কিভাবে বুঝা যাবে ক্যাস্নার হয়েছে?এটি কি শরীরের কোনো একটি অঙ্গকে কেন্দ্র করে হয়? না একবারে পুরো শরীরে হয়?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ক্যান্সার কী?কী ভাবে হয় এবং ক্যান্সার সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হলো:- 

ক্যান্সার বা কর্কটরোগ অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। কারণ হচ্ছে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পরে না, ফলে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভালো কোনও চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব হয় না। বাস্তবিক অর্থে এখনও পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুরোপুরি কার্যকর কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয় নি। ক্যান্সার সারানোর জন্য বিভিন্ন ধরেনর চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে এই রোগ সারানোর সম্ভাবনা অনেকাংশ বেড়ে যায়।

বিশ্বের সমস্ত প্রাণীর শরীর অসংখ্য ছোট ছোট কোষের মাধ্যমে তৈরি। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এই পুরনো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারনভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। সাধারনভাবে বলতে গেলে যখন এই কোষগুলো কোনও কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমার বলে। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যান্সার বলে। বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজনক্ষম হয়ে বৃদ্ধি পাওয়া কলাকে নিয়োপ্লাসিয়া (টিউমার) বলে, এবং সেরকম ক্রিয়া যুক্ত কোষকে নিয়োপ্লাস্টিক কোষ বলে। নিওপ্লাস্টিক কোষ আশেপাশের কলাকে ভেদ করতে না পারলে তাকে বলে নিরীহ বা বিনাইন টিউমার। বিনাইন টিউমর ক্যান্সার নয়। নিওপ্লাসিয়া কলা ভেদক ক্ষমতা সম্পন্ন হলে তাকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সার, এবং তার অনিয়ন্ত্রিত বিভাজনক্ষম ভেদক ক্ষমতাইযুক্ত কোষগুলিকে ক্যান্সার কোষ বলে। অনেক ক্যান্সার প্রথমে বিনাইন টিউমার হিসাবে শুরু হয়, পরে তার মধ্যেকার কিছু কোষ পরিবর্তিত (ট্রান্সফর্মেসন) হয়ে ম্যালিগন্যান্ট (অর্থাৎ ভেদক ক্ষমতাযুক্ত) হয়ে যায়। তবে বিনাইন টিউমার ক্যান্সারে পরিবর্তিত হবেই তার কোন স্থিরতা নেই। কিছু বিনাইন টিউমার সদৃশ ব্যাধি আছে যাতে ক্যান্সার হওয়া অবস্যম্ভাবী – এদের প্রি-ক্যান্সার বলে। নামে বিনাইন অর্থাৎ নিরীহ হলেও বিনাইন টিউমারও চাপ দিয়ে আশেপাশের কলার ক্ষতি করতে পারে। মেটাস্টাসিস হলো ক্যান্সারের একটি পর্যায়, যাতে ক্যান্সার কোষগুলি অন্যান্য কলাকে ভেদ করে ও রক্ত, লসিকাতন্ত্র (Lymphatic System) ইত্যাদির মাধ্যমে দূরবর্তী কলায় ছড়িয়ে যায়।

কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়:

সম্প্রতি গবেষকরা দীর্ঘ সময় গবেষণার পর জানিয়েছেন, কিছু বিষয় মেনে চলতে পারলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যাবে। একটু সচেতন এবং নিয়ম মেনে জীবনযাপন করলেই ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১.ধুমপান: পৃথিবীতে যত ধরনের ক্যান্সার হয়, তার এক-চতুর্থাংশের কারণই হচ্ছে ধূমপানসহ তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন।

ধুমপানের কারণে শুধু ফুসফুস ক্যান্সারই নয়, এর সঙ্গে মুখ, শ্বাসনালি, নাক, সাইনাস, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, জরায়ু, কিডনি, লিভারের ক্যান্সার হতে পারে। অতএব ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে নিজে ধূমপান করা এবং অন্য ধূমপায়ীদের সঙ্গে থাকার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবছর তামাকজাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের জন্য ৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। অন্যভাবে বলতে গেলে, প্রতি ৬ সেকেন্ডে মৃত্যু ঘটছে একজন মানুষের তামাক ব্যবহারের কারণে।

২. অ্যালকোহল: ধূমপান যেমন শরীরে নানা ধরনের ক্যান্সারের সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনভাবেই অ্যালকোহল শরীরের নানা স্থানে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে থাকে। মুখ, লিভার, ইসোফেগাস, ব্রেস্টসহ ফ্যারিংস ক্যান্সারের জন্য অনেক সময় অ্যালকোহল দায়ী থাকে।

৩.ইনফেকশন: বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনও ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে প্রতিটি ইনফেকশন যদি সঠিক সময়ে চিকিত্সা করা যায় তাহলে ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা সম্ভব। ব্যাক্টেরিয়া জনিত ইনফেকশনের কারনে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হতে পারে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, এপস্টিন-বার ভাইরাস, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, ক্যাপোসি সারকোমা হার্পিস ভাইরাসের জন্য ক্যান্সার হতে পারে। এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের ইনফেকশনের জন্য দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হয়ে চিকিত্সা গ্রহণ করতে হবে এবং নিয়মিত ফলো আপে থাকতে হবে।

৪. অতি বেগুনি (আল্ট্রা ভায়োলেট) রশ্মি থেকে দূরে থাকা। এই রশ্মির কারণে তা ত্বকের কোষের নিউক্লিয়াসে পরিবর্তন ঘটিয়ে ত্বকে ক্যান্সার তথা স্কিন ক্যান্সার করে থাকে। অবশ্য এই ক্যান্সার আমাদের তুলনায় ককেশিয়ান তথা সাদা চামড়ার লোকদের ভেতর বেশি দেখা যায়। তার পরও সূর্যের আলোর প্রখরতা বেশি হলে সরাসরি সেই আলোতে না থাকাটাই উত্তম।

৫. পরিমিত এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ: আমাদের খাদ্যতালিকার ভেতর অনেক খাবারই অ্যান্টি ক্যান্সারাস উপাদান বহন করে (যেমন টমেটো), তাই পরিমিত এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব।


6,,ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পাদনা
গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত কিছু ব্যাপার মেনে চললে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকখানি কমানো যায়। যেমন:
ব্যায়াম এবং ক্যান্সার সম্পাদনা
প্রত্যেকদিন নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করা যেমন-দৌড়ানো, সাইকেল চালনো, নাচ করা, হাঁটা।

খাদ্যভ্যাস ও ক্যান্সার সম্পাদনা
ধূমপান বা মদ্যপান ছেড়ে দেয়া বা পরিমাণ কমিয়ে আনা। পান-সুপারি জর্দা, তামাকপাতা খাওয়া বন্ধ করা। চর্বিজাতীয় পদার্থ কম খাওয়া। সম্ভব হলে মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়া বা কমিয়ে দেয়া। প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফলমূল এবঙ আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া।



তথ্য সুত্র https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ