মানব-মানবীর জীবন যাপনের বাস্তবতা অবলম্বনে যে কল্পিত উপাখ্যান পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য বিশেষ বিন্যাসসহ গদ্যে লিপিবদ্ধ হয় তাই উপন্যাস।(তথ্য:উইকিপিডিয়া)
মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসে কাহিনি অবলম্বন মাত্র, প্রকৃত উদ্দেশ্য থাকে মানবমনের জটিল দিকগুলো সার্থক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপস্থাপন করা।
আবার সামাজিক উপন্যাস ও মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসে নৈকট্যও লক্ষ করা যায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বউ ঠাকুরানীর হাট ও রাজর্ষি উপন্যাসদ্বয় লেখার পর দীর্ঘদিন কোন উপন্যাস লেখেন নি। সম্ভবত এ ধরনের ইতিহাস আশ্রিত আখ্যানে তাঁর তৃপ্তি ঘটে নি। এখানেই রবীন্দ্রনাথের হাতে বাংলা উপন্যাসের পালাবদলের সূত্রটি নিহিত। চোখের বালি তে বাস্তব নাগরিক জীপনের পটভূমি অবলম্বন করে,সামগ্রিক পরিমণ্ডলকে মননশীল আবহাওয়ামণ্ডিত করেছেন। চাঞ্চল্যকর দ্রুতি গুণ থেকে উপন্যাস দীপ্তি গুণান্বিত হয়ে উঠেছে। তত্ত্ব আত্মস্থ হয়ে গেছে চরিত্রে। কাহিনী জায়গায় পেয়েছে বট,কিন্তু জায়গায় জোড়ে নি। রীতিমত সমাজনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত নারীর সংস্কার ও আত্মসম্মানবোধের দ্বন্দ্বের সমস্যা জটিল হয়েছে অর্থনৈতিক শ্রেণিবিন্যাসে ক্ষয়িষ্ণু সামন্ততান্ত্রিকতার দ্বন্দ্বে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চোখের বালি বাংলা সাহিত্যের কেবল শ্রেষ্ঠ উপন্যাসই নয় বরং উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে যুগান্তর এনেছে। উপন্যাসটির কাহিনীর অপ্রতুলতা,চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে উপন্যাসটি বাংলা উপন্যাসের পথিকৃৎ।