সমকামিতা প্রাকৃতিক না অপ্রাকৃতিক তা নিয়ে বিতর্ক আছে।
অনেক দেশের আইনে এটি অপরাধ গন্য করা হয়।
বাংলাদেশে,ভারত,পাকিস্থানের আইনে ৩৭৭ ধারা মত এটি অপ্রাকৃতিক যৌনকর্ম হিসেবে অপরাধ।প্রায় সব ধর্মীয় চেতনায় ও এটি অপ্রাকৃতিক ও সীমালঙ্ঘন হিসেবে গন্য করা হয়।
কিছু বৈজ্ঞানিক গভেষনায় দেখাযায় অনেক প্রানী সমকামী আচরণ করে। এর থেকে তারা বলে যে এটা প্রাকৃতিক। অনেক মানুষের মধ্যে তার অজান্তে কিছু সমকামী বৈশিষ্ট্য কাজ করে। সমকামীতা সম্পর্কে তার জ্ঞান না থাকলেও সে হয়তো সম লিঙ্গের প্রতি আবেগ অনুভব করে। এসব কে কিছু বিজ্ঞানিরা প্রাকৃতিক হিসেবে যুক্তি দাড় করায়।
মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই।চাইলেই মানুষ এ ধরণের অভ্যাস ত্যাগ করতে পারে।
হ্যা, সমকামিতা প্রাকৃতিক। একজন সমকামী নারী বা পুরুষ উভয়ই হতে পারে। সাধারণত যে সকল নারী বা পুরুষ সমকামী হয়ে থাকে তাদের অধিকাংশরই ভিতরের উত্তেজনা বিকৃত। এটা আল্লাহ প্রদত্তই বেশী হয়। আল্লাহ তাকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, সে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহী নয়। অর্থাৎ একজন পুরুষ নারী দেখলে আগ্রহ বা উত্তেজনা সৃষ্টি হয় না। মূলত তার বাহ্যিক গঠন হলো পুরুষ কিন্তু তার ভেতরটা হল নারী। এজন্য সে নারী দেখলে আগ্রহী হয়না বরং পুরুষ দেখলে আগ্রহী হয়। এবং তার সাথেই মিলিত হতে চায়।
এর কোন ঔষুধ আছে বলে মনে হয় না। এসমস্যার কারণেই মানুষ হিজরা হয়ে যায় এবং নিজের গোপন অঙ্গ কেটে ফেলে নারী সেজে যায়। যাতে তার প্রতি পুরুষ লোকেরা আগ্রহী হয় এবং সে নিজের মন মত পুরুষের সাথে মিলিত হতে পারে।
মানুষ চাইলে এ থেকে বিরত থাকতে পারে এবং থাকতেই হবে। এটাই ইসলামী শরীয়তের আদেশ। নিজের গোপন অঙ্গ কেটে ফেলা বা সমকামিতা করা সম্পূর্র্ণ হারাম। কিন্তু একবারে একে দুর করতে পারবে না। নিজের ইচ্ছার বিরোধী কাজ তাকে করতে হবে। এবং তার ভাবতে হবে ”মানুষ যা চায় তার সবই কি পায়”।
তবে কিছু কিছু সমকামিতা নিজের কারণেই সৃষ্টি হয়। যে সকল পুরুষ সব সময় পুরুষের সাথে যৌন চাহিদা পুরণ করে থাকে, আল্লাহ তাদেরকে পুরুষের প্রতিই আকৃষ্ট করে তোলেন। এর দৃষ্টান্ত হলো, লুত (আ:) এর কাওম। তারা সব সময় নিজেদের চাহিদা পুরুষের সাথে পুরণ করতো বলে আল্লাহ তাদেরকে পুরুষের প্রতিই আকৃষ্ট করে তোলেছিলেন। এবং শক্ত আযাবের মাধ্যমে ধ্বংস করেছেন।
সমকামিতা প্রকৃতিবিরুদ্ধ।
প্রকৃতিবিরুদ্ধ মানে কী? যেটা প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না? তাহলে নিচের লিঙ্কটি ফলো করে দেখে নিন মানুষের বাইরে প্রকৃতিতে আর কোন কোন প্রজাতিতে সমকামের নজির পাওয়া যায়। ২০০৬ সালের এক হিসেবে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির জীবে সমকামিতার অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। এবার বলুন, সমকামিতাকে কি প্রাকৃতিক বলা যায় ।
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_animals_displaying_homosexual_behavior
সমকামিতা একটা মানসিক রোগ।
আর সব ব্যাপারে পণ্ডিতি করেন ঠিক আছে, অন্তত ক্যানভাসারের লিফলেট পড়া জ্ঞানে চিকিৎসাবিজ্ঞান কপচাতে আসবেন না। রোগ নির্ণয়ের জন্য মেডিক্যালে পড়ে আসা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা আছেন, তাদের মতামত নিন, নিজে রোগ ডায়াগনোজ করতে যাবেন না কখনো। এ উপদেশটুকু মাথায় রাখুন, হিতে আপনারই উপকার হবে।
একসময় রাম-শ্যাম-যদু-মধু থেকে শুরু করে মনোবিজ্ঞানীরা পর্যন্ত সমকামিতাকে রোগ বলেই মনে করতেন। এর চিকিৎসায় লবটমি, কেমিক্যাল ক্যাস্ট্রেশন, ইলেক্ট্রিক শকের মতো নানারকম যন্ত্রণাদায়ক কনভার্শন থেরাপির পরে যখন দেখা গেলো সমকামীকে কোনভাবেই বিষমকামীতে রূপান্তর করা যাচ্ছে না, তখন হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় একসময়। এটা এখন একটা সায়ান্টিফিক কনসেন্সাস যে, সমকামীকে বিষমকামীতে রূপান্তর করা অসম্ভব।
অনেক রোগই তো থাকে অনিরাময়যোগ্য, এটাও কি তাহলে অমন কিছু? মোটেও না। রোগ নির্ণয়ের ক্রাইটেরিয়াগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এ লাইনে কাজ করা গবেষকদের সম্মতিক্রমে বিশ্বের সব বড় বড় স্বাস্থ্য সংস্থাই ঘোষণা করেছে যে সমকামিতা কোন মানসিক রোগ নয়। বিশ্বের সবচেয়ে নামজাদা সাইকোলজিস্টদের সংগঠন আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকান সাইকিয়াট্রিস্ট অ্যাসসিয়েশনের পর ১৯৯০ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনও ঘোষণা করে যে সমকামিতা কোন রোগ নয়। কোন মানসিক কন্ডিশন যদি কারো ব্যক্তি বা কর্মজীবনের স্বাভাবিক কাজকর্মে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, তাহলেই সেটিকে রোগ বলে চিহ্নিত করা হয়। রোগ চেনার আরেকটা সহজ উপায় হচ্ছে এটা কোন শারীরিক বা মানসিক যন্ত্রণার কারণ কিনা দেখা। সমকামিতার ক্ষেত্রে এমন কিছুই পরিলক্ষিত হয় না। সমকামীরা ব্যক্তি জীবনে যেমন সুখী, কর্মজীবনেও দারুন সফল। ওদের প্রতি সমাজের নির্মমতাই ওদের সুখী জীবনকে ব্যহত করে।
তবু সমলিঙ্গ বিবাহের আইনিকরণ সমর্থন করতে পারি না। এটা ধর্মে নিষেধ।
আপনার ধর্মে আন্তঃবিশ্বাস বিবাহ নিষেধ বলে কি সেটা সবারই মানা? আপনার ধর্মে প্রেম করা নিষেধ, তাহলে কি সরকারের উচিৎ ছেলে-মেয়ে প্রেম করাও বেয়াইনি করে দেয়া? আজকে ভিন্ন ধর্মে বিয়ে বেয়াইনি করতে বলবেন, সেটা করলে কাল বলবেন প্রেম বেয়াইনি করতে। এভাবে আশকারা পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে এরপর হয়ত বলে বসবেন, ধর্মে মূর্তিপূজাও নিষেধ, অতএব…
ধর্মে নিষেধ থাকলে আপনার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপনি বসে থাকুন, তা দিয়ে অন্যের ন্যয্য অধিকারকে ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাবেন না। ধর্ম যার যার, অধিকার সবার।
কথাপ্রসঙ্গে বলে রাখি, হারাম হলেই কিছু যেমন খারাপ হয়ে যায় না, হালাল হলেও তা সবসময় ভালো হয় না। যেমন ধরেন, ইসলামে বউ পেটানো হালাল, কিন্তু আইনে এটা অপরাধ।