শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

লেবু চাষের পদ্ধতি ,, 

 

লেবুর পুষ্টিগুণ

লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি´ রয়েছে। এছাড়াও লেবুর রস মধুর সাথে অথবা লবণের সাথে মিশিয়ে পান করলে ঠান্ডা ও সর্দি কাশি সারে।

লেবুর জাত

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের লেবুর জাত রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু উচ্চফলনশীল লেবুর জাত হচ্ছে, বারি লেবু-১, বারি লেবু-২, বারি লেবু-৩, বাউ কাগজী লেবু-১, বাউ লেবু-২ ইত্যাদি। এ সকল জাতের লেবু গাছ থেকে বেশি ফল পাওয়া যায় জুলাই-আগষ্ট মাসে।

লেবুর চাষের উপযোগী পরিবেশ ও মাটি

মার্চ অক্টোবর মাসে লেবুর চারা রোপণ করতে হবে। প্রায় সব ধরণের মাটিতে লেবুর চাষ করা যায়। কিন্তু অম্ল যুক্ত দো-আঁশ মাটি বেশি উযোগী। এ মাটিতে লেবু উৎপাদন ভাল হয়।

লেবুর চারা উৎপাদন

লেবুর চারা বীজ হতে উৎপন্ন হয়। এছাড়াও কলম থেকে চারা উৎপাদন করেও চাষাবাদ করা যায়।

লেবুর চারা রোপণ পদ্ধতি

১. গুটি কলম ও কাটিং তৈরি করে মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত লেবুর চারা রোপণ করা হয়।

 ২. চারা রোপণের সময় একটা চারা হতে আর একটা চারার দূরত্ব কম পক্ষে ৫ মিটার হতে হবে।

৩. ৮-১০ মাসের চারা রোপণ করলে ভাল হয়।

লেবুর চাষে সার প্রয়োগ

ভালো ফলন পেতে হলে জৈব  সারের বিকল্প নেই বললেই চলে। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরণ অনুযায়ী সার দেওয়া উচিত। জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকে।এছাড়া ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেবুর সেচ

শুকনা মৌসুমে ২-৩ বার সেচ দিতে হবে। এবং বর্ষার সময় গাছের গোড়ায় পানি জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

লেবুর রোগবালাই

১. প্রধান প্রধান শেকড়ের মধ্যে লেবুর পোকা ও ফলমাছি কাঁচা ফল থেকে রস শুষে নেয়।

২. ফলমাছি ফলের ভেতরের অংশ ক্ষতি করে।

লেবুর প্রতিকার

এসব পোকা দমনে বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক পাওয়া যায়। এতে যদি পোকা দমন না হয়  তাহলে স্থানীয়  কৃষি কর্মকর্তার সাথে বা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।

লেবুর চাষের সময় পরিচর্যা

১. একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব ২০-২৫ ইঞ্চি হতে হবে।

২. শক্ত মাটি গাছের চারদিকে সরিয়ে দিতে হবে।

৩. অতিরিক্ত এবং শুষ্ক ডাল ছাঁটাই করতে হবে।

৪. নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।

লেবুর সংগ্রহ

একটা পূর্ণ বয়স্ক লেবু গাছ থেকে বছরে কম পক্ষে ২০০-৪০০টি লেবু পাওয়া যেতে পারে। লেবু পুষ্ট হলে লেবু গায়ে তেলতেলে ভাব দেখা দেয়। ফল কিছুটা হালকা হলুদ রঙ ধারণ করলে ভাদ্র মাসের শুরু থেকে আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
RushaIslam

Call

আমার মতে লেবুর জন্য অতোটা তীব্র রোদের প্রয়োজন নেই।তবে উপরের দিকে খোলামেলা জায়গা হলে ভালো হয়। বারান্দায়ও লেবু গাছ লাগানো যায়।বেশি ছায়াতে গাছ থাকলে লেবু গাছে রোগে বেশি আক্রান্ত করে এবং তুলনামুলক ফলনও কম হবে।সারা দিনে ৫/৬ ঘন্টা ভালো রোদ পায় এবং উপরের দিক খোলা মেলা এমন জায়গা লেবু চারা লাগানোর জন্য উত্তম।ছাদে বা বারান্দার লাগাতে চাইলে বড়ো হাফ ড্রামই উত্তম, না হলে অন্তত ব্লিচিং ড্রামের তলানিতে ৪/৫ টা বড়ো ছিদ্র করে, তাতে লেবু চারা লাগানো উচিৎ।রোপন পদ্ধতিঃ ------------------- এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে অক্টোবর পর্যন্ত লেবু গাছ লাগানো যায়।তবে আমার মতে মে-জুন মাসই লেবু চারা লাগানোর জন্য উত্তম।২*২*২ ফুট গর্তা করে সেই মাটির সাথে বেশি করে পচা গোবড়,৪/৫ মুঠো টিএসপি মিশিয়ে সপ্তাহ তিনেক পরে চারা লাগিয়ে দিন।একান্ত ইচ্ছে হলে পটাশএক মুঠো বা ইউরিয়া এক মুঠো সাথে দিতে পারেন।সে ক্ষেত্রে অন্তত মাস দেড়েক পরে চারা লাগানো উচিৎ। ছাদে বা বাড়ান্দায় লাগাতে হলে বড়ো হাফ ড্রামের জন্য তিন ভাগের দু ভাগ মাটির সাথে একভাগ কম্পোষ্টের সাথে ৪/৫ মুঠো টিএসপি মিশিয়ে সপ্তাহ তিনেক পরে চারা লাগিয়ে দিন।একান্ত ইচ্ছে হলে পটাশএক মুঠো বা ইউরিয়া এক মুঠো সাথে দিতে পারেন।সে ক্ষেত্রে অন্তত মাস দেড়েক পরে চারা লাগানো উচিৎ।চারা লাগানোর দু দিন আগে মাটি উলট পালট করে গর্তা বা ড্রামে ভারী সেচ দিন। মাটি ঝুরঝুরে হলে শেষ বিকেলে চারা লাগিয়ে হালকা সেচ দিন।অতিরিক্ত সেচের দরকার নাই।তবে গাছের গোড়ায়ে যেনো জল জমতে না পারে সেজন্য গোড়ার মাটি ভূমি থেকে একটু উঁচু করে দিতে হবে।৪/৫ মাস পরে নতুন পাতা গাজালে বুঝতে হবে নতুন শিকড় চলে এসেছে।তখন দুই লিটার মগের দুই মগ কম্পোষ্টের সাথে দু মুঠো পটাশ এক মুঠো ইউরিয়া,দেড় মুঠো টিএসপি মিশিয়ে সপ্তাহ দুয়েক পরে গাছের গোড়া থেকে কিছুটা দুরে মাটি আগলা করে, আগলা করা মাটির সাথে মিশ্রিত সার গুলি মিশিয়ে প্রয়োগ করে মাঝারি সেচ দিন।তবে সেই সময়টাতে শীত চলে আসলে ইউরিয়া প্রয়োগ থেকে বিরত থাকুন।বছরে দুবার না হলেও অন্তত এক বার সুষম সার প্রয়োগ করা উচিৎ।না হরে লেবু গাছের রোগ বৃদ্ধি পাবে। শীতের মাঝামাঝিতে দুই লিটার মগের দুই মগ কমপোষ্টের সাথে গাছের আকার ও বয়স ভেদে পরিমিত পটাশ সার মিশিয়ে সপ্তাহ খানেক পরে গাছের গোড়া থেকে একটু দুরে মাটি আগলা করে, আগলা করা সাটির সাথে মিশ্রিত সার প্রয়োগ করুন। প্রতি ২/৩ বছর পরপর টব বা ড্রামের ফলজ গাছে সার প্রয়োগের ৫-৬ দিন আগে গুরু চুন প্রয়োগ করা উত্তম।এতে গাছের পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহন করতে সুবিধা হয়।গাছে দুএকটা ফুল চলে আসলে প্রতি লাটার জলে ছয় মিলি লিটোসেন মিশিয়ে শেষ বিকেলে পুরু গাছে অতি অল্প পরিমানে কুয়াশার মতো স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার পর নতুন করে ফুল আসলে প্রচুর সেচ দিতে হবে,কিন্তু গাছের গোড়ায় জল জমতে দেয়া যাবে না।সেক্ষেত্রে ৫/২ লিটারের তেলের কন্টেইনারে সূক্ষ্ম সুচ দিয়ে একটি ছোট ছিদ্র করে গাছের গোড়ায় দিনে দু তিন বার সেচ দেয়া যেতে পারে।তবে কোনো গাছেই দুপুর বেলা তীব্র রোদে সেচ দেয়া উচিৎ নয়। ফলের গুটি মার্বেলের মতো হতো দুই মগ কম্পোষ্টের সাথে সুধু টিএসপি মিশিয়ে সাত দিন পর প্রয়োগ করা ভালো।।তবে এক্ষেত্রে কেনো ভাবেই ইউরিয়া বা পটাশ সার প্রয়োগ উচিৎ নয়।রোগ বালাইঃ ---------------- লেবু গাছ প্রচুর রোগে আক্রান্ত হয়।এজন্য গাছ রোদে রাখা জরুরী এবং বর্ষার শুরুতে এবং বর্ষা শেষে মোট দুই বার সুষম সার প্রয়োগ করা উচিৎ।পাশাপাশি যথা সময়ে পটাশ সারের প্রয়োগও গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।গাছের কচি পাতা এক ধরনের লম্বা এবং নরম পোকায় খেয়ে ফেলে,এক্ষেত্রে প্রতি লিটার জলে এক মিলি ক্লোরোপাইরিফস ২০ ইসি মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।লেবুর খোশা ফেটে গেলে অটোক্রপের সলুবর বোরন কম্পোষ্টের সাথে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে এবং একই সাথে এক লিটার জলে চা গ্রাম হারে মিশিয়ে সাত দিন পরপর মোট ২/৩ বার শেষ বিকেলে প্রয়োগ করতে হবে।লেবুর চামড়া অমশৃণ হয়ে উঁচু নিচু হয়ে গেলে, প্রতি লিটার জলে এক গ্রাম হারে ডায়থেন এম ৪৫ প্রতি সাত দিন পরপর মোট তিন বার শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।গাছের ডাল শুকিয়ে মারা গেলে, শুকিয়ে যাওয়া ডাল থেকেও হাফ ইঞ্চি নিচে কাচা ডাল সহ কেটে দিয়ে, কাটা অংশে ডায়থেন এম ৪৫ অল্প জল দিয়ে পেষ্ট বানিয়ে লাগাতে হবে। এই রোগটাকে ডাই ব্যাক বলা হয়।গাছ বড়ো হলে এবং এর আক্রমন তীব্র হলে প্রতি লিটার জলে ৫/৬ গ্রাম হারে ডায়থেন এম৪৫ মিশিয়ে প্রতি সাত দিন পরপর মোট ২/৩ বার স্প্রে করা উচিৎ।এজন্য প্রতি বছর ফলের প্রধান মৌশুম শেষ হবার পর চিকন ও মরা ডাল ছাটাই করতে হয়।ছাটাইয়ের পর পর ই ডায়থেন এম৪৫ স্প্রে করা জরুরী।পাতায় ছোপ ছোপ বাদামী বর্ণ হলে আক্রান্ত গাছের ফলের বোটাতে আক্রান্ত হয়ে যায়।এবংফল ঝরে যায়।এক্ষেত্রেও প্রতি লিটার জলে এক গ্রাম হারে ডায়থেন এম ৪৫ মিশিয়ে শেষ বিকেলে ৭ দিন পরপর মোট ২বার স্প্রে করতে হবে।গাছে ফল থাকা অবস্থায় মাকড়ের আক্রমন হলে প্রতি লিটার জলে দুই গ্রাম হারে ম্যাক সালফার শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।মিলিবাগের আক্রমন হলে প্রতি লিটার জলে এক চামচ গুরো সাবান গুলে শেষ বিকেলে তীব্র বেগে স্প্রে করতে হবে অথবা প্রতি লিটার জলে এক গ্রাম হারে একতারা নামক কিটনাশক মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।গাছে ফল থাকা অবস্থায় একতারা ব্যবহার করলে অন্তত তিন মাসের আগে সে ফল খাওয়া উচিৎ নয়।সুরঙ্গ পোকা ফলের উপর বসে রস চুষে খায়,এতে ফল ঝরে যায়।এক্ষেত্রে এক লিটার জলে এক মিলি হারে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।লেবু পাতার নিচে পাউডারের মতো ছাতরা পোকা সাদা সাদা স্তুপ করে পাতার রস চুসে খায়।এক্ষেত্রে প্রতি লিটার জলে এক মিলি হারে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।আমার গাছে মুলত এগুলিই বেশি আক্রমন করে,আমি এ ব্যবস্থাই নেই।এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগ লেবু গাছে দেখা যায়।রোগ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিলে ব্যপক ফলন আশা করা যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ