নাপাম নামটা এসেছে দুইটা এসিডের নামের মিলন থেকে ন্যাপথ্যানিক এসিড (naphthenc acid) ও পামিটিক এসিড (palmtic acid)...এই দুইয়ের মিশ্রণে এক ধরনের জেলি জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি হয়। এখন এই জেলির সঙ্গে পেট্রোল বা গ্যাসোলিন মিশালে এক ধরনের থলথলে দাহ্য পদার্থ তৈরি হবে। সেটাকে বিস্ফোরকের সঙ্গে মিশিয়ে বোমা বানিয়ে ছুঁড়ে মারলেই হলো...বোমা ফুটে চারিদিকে আগুন তো ছড়াবেই, তার সঙ্গে সঙ্গে এই জেলির মত থলথলে পদার্থ কাদা বা আলকাতরার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে...সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হলো, এটা একবার কোনো কিছুর সঙ্গে লেগে গেলে আর ছুটানো যায় না, অনেকটা আলকাতরারই মত লেগে থাকে। জ্বলন্ত এই নাপাম মানুষের গায়ে, চামড়ায় বা কাপড়ে লাগলে চরম সর্বনাশ হয়ে দাঁড়ায়। কাপড় পুড়ে ভেদ করে চামড়ার সঙ্গে আটকে যাবে,এরপরে চামড়া পুড়ে পুড়ে গলে খসে যাবে , কিন্তু সেই নাপাম ছাড়ানো যাবে না। এরকম কত হতভাগ্যের চামড়া মাংস ঝলসে, পুড়ে এসিডের রি-অ্যাকশানে হাড় পর্যন্ত ফুটা হয়ে গিয়েছিলো। কি ভয়ঙ্কর! এর চেয়েও খারাপ ব্যাপার আছে- পানিতেও এর কোন নিষ্পত্তি নাই...পানি দিলেও কিছু হবে না- যতক্ষণ না পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিস্ফোরক পুড়ে শেষ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আগুন জ্বলতেই থাকবে মানুষের শরীরে আটকে থেকে। নিষ্ঠুরতার আর এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে নাপামের মধ্যে ফসফরাস (প্রধানতঃ শ্বেত ফসফরাস) যোগ করা হত...এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি পুকুরে বা পানিতে নামে,তাহলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় আরো জোরে জ্বলে উঠবে- মানে কোনো কিছুই করার নাই...নিজের শরীরকে নিজের চোখের সামনেই জ্বলতে দেখতে হবে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে। এই বোমা বিশ্বের অন্য অনেক দেশের যুদ্ধে ব্যবহৃত হলেও, ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকানরা নিষ্ঠুরতার সঙ্গে এইটার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছে। যদিও, ততদিনে ন্যাপথ্যানিক এসিড বা পামিটিক এসিড ব্যবহার করা হত না, দ্বিতীয় জেনারেশানের আগুনে বোমা অন্য ক্যামিকেল দিয়ে বানানো হতো, কিন্তু নাপাম নামটা টিকে গিয়েছিলো।
১৯৪২ সালে এ বোমা তৈরি করা হয়। ১৯৪৫ সালে আমেরিকা ৬ লাখ ৯০ হাজার পাউন্ড নাপাম টোকিওতে ছাড়ে। এ বোমা বিশ্বের অন্য অনেক দেশের যুদ্ধে ব্যবহৃত হলেও, ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকানরা নিষ্ঠুরতার সঙ্গে এটির সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছে। সায়গনের (এখন হো চি মিন সিটি নামে পরিচিত) উত্তরে ১৯৭২ সালে যখন নাপাম বোমা হামলা হয়।
নাপাম বোমা তৈরি করা হয় ন্যাপথ্যানিক অ্যাসিড ও পামিটিক অ্যাসিড এই দুইয়ের মিশ্রণে। এই দুই অ্যাসিড মিশে এক ধরনের জেলিজাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি হয়। এই জেলির সঙ্গে পেট্রল বা গ্যাসোলিন মিশিয়ে এক ধরনের থলথলে দাহ্য পদার্থ তৈরি করা হয়। সেটাকে বিস্ফোরকের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় নাপাম বোমা। বোমা ফুটে চারদিকে আগুন তো ছড়াবেই, তার সঙ্গে সঙ্গে এই জেলির মতো থলথলে পদার্থ কাদা বা আলকাতরার মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাবে। এ জেলি একবার কোনো কিছুর সঙ্গে লেগে গেলে আর সহজেই তা ছোটানো যায় না, আলকাতরারই মতো লেগে থাকে। জ্বলন্ত এই নাপাম মানুষের গায়ে, চামড়ায় বা কাপড়ে লাগলে চরম সর্বনাশ হয়ে দাঁড়ায়। কাপড় পুড়ে ভেদ করে চামড়ার সঙ্গে আটকে যাবে, এরপর চামড়া পুড়ে পুড়ে গলে খসে যাবে, কিন্তু সেই নাপাম ছাড়ানো যাবে না যতক্ষ্ণ না পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিস্ফোরক পুড়ে শেষ হব।