রেফারেন্স সহ জানতে চাই।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Call

"হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর ইন্তেকালের ঘটনা" ------------------------------------------------------------------- হযরত আলী (রাঃ), ফজরের নামাজ আদায় করতে মসজিদে গেছেন ৷ এদিকে হযরত ফাতিমা (রাঃ আঃ)র, গায়ে অত্যান্ত জ্বর অবস্থায়, ঘরের সমস্ত কাজ শেষ করেছেন ৷ আলী (রাঃ), মসজিদ থেকে এসে দেখেন ফাতেমা কাঁদতেছেন, আলী (রাঃ), প্রশ্নঃ করলেন ?  ফাতেমা তুমি কাঁদ কেন ? ফাতেমা কোন উত্তর দিলেন না । ফাতেমা আরও জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন, আলী (রাঃ) কয়েকবার প্রশ্ন করার পরে, ফাতিমা (রাঃ) কাঁদতে কাঁদতে বলেন, হযরত আলী. . . . . আমি স্বপ্নের মধ্যে দেখতেছি, আমার আব্বাজান, রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) আমার ঘরের ভিতরে ঢুকে কি যেন তালাশ করতেছেন, ঘর থেকে বাহির হওয়ার সময়, আমি পিছন দিক থেকে, আমার আব্বাজান কে ডাক দিলাম । ও আব্বাজান আপনি কি তালাশ করতেছেন ?  আব্বাজান মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সঃ) বলতেছেন, ও আমার ফাতিমা, আমি তোমাকে তালাশ করতেছি, তোমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ।  আরও বললেনঃ ও আমার ফাতেমা, আজকে তো তুমি রোজা রাখবে ৷ সেহরি খাবে আলীর দস্তরখানায়, আর ইফতার করবে আমি আব্বাজানের দস্তরখানায় ৷৷৷ হযরত আলী (রাঃ) এই স্বপ্ন শোনার পর, দু’জনের বুঝতে বাকী থাকলোনা, যে ফাতিমা আজকেই ইন্তেকাল করবেন !  দু'জন আরও জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন ।  এই সময়ের মধ্যে হযরত হাসান হুছাইন (রাঃ) এসে জিজ্ঞাসা করতেছেন, ও আব্বাজান ও আম্মাজান আপনারা দুজন কাঁদেন কেন ? ফাতেমা (রাঃ)র একটা অভ্যাস ছিল, যখন হাসান হুসাইন (রাঃ) কোন কাজে বিরক্ত করতেন, তখন দুই জনকে নানাজান এর কবরের কাছে যেতে বলতেন ।  আজকে ও ফাতেমা বলেন,তোমরা দুইভাই এখন নানার কবরের সামনে চলে যাও, কবরের নিকটে যাওয়ার সাথে সাথে কবর থেকে আওয়াজ আসলো, ও আমার আদরের নাতীরা, এই মূহুর্তে তোমরা আমার কাছে কেন এসেছো , আমার কাছে তো সব সময় আসতে পারবে, এখন যাও, গিয়ে মায়ের চেহারার দিকে তাঁকিয়ে থাক, আজকের পরে তোমাদের মাকে আর পাবেনা ৷ এই কথা শোনার পরে, দুই ভাই কাঁদতেছেন আর দৌড়াতে দৌড়াতে আম্মার নিকট চলে গেলেন । গিয়ে আম্মাকে বললেন ।  তোমরা দুইজনে কেন কাঁদতেছ বুঝেছি, নানাজান আমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আজকের দিনটা তোমার জন্য শেষ দিন ।  নানাজান তোমার চেহারার দিকে তাঁকিয়ে থাকার জন্য আমাদের কে বলেছেন ।  বিকেলের দিকে হজরত ফাতিমা (রাঃ) এর শরীর বেশি খারাপ হলো । তাকে বিছানাতে শোয়ানো হলো । ফাতেমা (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বক্ষনে আলী (রাঃ)-কে তিনটি কথা বলেন ৷ {০১}  হযরত আলী যেদিন থেকে আমি আপনার ঘরে এসেছি, ঐ দিন থেকে নিয়ে, আজ পর্যন্ত আপনাকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি, আলী আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে, আমি সন্তানের কারনে, (আমি মেয়ের কারনে) আমার আব্বাজান অনেক লজ্জিত হবেন ৷ বলেন আপনি আমাকে ক্ষমা করেছেন কি না ।  হযরত আলী (রাঃ) বলেন ও ফাতেমা, তুমি এসব কি বলতেছো !  আমি আলী তো তোমার যোগ্য ছিলাম না, তোমার আব্বাজান দয়া করে মেহেরবানী করে তোমাকে আমার. . .  কাছে বিয়ে দিয়েছেন, বিয়ের দিন থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত, আমি আলী তোমাকে কোনদিন ঠিকমত দুইবেলা খানা খাওয়াতে পারিনাই, ও ফাতেমা তুমি বল, আমাকে ক্ষমা করেছ কি না ।  তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না কর, তাহলে আমাকে ও কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে ৷ {০২}   হযরত আলী আপনার সাথে আমার দ্বিতীয় কথা হল, আমি মারা যাওয়ার পরে আপনি বিয়ে করবেন, দুনিয়ার যে কোন মহিলাকে, আপনার পছন্দমত ৷ আপনাকে আমি অনূমতি দিলাম ৷ আর আমার সন্তান দুইটাকে, সপ্তাহে একদিন আপনার কোলে মধ্যে নিয়ে ঘুমাবেন ৷ ৷ {০৩}  হযরত আলী আপনার সাথে আমার তৃতীয় কথা হল, হাসান হুসাইন যখন বালেগ হবে, তখন দুই ভাইকে আল্লাহর রাস্তায় সোপর্দ করে দিবেন ৷ এবং আমাকে রাতের বেলায় দাফন করবেন । হযরত আলী (রাঃ) বললেনঃ "তুমি নবীর মেয়ে । আমি সবখানে খবর দিয়ে তোমায় দাফন করবো । এতে সমস্যা কি ? হযরত ফাতেমা (রাঃ) বললেনঃ "আামার কাফনের কাপড়ের অপর দিয়ে সবাই অনূমান করবে যে নবীর মেয়ে কতটুকু লম্বা ছিলো, কতটুকু স্বাস্থ্য ছিলো । এতে আমার পর্দা ভঙ্গ হবে" ।  হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর ইন্তেকালের পর তাঁর লাশের খাটিয়া বহন করার মানুষ মাত্র তিনজন । হযরত আলী (রাঃ) এবং শিশু হাসান ও হোসাইন (রাঃ আঃ) ৷ হযরত আলী ভাবছিলেন যে, খাটিয়া বহন করার জন্য মানুষ আরও একজন প্রয়োজন তবেই চার কোনায় চার জন কাঁধে নিতে পারবেন । এমন সময় হযরত আবুজর গিফারী (রাঃ) এলেন ও খাটিয়ার এক কোনা বহন করলেন । হযরত আলী প্রশ্ন করলেন ?  ও আবুজর আমি তো কাউকে বলিনাই ।  আপনি জানলেন কিভাবে  ?  হযরত আবুজর গিফারী (রাঃ) বলেন । আমি আল্লাহর রাসুল (সঃ) কে স্বপ্নে দেখেছি । তিনি বললেন । হে আবুজর !  আমার ফাতেমার লাশ বহন করার জন্য লোকের অভাব, তুমি তাড়া তাড়ি চলে যাও । হযরত আলী আমাকে তো হুজুরে আকরাম (সাঃ) আসতে বলছেন  ৷ হযরত ফাতেমা (রাঃ) আনহা-কে যখন কবরে নামাচ্ছেন, তখন হযরত আবু জর গিফারী (রাঃ) কবরের কাছে গিয়ে কবর কে উদ্দেশ্য করে বললেন....................... ★ আতাদরী মানিল্লাতী জি'না বিহা ইলাইকা  ? হে কবর,  তুই কি জানিস, আজ তোর মধ্যে কাকে রাখছি  ? [০১]  হা-যিহী সায়্যিদাতু নিসায়ী আহলিল জান্নাতী ফাতেমাতা (রাঃ) আনহা, তিনি-ই জান্নাতের সকল মহিলাদের সর্দার, ফাতেমা (রাঃ) আনহা ৷ ★ কবর থেকে কোন আওয়াজ নেই ।  [০২]  হা-যিহী উম্মূল হাসনাইন (রাঃ) আনহুমা , উনি হযরত হাসান হুসাইন এর আম্মা . . . . . . . . . ★ এবার ও কবর থেকে কোন আওয়াজ নেই ।  [০৩]  হা-যিহী ঝাউযাতু আলিয়্যিন কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ্, উনি হযরত আলী (রাঃ)-র স্ত্রী. . . . . . . ★ এবার ও কবর থেকে কোন আওয়াজ নেই ।  [০৪]  হা-যিহী বিনতু রাসুলুল্লাহি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, উনি তো জাহানের বাদশাহের মেয়ে . . . . . খবরদার কবর বেয়াদবী করবেনা " ★ "আল্লাহ্ তায়ালা কবরের জবান খুলে দিলেন" ★ কবর বললঃ- (০১) আনা বায়তুয-যুলমাতি, আমি অন্ধকার ঘর ৷ (০২) আনা বায়তুদ-দূদাতী, আমি সাপ বিচ্ছ্যুর ঘর ৷ (০৩) আনা বায়তুন-নফরাতী, আমি এমন একটি ঘর, যার মধ্যে কোন বংশ পরিচয়ে কাজ হয়না . . . . "আমি দো জাহানের বাদশাহের মেয়ে ফাতেমা কে চিনিনা" ১  হযরত আলীর স্ত্রীকে চিনিনা , ২ হাসান হোসাইনের আম্মাকে চিনিনা , ৩ জান্নাতের মহিলাদের সর্দারনীকে চিনিনা , ৪ আমি শুধু চিনি-ঈমান আর আমল । আমার মধ্যে যদি কেউ ভাল আমল নিয়ে আসে তাহলে আমি কবর তাকে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দিবো । আর যদি কেহ খারাপ আমল নিয়ে আসে , তাহলে আমি কবর দু'দিক থেকে এমন জোরে চাপা দিবো, হাড় মাংস মাটির সাথে মিশে একত্রিত হয়ে যাবে  ! ! ! আমার মুসলমান ভাই ও বোনদের উদ্দেশ্য করে বলছি ।   একটু চিন্তা করে দেখুন  যদি রাসুল (সাঃ) এর আদরের মেয়ে ফাতেমা ।  যাকে জান্নাতের সর্দারনী বলা হয়েছে । তার জন্য যদি কবর এমন কথা বলতে পারে  ! ! !  তাহলে আমাদের কি অবস্থা হবে  ?  বুঝতে পারতেছেন ।   আল্লাহ্ আমাদের সকলকে নেক আমল নিয়ে কবরে যাওয়ার তৌফিক দান করুন । আমিন ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ