শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

কয়েকটি সহজ কৌশলে আপনিও বাড়িয়ে নিতে পারেন মেমোরি পাওয়ার। ১। ব্যায়াম করুন আর শরীরকে রাখুন সচল: ব্যায়াম শুধু আপনার শরীরকেই সচল করে না, এটি আপনার মস্তিষ্ককেও সচল রাখে। স্থূলতা এবং অতিরিক্ত ওজন আপনার ব্রেইনের জন্যও ক্ষতিকর। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে কিংবা শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো সচল না থাকলে রক্তবাহী নালীগুলো চর্বি জমে। ফলে স্বাভাবিক রক্তচলাচল ব্যহত হয়। মস্তিষ্কে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবারাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মস্তিষ্কের কোষগুলও। মানসিক চাপ কমিয়ে আনুন, বিষন্নতা দূর করুন: রাগ, ক্ষোভ বা উদ্বেগ ব্রেনকে কিছু সময়ের জন্য স্থবির করে দেয়, যা আপনার স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। মানসিক চাপের মধ্যে বিষন্নতা সবচেয়ে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। আপনার মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতা ক্ষমিয়ে ফেলে এবং রক্তে করটিসলের লেভেল বাড়িয়ে দেয়। করটিসেলের লেভেল বেড়ে গেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যায়, বিশেষ করে হিপ্পোক্যাম্পাসের। যেখানে শর্টটার্ম মেমোরি সংরক্ষিত থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চত করুন: পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ভাল ঘুম আপনার মস্তিষ্ককে অধিক কার্যকরী করে তোলে। ঘুমের সময় সাম্প্রতিক সময়ের তথ্যগুলোকে মস্তিষ্কসংরক্ষণ করতে থাকে। আর ঘুমকে বলা হয় মেমোরি চার্জার। ঘুমের সময় আপনার মেমোরি পরবর্তী স্মৃতি ধরার জন্য প্রস্তুত হয়। বিষয়গুলো লিখে রাখুন: যে বিষয়গুলো স্মৃতিতে রাখতে চান তা লিখে ফেলার অভ্যাস করুন। একবার লেখা নাকি বিশবার পড়ার সমান।লেখার সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তপ্রবাহের পরিমান বাড়ে। গান শুনুন: গবেষকরা দেখিয়েছেন কিছু সংগীত স্মৃতিশক্তি বাড়াতে উপকারি। কোন ঘটনার সময় আপনি যদি কোন গান শুনেন তবে পুনরায় সেই গান শোনার সময় সেই ঘটনার আবহের স্মৃতি আপনার মস্তিষ্কে জেগে উঠবে। পুষ্টিকর খাবার খান: মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে ভিটামিন যুক্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তাজা ফলমূল, গাঢ় সবুজ শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, গমের রুটি প্রভৃতি প্রোটিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। পরিমান মতো বিশুদ্ধ পানি পান করুন। প্রচুর চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন। বিশেষ করে বাসি-দূষিত খাবার খাবেন না।।ধূমপান ও মাদক সেবন থেকে বিরত থাকুন। এগুলো মস্তিষ্কের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর। অন্যকে শেখান: নিজে যা শিখতে চাচ্ছেন। তা একবার শিখে নিয়ে অন্যকে শেখান।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আমরা কত কিছুই না করি! ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন- আরো কত কী! এগুলো মোটেও পর্যাপ্ত নয়। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে এমন কিছু খাবার যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়লে বৃদ্ধি পাবে স্মৃতিশক্তিও। আপনার বয়স যত বাড়বে বিভিন্ন জিনিস মনে রাখার ক্ষমতাও আপনার তত কমতে থাকবে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন জাম, লিচু, স্ট্রবেরি, কালোজাম বা আঙ্গুরের মত ফল। ফলগুলোতে রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের কোষে অক্সিডাইস রাখে এবং ক্রমাগত ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ব্লু বেরিকে ব্রেনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর খাবার বলে মনে করা হয়, কেননা তা অ্যালঝেইমার রোগ প্রতিরোধে সহযোগিতা করে এবং শেখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। মস্তিষ্কে থাকা ফ্যাটি এসিডের ৪০% হচ্ছে ডি এইচ এ, যা সামুদ্রিক মাছের তেলে পাওয়া যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হিসেবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষের মধ্যে সংবেদন আদান-প্রদান বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘদিন কফি পান করেন এমন ১৪০০ লোকের ওপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে তিন থেকে পাঁচ কাপ কফি পান করেন, তাঁদের স্মৃতিভ্রংশের রোগ অনেকটাই কম হয়। এদের তুলনায় যারা দিনে দুই কাপ কফি খান তাদের ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সে অ্যালঝেইমার রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি। ধারণা করা হয়, কফিতে থাকা ক্যাফেইন ও এন্টি-অক্সিডেন্ট ব্রেনের কোষগুলোকে সুরক্ষিত করে। ডার্ক চকলেট, যাতে অন্তত ৭০% কোকো থাকে, মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে গবেষণায় প্রমাণিত। এতে ফ্ল্যাভোনয়েড নামে এক ধরণের এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা মস্তিষ্কের কোষকে সজীব ও কর্মক্ষম রাখে। দুধ থেকে তৈরি দই খেলেও ঘোল অনেকেই খান না। ঘোলে থাকে ভিটামিন বি-১২। এই ভিটামিনের অভাবে স্মৃতিশক্তি ভয়াবহভাবে হ্রাস পায়। ঘোলে থাকা ভিটামিন বি-১২ বয়সজনিত স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধ করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় মস্তিষ্কের সংকোচন কমিয়ে দেয়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন সবুজ শাক-সবজি। এদের মধ্যে থাকা প্রোটেক্টিভ এন্টি-অক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে আরো অধিক কার্যক্ষম করে তোলে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

বুদ্ধি কী - এ নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত! শরীরের কোনো অঙ্গের মতো নির্দিষ্ট সীমারেখায় বুদ্ধির অবস্থান নয় বলে বুদ্ধির সঠিক সংজ্ঞা নিয়ে আজও এত মত পার্থক্য। সাধারণত ফ্রন্টাল লোব এবং টেম্পোরাল লোব মস্তিষ্কের এই দুটি অংশ মানুষের বুদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিজ্ঞানী ওয়েশলারের মতে বুদ্ধি হলো মানুষের এমন এক মানসিক অবস্থা যেখানে সে পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে দক্ষভাবে মানিয়ে নিতে, বাস্তব চিন্তা করতে এবং পরিবেশ অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবহার করতে পারে। তবে এ কথা সবসময় মনে রাখা দরকার যে বুদ্ধি কখনো বংশ পরম্পরায় প্রবাহিত হয় না। বুদ্ধির বিকাশ পুরোপুরি পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল। তবে কিছু শারীরিক বিষয়ও বুদ্ধির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যেমন অক্সিজেন সংবহন, পুষ্টি গ্রহণের পরিমাণ ইত্যাদি। আর বুদ্ধি কম বা বেশি হওয়াও এর ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

ব্যায়ামে বাড়ে বুদ্ধি

অনেকের ধারণা যাঁরা খেলাধুলা বা ব্যায়াম করেন তাঁরা একটু মোটা বুদ্ধির মানুষ হন, আর যাঁরা দিনরাত বইয়ে মুখ গুঁজে বসে থাকেন তাঁরাই উচ্চ মাত্রার বুদ্ধি রাখেন। কিন্তু কথাটি আদৌ সত্যি নয়। ব্যায়াম বা খেলাধুলায় শরীরের ক্ষিপ্রতা বাড়ে, আর সে নির্দেশ দেয় কিন্তু মস্তিষ্কই। গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্ককে সুস্থ সবল ও কর্মক্ষম রাখতে প্রতি মিনিটে প্রতি একশো গ্রাম ব্রেন ট্যিসুতে পঞ্চান্ন মিলিলিটার রক্ত, পাঁচ দশমিক পাঁচ মিলিগ্রাম গ্লুকো এবং তিন দশমিক পাঁচ মিলিলিটার অক্সিজেন সংবহন প্রয়োজন। শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম মস্তিষ্কের এই চাহিদা পূরণ করতে পারে। সুতরাং শরীর ও মন ভালো রাখতে এবং পরোক্ষভাবে বুদ্ধির সঠিক বিকাশে ব্যায়াম করা উচিত। প্রতিদিন ভোরবেলায় খোলা হাওয়ায় রাস্তা, পার্ক বা মাঠে আধঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করুন। এছাড়া যোগব্যায়াম বা মেডিটেশনও করতে পারেন।

বুদ্ধি বাড়াতে খাদ্য

মেধা বাড়ানোর জন্য বাজারে বিভিন্ন রকম টনিক কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু সত্যিই কি টনিক খেলে স্মৃতিশক্তি বা বুদ্ধি বাড়ে? যদিও সমস্ত পৃথিবী জুড়ে এ নিয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে, কিন্তু এখনো তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি। কিছু কিছু স্মৃতিবর্ধক ওষুধ বেরিয়েছে বটে কিন্তু মস্তিষ্কে পৌঁছোবার আগেই তাদের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকটা টাকে চুল গজানোর ওষুধের মতো। তবে সুষম খাবার মস্তিষ্কের পুষ্টিতে একটা বড় ভূমিকা পালন করে।

স্নায়ুতন্ত্রের ৭০ শতাংশ গঠিত পানি দিয়ে আর বাকি ৩০ শতাংশ কঠিন পদার্থ দিয়ে। এই ৩০ শতাংশ তৈরি প্রোটিন, যেমন গ্লোবিউলিন, নিউক্লিও প্রোটিন ইত্যাদি ন্যাচারাল ফ্যাট (ফসফোলিপিড ইত্যাদি), কার্বোহাইড্রেট, সোডিয়াম, ক্যালসিয়ামযুক্ত অজৈব লবণ, ভিটামিন এবং মিনারেল দিয়ে। তাই সঠিক সময়ে সুষম খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকলে অল্প পরিমাণে ঘি বা মাখন, প্রচুর পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, ডিম, মাংস, পনির, ছানা ইত্যাদি সবই খাওয়া প্রয়োজন। সঙ্গে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন। প্রসঙ্গত, গ্রে ম্যাটারের নিউরন গ্লুকোজের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল। রক্তে সব সময় নির্দিষ্ট মাত্রার গ্লুকোজ থাকা জরুরি। এ কারণেই ডায়াবেটিস রোগীদের সাথে গ্লুকোজ নিয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। একই কারণে অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে মাথা ঘোরা শুরু হয়।

তথ্যসূত্র: মস্তিষ্কক্রিয়া ও বুদ্ধি, ডা. তৃষিত রায়

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ