শরী‘আতের দৃষ্টিতে মহিলাদের চুড়ি পরা জায়িয আছে; জরুরী নয়। আর প্রশ্নোক্ত কথা “স্ত্রী যদি হাতে চুড়ি না পরে, তাহলে তার স্বামীর হায়াত কমে যায়; চুড়ি বহীন হাতে কাউকে পানি পান করতে দেয়া ভালো নয়, এতে অনেক সমস্যা দেখা দেয়”। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। এসব ভুল ধারণা। তবে পুরুষদের সাথে পার্থক্য বিধানের জন্য মহিলাদের অলংকারাদি ব্যবহার করা চাই। আজকাল এক শ্রেণীর আধুনিক মহিলা বিজাতীয় ফ্যাশনের অনুকরণ করতে গিয়ে হাত, নাক, কান ইত্যাদিতে কোনো অলংকার পরিধান করে না। এটা ইসলাম সম্মত নয়।- ই’লাউস্ সুনান: ১৭/২৯৩, মিশকাত শরীফ: ২/৩৮০, আহসানুল ফাতাওয়া: ৮/৭২।
আসলে এগুলো ভ্রান্ত কথা, যার উত্তর একজন নিচে দিয়েছে । সাধারণত বাঙালি ও বিবাহিত মুসলিমরা বিয়ের পরে চুরি ও নাকফুল বা আসল স্বর্নালংকার পরিধান করে থাকে । আর বিবাহের আগে বা অবিবাহিত মেয়েরা স্বর্নের ডাল(ডাল আকৃতির স্বর্ণ) বা কাঠি জাতীয় বস্তু নাকে লাগিয়ে রাখে । যেমনটা হিন্দুরা বিবাহের পর সিঁদুর পড়িয়া থাকে । যখন কোন মানুষ কোন মহিলাকে নাকে নাকফুল ও হাতে হাতে চুরি ব্যাবহার করতে দেখে তখন মানুষ বুঝতে পারে যে এই মহিলাটি বিবাহিত, এ থেকে অনেক মানুষের কু দৃষ্টি থেকে বাঁচা যায় । তবে মহিলারা নিজের বিবাহের কথা গোপন করতে চাই বা প্রকাশ করতে পছন্দ করেনা । কারন বিবাহের কথা প্রকাশ করলে কেউ তাকে দেখবেনা তাই তারা নাক ফুল ও চুড়ি খুলে ফেলে দিতে চাই বা হাতে রাখতে চাইনা । এতে পরপুরুষদের কুদৃষ্টি বেড়ে যায় তাই হাতে চুড়ি ও নাকে নাকফুল পড়া জরুরী বলা হয়ে থাকে ।
ফিক্বাহ শাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য কিতাবাদি অধ্যয়নে একথাই প্রমাণিত হয় যে, মেয়েরা কান ও নাক ছিদ্র করে গহনা পরতে পারবে। কেননা কানে গহনা পরার রীতি নবী করীম (সা.) জীবিত থাকা অবস্থায়ও ছিল, তথাপি তিনি এটি নিষেধ করেননি। প্রশ্নে উল্লিখিত ধারণাটি ভ্রান্ত, কুসংস্কার ও আল্লাহ তায়ালার কালামে পাকের বিপরীত। কারণ আল্লাহ তায়ালা সমস্ত মানুষের হায়াত নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। সে সময়ের পূর্বে বা পরে কারো মৃত্যু হবে না। তাই ঐ সমস্ত ভ্রান্ত ধারণা পরিত্যাগ করা অপরিহার্য। [আদ-দুররুল মুখতার মাআ শামী- ৯/৬০২, ফাতওয়া হিন্দিয়া- ৫/৩৫৭,আল-বাহরুর রায়েক- ৯/৩৭৫, আহসানুল ফাতওয়া- ৮/১৯২, ফাতওয়া মাহমুদিয়া- ২৮/৩৫]