একজন বোনের প্রতি তার ভাইয়ের কি কি দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকা আবশ্যক???
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Call

বোনদের প্রতি ভাইয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ সামাজিক জীব। সমাজ ওমানুষ সভ্যতার প্রাথমিক ইউনিট হলো পরিবার। পরিবারে বাস করেন মা-বাবা, ছেলেমেয়ে, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রী প্রভৃতি রক্তসম্পর্কীয় ও বৈবাহিক সম্পর্কীয় আপনজন। এদের পরস্পরের প্রতি পরস্পরের রয়েছে বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য। রক্তসম্পর্কীয় আপনজনের মধ্যে ভাইবোন হলো সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ। বোনের লালন-পালন, ভরণ-পোষণ ও সেবা-যত্নের গুরুত্ব বাবার অপারগতা ও অবর্তমানে বোনের লালন-পালন, উপযুক্ত পাত্র দেখে বিয়ে দেওয়া ভাইয়ের দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেছেন, 'যার তিনটি মেয়ে রয়েছে অথবা তিনজন বোন রয়েছে কিংবা দুই বোন বা দুই মেয়ে রয়েছে, অতঃপর সে তাদের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থা করে, উত্তম পাত্র দেখে বিয়ে দেয় এবং তাদের সঙ্গে সর্বোত্তম ব্যবহার করে। তার জন্য জান্নাত অবধারিত'- (তিরমিজি, আবু দাউদ)। অন্য হাদিসে এসেছে, 'যে ব্যক্তি এতে আনন্দিত হয় যে তার রিজিক প্রশস্ত হবে ও আয়ু বৃদ্ধি পাবে, যে যেন আত্মীয়তা বজায় রাখে'- (বোখারি, মুসলিম)। -বোনের সন্তুষ্টি ছাড়া তাকে বিয়ে বা তালাকে বাধ্য করা যাবে নাঃ অনেক ভাই স্বামীর অব্যাহত অত্যাচারে অতিষ্ঠ বোনকে ভরণ-পোষণের ভয়ে জোর করে স্বামীর বাড়ি পৌঁছে দেয়। কোনো কোনো পরিবারে মেয়েদের দ্বিতীয় বিয়ে থেকে বিরত রাখে। অনেকে তালাকের পরও বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। ইসলামের সীমার মধ্যে হলে এসব বিষয়ে বোনের ওপর বলপ্রয়োগের অধিকার ভাইকে দেওয়া হয়নি। প্রায়ই দেখা যায়, তালাকপ্রাপ্তা বোনেরা ভাইয়ের সংসারে অবজ্ঞা ও নিগ্রহের শিকার হয়, তাদের ইমান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। বলা হয়েছে, '(তালাক ও ইদ্দতের পর) পূর্বস্বামীদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী বিয়ে করতে তাদের বাধা দান কোরো না। এ উপদেশ তাকেই দেওয়া হচ্ছে, যে আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে'- (সুরা নিসা : ২৩২) -বোনের জন্য প্রয়োজনে নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিতে হবেঃ হজরত জাবের (রা.)-এর একটি ঘটনা খুবই স্মরণীয়। রাসুল (সা.) তাকে বলেছেন, 'তুমি কুমারী নারী বিয়ে না করে তালাকপ্রাপ্তা নারীকে বিয়ে করেছ কেন?' তিনি উত্তর দিলেন, 'আমার বাবা মারা গেছেন। আমার ছোট ছোট কয়েকজন বোন রয়েছে, তাদের লালন-পালন ও শিক্ষা-দীক্ষার জন্যই আমি বয়স্ক নারী বিয়ে করেছি।' রাসুল (সা.) বললেন, 'আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন'- (বোখারি, মুসলিম)। এতে বোঝা যায়, বোনের জন্য প্রয়োজনে নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিতে হবে। -বোনের উত্তরাধিকার সম্পত্তি গ্রাস করা যাবে নাঃ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'আত্মীয়স্বজনকে তার অধিকার দিয়ে দাও'- (সুরা বনি ইসরাইল : ২৬) বড়ই আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে ভাইয়েরা ছলেবলে-কৌশলে বোনদের প্রাপ্য থেকে তাদের বঞ্চিত করে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে গেছে, ভাইয়ের কাছ থেকে প্রাপ্য নেওয়াটাকে সমাজের চোখে 'অপরাধ' হিসেবে দেখা হয়। অথচ রাসুল (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি কারো উত্তরাধিকার সম্পত্তি গ্রাস করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন'- (মেশকাত শরিফ)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ