কোন একটি মাজহাব মেনে চলাটা কি জরুরী? মাজহাব মেনে চলার উপকারীতা কি?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
mahfuz08

Call

মাযহাব পালন করা আবশ্যক, এই কথা এই জন্য বলা হয় যে, যেহেতু কুরআন সুন্নাহ এর বিস্তারিত জ্ঞান সম্পর্কে বর্তমানে খুবই নগণ্য সংখ্যক মানুষের রয়েছে। যারাও আছে তারাও অনেক কিছু বিষয়ে বিজ্ঞ নন যেসব বিষয়ে বিজ্ঞ হওয়া অতীব জরুরী। যেমনঃ
# কুরআনে কারীমের কোন আয়াতের হুকুম রহিত হয়ে গেছে?
# কোন আয়াতের হুকুম বহাল আছে?
# কোন আয়াত কোন প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছে?
# কোন আয়াত(কুর’আন-হাদীস উভয়ই) কাদের উদ্দেশ্য করে নাজিল হয়েছে?
# কোন আয়াতাংশের প্রকৃত অর্থ কি?
# আরবী ব্যাকরণের কোন নীতিতে পড়েছে এই বাক্যটি?
# এই আয়াত বা হাদীসে কী কী অলংকারশাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে?

আবার সেই সাথে হাদীস শাস্ত্রে নিম্নোক্ত বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা খুবই জরুরী।
# হুজুর স. কর্তৃক ত্রিশ পারা কোরআনের ব্যাখ্যায় রেখে যাওয়া দশ লক্ষ হাদীসের কয়টি হাদীস তিনি জানে?
# কোন হাদীসেরর হুকুম রহিত হয়ে গেছে হাদীসটি সহীহ হলেও এবং কেন?
# কোন হাদীসের হুকুম বহাল আছে?
# কোনটি সহীহ হাদীস কোনটি দুর্বল হাদীস?
# কোন হাদীস কি কারণে দুর্বল?
# কোনো হাদীস দুর্বল হলে সেটা কোন রাবীর কারণে দুর্বল হয়েছে?
# হাদীসের চেইনে এই দুর্বল রাবীর আসার আগে হাদীসটি কি অবস্থায় ছিল?
# কোন হাদীস কী কারণে শক্তিশালী?

কাজেউ সহজেই বুঝতে পারা যাচ্ছে যে, মাজহাব না মানলে যারা সাধারণ মানুষ, যাদের কোরআন ও সুন্নাহ থেকে চিন্তা গবেষণার মাধ্যমে আহকাম ও বিধান আহরণের যোগ্যতা নেই, তারা কি ভাবে সঠিক নিয়মে ইসলামকে অনুসরণ করেবে?
তাদেরকে ইসলাম সঠিক ভাবে মেনে চলার জন্যই মাজহাব মেনে চলতে হয়।

আর কোন একটি মাযহাবকে মেনে চলা আবশ্যক বলা হয় এই জন্য যে, একাধিক মাযহাব অনুসরণের অনুমোদন থাকলে সবাই নিজের রিপু পূজারী হয়ে যেত। যার যেই বিধান যখন ইচ্ছে পালন করত, যেই বিধান যখন ইচেছ ছেড়ে দিত। আর এর মাধ্যমে মূলত দ্বীন ইসলাম পালন হতনা, বরং নিজের প্রবৃত্তির পূজা হত।

 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
মাযহাব অর্থ কুরআন হাদীসের ব্যাখ্যাগত মত ও পথ। একেকটি আয়াত বা হাদীস থেকে বিধান আহরণের ক্ষেত্রে একাধিক অভিমত বের হয়ে এসেছে। বিধানগত ভিন্ন ভিন্ন এ অভিমতগুলোই এক কালে মাযহাব নামে পরিচিতি পেয়েছে। এটা শতসিদ্ধ কথা, একজন ব্যক্তির জন্য একই সাথে একাধিক মত গ্রহণ করা সম্ভব নয়। কারণ হানাফী মাযহাবে নাভীর নিচে হাত বাধার কথা বলা হয়। অন্য দিকে হাম্বলী মাযহাবে বুকের উপর হাত বাধার কথা বলা হয়। তো নামাজে হাত বাধার ক্ষেত্রে এ দুটি মাযহাব মেনে চলা সম্ভব নয়। তবে বিচ্ছিন্নভাবে একাধিক মাযহাব মেনে চলা সম্ভব। অর্থাৎ এক বিষয়ে এক মাযহাব, অন্য বিষয়ে অন্য মাযহাব অনুসরণ করা। ফিকহের পরিভাষায় এ প্রক্রিয়াকে তালফীক বলা হয়। আর তালফীক করা সংখ্যাগরিষ্ঠ উলামায়ে কেরামের মতে জায়েয নয়। কারণ এক বিধানের ক্ষেত্রে একজনের অভিমত গ্রহণ এবং অন্য বিধানের ক্ষেত্রে অন্যজনের অভিমত গ্রহণ-এভাবে গ্রহণ বর্জনের বিষয়টি মূলত প্রাধান্য জ্ঞানসাপেক্ষ বিষয়। এর জন্য দীনী বিষয়ে সুগভীর পাণ্ডিত্ব ও ব্যুৎপত্তি অর্জনের প্রয়োজন। বর্তমানে এ পর্যায়ের যোগ্যমান ব্যক্তিদের সন্ধান লাভ করা বিষম দুরহ ব্যাপার। আমাদের মত সাধারণ লোকেরা যেহেতু এ পর্যায়ের যোগ্যতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে পারি নি তাই আমাদের জন্য নির্দিষ্ট একটি পথ অনুসরণের মাঝেই দীনী নিরাপত্তা নিহিত রয়েছে। আমাদের মত লোকেরা মত গ্রহণের উন্মুক্ত সুবিধা গ্রহণ করলে দীন চর্চার বিষয়টি সুবিধা চর্চায় রূপান্তরিত হয়ে একটি খেলনা বস্তুতে পরিণত হবে। তাছাড়া যেসব উলামায়ে কেরাম তালফীককে বৈধতা দান করেন তাদের নিকট কেবল ঐসমস্ত ব্যক্তিবর্গই তালফীক করতে পারবেন যারা দীনী ইলমের ব্যাপারে গভীর পাণ্ডিত্ব ও ব্যুৎপত্তির অধিকারী হবেন। সাথে সাথে প্রবৃত্তির চাহিদা থেকে মুক্ত থেকে নিছক আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে সুযোগ সন্ধানী বা সুবিধা গ্রহণের মানসিকতা সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ থেকে একাধিক ব্যাখ্যার মধ্য হতে নিজের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যাটি গ্রহণ করবে। সুতরাং সাধারণ ব্যক্তিদের জন্য একটি মাযহাবকে মেনে চলার মাঝেই সতর্কতা নিহিত রয়েছে। আলফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু / ৯০, উসূলুল ইফতা ২১৩, আদ্দুর ররুল মুখতার /৭৫, কামূসুল ফিকহ/৫৩৪, তাকলীদ কি শরঈ হাইসিয়াত, ৮০
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ