সমাজ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্যঃ
সমাজ হচ্ছে মানুষের সৃষ্ট কতকগুলো রীতিনীতি দ্বারা গড়ে উঠা একটি ব্যবস্থা – যার মাধ্যমে সমাজস্থ মানুষ পারস্পরিক প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। সমাজ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করা হল:
১। সমাজের বৈশিষ্ট্য হলো একই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করা, যেমন- ছাত্র সমাজের উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানার্জন। পক্ষান্তরে সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ বিভিন্ন পেশা ও জীবন যাত্রার অধিকারী, যেমন- একটি গ্রামে বিভিন্ন পেশা ও জীবন যাত্রার লোক থাকতে পারে। তবু তারা একটি সম্প্রদায়।
২। সমাজস্থ মানুষ বিভিন্ন আদর্শে বিশ্বাসী হতে পারে। যেমন – শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে কেউ ধনতন্ত্রে বিশ্বাসী হতে পারে, আবার কেউ সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। পক্ষান্তরে, সম্প্রদায়গত জীবন ধারনের আদর্শ ও রীতিনীতি এক ও অভিন্ন।
৩। ‘সমাজ’ এর জন্য জনসমষ্টির একটি নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডের প্রয়োজন নাই। যেমন- ছাত্র সমাজ। অন্যদিকে সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে জনসমষ্টিকে অবশ্যই নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডের বাসিন্দা হতে হবে। যেমন- একটি গ্রামীণ সম্প্রদায়, শহুরে সম্প্রদায়, উপজাতীয় সম্প্রদায়, পাহাড়ী সম্প্রদায় ইত্যাদি।
৪। সমাজের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্পর্ক অপরিহার্য। সমাজে প্রত্যেকেই একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, সম্প্রদায় হচ্ছে জীবন যাপনের একটি বৃত্ত বিশেষ। এখানে সকল সদস্যকে অভিন্ন রীতিনীতি মেনে চলতে হয়। এখানে সুষ্ঠু জীবন যাত্রার সব কিছুই সমষ্টির উপর নির্ভরশীল।
৫। একটি সমাজে সব ধরনের মানুষ বসবাস করতে পারে। অন্যদিকে একটি সম্প্রদায়ে সব ধরনের মানুষ সাধারণত বাস করতে পারে না। কারণ সমাজের চেয়ে সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরে কঠোর রীতিনীতি ও প্রথা পদ্ধতি বিদ্যমান থাকে।
৬। সমাজ হচ্ছে মানুষের সৃষ্ট কতকগুলো রীতিনীতি দ্বারা গড়ে উঠা একটি ব্যবস্থা – যার মাধ্যমে সমাজস্থ মানুষ পারস্পরিক প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। অন্যদিকে সম্প্রদায় হচ্ছে অভিন্ন রীতিনীতি সমন্বিত একটি জনসমষ্টি, যারা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ হতে পারে।
সমাজ বলতে এমন একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝায়, যাদের মধ্যে পারস্পরিক ভাবের আদান-প্রদান হয়েছে এবং যাদের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে। একই সাথে অধিক সময় ধরে তাদের এ সম্পর্ক টিকে থাকে। অন্যদিকে সম্প্রদায় বলতে এমন একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয়, যারা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বাস করে এবং তাদের মধ্যে সাম্প্রদায়গত মানসিকতা রয়েছে।