শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
ontu

Call

অনেকেরই ধারনা সুন্নাত করলে নেকি আছে, না করলে অসুবিধা নেই, নামাজ রোজা ঠিক থাকলেই হল। কিন্তু এমন কিছু সুন্নাত রয়েছে যা পালন করা খুবই জরুরী। যেমন দাড়ি রাখা, পুরুষের ক্ষেত্রে পায়ের টাখনুর উপরে কাপড় পরিধান করা ইত্যাদি। এগুলো হল সেই সুন্নাত যা ছেড়ে দিলে কঠিন গোনাহগার হতে হয় এবং ঐসব সুন্নাত যথাযথভাবে পালন না করলে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমাদের নবীজী মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে, পুরুষদের নিচের অংশের পরিধেয় পোশাকের যে অংশ টাখনুর নিচে ঝুলানো থাকে, সে অংশটা জাহান্নামে যাবে। (সহীহ বুখারী, ৭নং খন্ড, পোশাক অধ্যায়, হাদীসে নং- ৬৭৮) এছাড়া একই গ্রন্থের ৫ নং অধ্যায়ের ৬৭৯-৬৮৩ পর্যন্ত হাদীসগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে অহংকার বশত চলাফেরা করে, যার প্যান্ট টাখনুর নিচে মাটিতে ঝুলানো থাকে আল্লাহ্‌ তাকে অভিশাপ দেবেন। এখানে আল্লাহ্‌ রাসুলের (সাঃ) কথাটা ভালভাবে একটু বোঝার চেষ্টা করুনঃ মিথ্যা বললে জাহান্নামে যেতে হবে একথা আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) বলেন নি, অথচ মিথ্যা বলা মহাপাপ, গীবত করলে জাহান্নামে যেতে হবে একথা আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) বলেন নি, অথচ গীবত করা মহাপাপ, একটু খেয়াল করে দেখুন অন্যসব সুন্নাতের ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) একথা বলেন নি যে এই কাজের জন্য সরাসরি জাহান্নামে যেতে হবে। কিন্তু যে পুরুষে পায়ের টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরিধান করবে তাঁর ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) সরাসরি বললেন যে- সে জাহান্নামী। সুতরাং আমাদের নবী করীম (সাঃ) এর আদেশ অনুযায়ী টাখনুর নিচে যায় এমন প্যান্ট বা অন্য কোন কাপড় পরা যাবে না। আশা করি বিষয়টি স্পষ্ট। এক্ষেত্রে আমি দোষ দিব পিতাকে। কারন সে যখন বাজার থেকে প্যান্ট বা অন্য কোন কাপড় কিনে আনে তখন সে দেখছে ঐ প্যান্টটা আমার ছেলের টাখনুর নিচে চলে যাবে। এর পরেও সে ঐ প্যান্ট কিনে কি করে? যদিও সে কিনল তারপরে তো দর্জির দোকান থেকে প্যান্ট টা কেটে ঠিক করে যাতে টাখনুর উপরে থাকে তারপর বাসায় নিয়ে তার ছেলের হাতে দিতে পারত! তাহলে কি এটাই বুঝা যায় না যে পিতাই ছেলেকে রাসুলের (সাঃ) অবাধ্য হিসেবে বড় করে তুলছে? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেছেনঃ “যে কেউ আল্লাহ ও তার রসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। (সূরা নিসাঃ ১৪) আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের আদেশ করছেনঃ “ হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।(সূরা আত তাহরীমঃ ৬) এখানে বিষয়টি ভালভাবে খেয়াল করুনঃ ১. আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের আদেশ করলেন- আমাদের পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততিকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে। ২. নবী (সাঃ) বললেনঃ টাখনুর নিচে প্যান্ট পড়লে জাহান্নামে যাবে। তাহলে ঐ পিতা তার সন্তানকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাল কোথায়? ঐ পিতা তো উল্টো নিজের সন্তানকে জাহান্নামের আগুনে ঠেলে দিল!! আশা করি বিষয়টি স্পষ্ট। এছাড়া একজন মুসলিম হিসেবে এটা লেবেলের-ই একটা অংশ। একজন মুসলিমের যা যা লেবেল থাকা উচিৎ তার মধ্যে এটা অন্যতম। সুতরাং যাদের আল্লাহ্‌ভীতি রয়েছে, যারা পরকালকে ভয় করে তাদের উচিৎ টাখনুর উপর প্যান্ট পরা। এটা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই বিষয়টি যদি কেউ গাফেলতি করে তবে হাশরের দিন তার পরিণতি হবে খুবই করুন। মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ “যেদিন অগ্নিতে তাদের মুখমন্ডল ওলট পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে, হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম”। (সূরা আল আহযাবঃ ৬৬)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

আবু যর রা. বলেন, রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম- বলেছেন, “কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির সাথে কথা তো বলবেনই না বরং তাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেন না। এমনকি তিনি তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না  বরং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তারা কারা? তবে এরা তো ধ্বংশ, তাদের বাঁচার কোন রাস্তা নাই। রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম- এ কথা তিনবার বলেছেন। তারা হলঃ

 ১) যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে।

২) যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে ব্যাবসার পণ্য বিক্রি করে।

৩) যে ব্যক্তি কারো উপকার করে আবার খোটা দেয়। (মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইব্‌ন মাজাহ্‌)।

আবু হুরায়রা নবী -সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম- থেকে বর্ণনা করে বলেন, “লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা আগুনে প্রজ্জলিত হবে।” (বুখারী)

জাবের ইব্‌ন সুলাইম রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, “টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পড়ার ব্যাপারে সাবধান হও। কারণ, তা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ অহংকার করাকে পছন্দ করেন না।” (আবু দাঊদ। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)।

ইব্‌ন বায এবং ইব্‌ন উছাইমীন (রাহ.) এর ফাতওয়া

ইব্‌ন বায (রাহ.) বলেন, “যে কোন অবস্থায় টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়াকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অহংকারের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন। কারণ, তিনি বলেন, “টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়া থেকে সাবধান! কারণ তা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত।” এখানে তিনি বিশেষ কোন অবস্থাকে বাদ দেন নি। সুতরাং যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরবে সে এ শাস্তির আওতায় চলে আসবে। চাই তা পায়জামা হোক বা লুঙ্গি, কুর্তা বা অন্য কোন পোশাক। কোন পোশাকের ক্ষেত্রেই টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পড়ার সুযোগ নেই।”

মুহাম্মাদ ইব্‌ন সালেহ আল উছাইমীন (রাহ.) বলেন, “অহংকার বশতঃ যে ব্যক্তি লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পড়বে তার শাস্তি হল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার সাথে কথা তো বলবেনই না বরং তার দিকে তাকিয়েও দেখবেন না। এমনকি তিনি তাকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না  বরং তার জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি আর যদি অহংকার বশতঃ ঝুলিয়ে পরে তাবে তার শাস্তি হল, সে যতটুকু কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরেছিল ততটুকু আগুনে প্রজ্জলিত হবে।

(তথ্যসূত্রঃ ফাতওয়া আল বালাদুল হারাম, ১৫৪৭, ১৫৪৯, ১৫৫০ নং পৃষ্ঠা)

966
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

টাখনুর নীচে সেলোয়ার বা পেন্ট  অহংকার বা ইচ্ছে   করে পড়লে আল্লাহ তায়ালা যে পুরুষ পড়বে তার উপর রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ