারেণইতো রমজানের রাতের খাওয়া এবং ঈদের রাতের খাওয়ার মধ্যে প্রার্থক্য করে। তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি জানতে পারে যে, আগামি কাল রমজান এবং সে রোজা রাখার ইচ্ছা করে, এতেই তার নিয়ত হয়ে যায়। আলাদাভাবে নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। যুগ যুগ ধরে মুসলমানদের আমল এ রকমই চলে আসছে। নফল রোজার নিয়ত: নফল রোজার নিয়ত দিনের বেলায়ও করা জায়েয আছে। তবে শর্ত হচ্ছে সুবহে সাদেক থেকে নিয়ে নিয়তের সময় পর্যন্ত রোজার পরিপন্থি কোন কাজ যথা খাওয়া পান করা ইত্যাদি তার থেকে সংঘটিত হতে পারবে না। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট প্রবেশ করে বললেন, তোমার নিকট খাওয়ার কোন কিছু আছে কি? আমরা বললাম: না, তখন রাসূলুল্লাহ বললেন, তাহলে আমি রোজা রাখলাম। (হাদিসটি ইমাম বুখারি ছাড়া সবাই বর্ণনা করেছেন। ( মুসলিম, হাদিস নং - ১১৫২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাবার চাওয়া দ্বারা প্রমাণিত হয় তিনি ইতি পূর্ব হতে রোজা রাখার নিয়ত করেননি। আর তাঁর " ﻓﺈﻧﻲ ﺇﺫﺍ ﺻﺎﺋﻢ " বলা প্রমাণ করে, তিনি রোজা আরম্ভ করেছেন দিনের বেলা হতে। এতে বুঝা যায় নফল রোজার নিয়ত দিনের বেলা করলেও চলবে।
আপনার রোজা রাখার নিয়তটা কেমন, তা আল্লাহ তায়ালা আগে থেকেই জানেন, তাই মুখে বলার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ বলেন, তোমরা যদি মনের কথা গোপন করে রাখ, অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সেসব ও তিনি জানেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। "সুরা আল ইমরান আয়াত ২৯" রমজানের রোযা রাখার নিয়ত মুখে বলা একান্ত কর্তব্য নয়। যদি নিয়ত নাও করেন তাহলে-ও রোযা হবে। যদি আপনারা ইবাদত আল্লাহকে রাজি-খুশি করার উদ্দেশ্যে হয়।