মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় কসরের হুকুম নিয়ে মতানৈক্য দেখা যায়।ইমাম আবু হানিফার রহঃ নিকট কসর করা ওয়াজিব, ইচ্ছাকৃত কসর করা ছেড়ে দিলে নামাজই হবেনা বরং পুনরায় আদায় করতে হবে।তবে ভুল করে এমনটা করলে যদি প্রথম বৈঠক করে তাহলে দুই রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত নফল হবে,আর শেষে সাজদায়ে সাহু করতে হবে। বাকি তিন ইমাম; ইমাম শাফি রহঃ, ইমাম মালেক রহঃ ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ সফরে কসর করার অনুমতি দেন। অর্থাৎ করতে চাইলে করতে পারবে, বরং কসর করাই উত্তম।(রহমাতুল আয়িম্মা ফি ইখতিলাফিল আয়িম্মা পৃঃ৫৩ বিদায়াতুল মুজতাহিদ ১/১৬১) প্রত্যেক ইমাম তাদের নিজস্ব মতানুযায়ী দলীল পেশ করেছেন। হানাফী মাযহাবের দলীল নিম্নরূপ; ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন,আমি মাক্কার কোন একটি পথে ‘আসিম ইবনু ‘উমার-এর সাথে চলছিলাম। এ সময় তিনি আমাদের সাথে করে যুহরের সলাত আদায় করলেন এবং মাত্র দু’ রাক‘আত আদায় করলেন। তারপর তিনি তাঁর কাফিলার মধ্যে ফিরে আসলেন। আমরাও তাঁর সাথে ফিরে আসলাম। তিনি সেখানে বসে পড়লে আমরাও তাঁর সাথে বসে পড়লাম। এ সময় যে স্থানে তিনি সলাত আদায় করেছিলেন সে স্থানে তাঁর দৃষ্টি পড়লে কিছু সংখ্যক লোককে সেখানে দাঁড়ানো দেখতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এরা ওখানে কী করছে? আমি বললাম, তারা সুন্নাত পড়ছে। তিনি এ কথা শুনে বললেনঃ ভাতিজা, আমাদেরকে যদি সুন্নাত আদায় করতে হ’ত তাহলে আমি ফরয সলাত ও পূর্ণ আদায় করতাম। আমি সফরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে থেকে দেখেছি আমৃত্যু তিনি দু’ রাক’আতের অধিক আদায় করেননি। আমি সফরে আবূ বাক্রের সাথে থেকে দেখেছি আল্লাহ তাকে ওফাত দান না করা পর্যন্ত তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। আমি সফরে ‘উমারের সাথে দেখেছি তিনি দু’রাক‘আত সলাতই আদায় করেছেন। মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “আল্লাহর রসূলের জীবনে তোমাদের অনুসরনের উত্তম নমুনা রয়েছে”-(সূরাহ আল আহ্যাব ৩৩ : ২১)সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪৬৪ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস আরো বিস্তারিত দেখা যেতে পারে; ফতোয়ায়ে শামী ২/১২৩ ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া ১১/৫৮০ ফতোয়ায়ে রহিমিয়া ৫/১৩৩