শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Jobedali

Call

চুয়াড় ছিল বাংলার মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল এর প্রধান আদিবাসী সম্প্রদায়। চাষবাস বা পশু শিকারের সঙ্গে তারা জড়িত থাকলেও যুদ্ধ-বিগ্রহ ছিল তাদের প্রধান পেশা। সাধারণত চুয়াড় সম্প্রদায়ের মানুষেরা মেদনীপুর, বাঁকুড়া ও ধলভৃৃৃৃমেরর স্থানীয় জমিদারদের অধীনে রক্ষী বা পাইকের কাজ করতো।

পাইকের কাজ করার বিনিময়ে তারা বেতনের পরিবর্তে যে জমি ভোগ করত, তা পাইকান জমি নামে পরিচিত ছিল। মুঘল যুদ্ধের শেষ দিকে এই জমিদাররা প্রায় অর্ধস্বাধীন হয়ে যায়।

বাংলায় কোম্পানির শাসন স্থাপিত হলে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ এই অঞ্চলের জমিদারদের উপর অত্যন্ত চড়াহারে ভূমিরাজস্ব ধার্য করলে, তা দেওয়া তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে।

চুয়াড় পাইকরা আশঙ্কা করে যে, জমিদারদের জমিদারি সরকার বাজেয়াপ্ত করলে তাদের পাইকান জমিগুলিও হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তাই এই অঞ্চলে জমিদাররা যখন ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, তখন তাদের পাইক চুয়াড়রা জমিদারদের পক্ষে সমগ্র জঙ্গলমহল জুড়ে বিদ্রোহ শুরু করে। প্রায় তিরিশ বছর ধরে(1769-1799 খ্রিস্টাব্দে) এই বিদ্রোহ চলেছিল।

1769 খ্রিস্টাব্দে ঘাটশিলা বা ধলভৃৃৃৃমেরর রাজা জগন্নাথ সিংহ প্রথম ধল বিদ্রোহ করেন। চুয়াড়রা সক্রিয়ভাবে এই বিদ্রোহের অংশ নেয়, কিন্তু শেষপর্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেও চুয়াড়রা ইংরেজ বাহিনীর কাছে পরাজিত স্বীকার করতে বাধ্য হয়। অবশ্য কোম্পানি জগন্নাথের ভ্রাতুষ্পুত্রকে জমিদারি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।  

1771 খ্রিস্টাব্দে ধাদকার শ্যামগঞ্জ এর নেতৃত্বে চুয়াড়রা পুনরায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে ব্যর্থ হয়। 1798-99 খ্রিস্টাব্দে দুর্বল সিংহের নেতৃত্বে চুয়াড় বিদ্রোহ সবচেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। কিন্তু কোম্পানির সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচার ও হত্যা করে এই বিদ্রোহ ব্যর্থ বিদ্রোহ দমন করে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ