• প্রত্যেক ফরয নামাজের শেষে আমরা যে দোয়াগুলো হাতের আংগুলে গুনে পড়ি সেগুলো কি কি এবং দোয়াগুলো সর্বনিম্ন কয়বার পড়তে হয় এবং সর্বচ্চ কয়বার পড়তে হয়। জানাতে উপকৃত হবো।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সেগুলোর নাম দো'য়া নয়, বরং তাসবীহ, নাম হচ্ছে ফাতিমি তাসবিহ। উক্ত তাসবীহতে, আল-হামদুলিল্লাহ ৩৩ বার ও সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার পড়ে ১০০ পূরাতে হয়। এটিই সর্বাদিক প্রচলিত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ফরজ নামাজ শেষে পড়ার মতো অনেক জিকর রয়েছে। তবে সাধারণত যে জিকরগুলো হাতের আঙ্গুলে গণনা করে পাঠ করে পড়া হয় তা হলো, ৩৩বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩বার আলহামদু লিল্লাহ এবং ৩৪বার আল্লাহু আকবার। এ জিকরগুলোর সর্বোচ্চ কিংবা সর্বনিম্ন কোনো সংখ্যা নেই। হাদীসে নির্দিষ্ট এ সংখ্যাই উল্লিখিত হয়েছে। এ জিকরগুলোকে তাসবীহে ফাতেমী বলা হয়। কারণ ফাতেমা রা. এর সাথে এ জিকরগুলোর বিশেষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা রাযি. সূত্রে বর্ণিত, একদা আলী রাযি. ফাতেমা রাযি. এর কাছে এসে অনুযোগের স্বরে বললেন, বালতি টানার ফলে আমার বুকে ব্যথা করছে। তখন ফাতেমা রাযি.ও অনুযোগ করে বললেন, আটার চাকি ঘুরাতে ঘুরাতে আমার হাত ব্যথা হয়ে গেছে। তখন আলী রাযি. বললেন, তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যাও। তাঁর কাছে যুদ্ধবন্দি এসেছে। হয়তোবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার সেবার জন্য একটি দাস দিবেন। ফাতেমা রাযি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন। এরপর সালাম বিনিময় করে আবার আলী রাযি. এর কাছে ফিরে আসলেন। আলী রাযি. জিজ্ঞেস করলেন, কি সংবাদ? ফাতেমা রাযি. বললেন, আমি ভয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কথা বলতে সক্ষম হলাম না। এরপর আলী রাযি. এবং ফাতেমা রাযি. দু জনেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি জন্য এসেছো? নিশ্চয় কোনো প্রয়োজনে এসেছো। আলী রাযি. বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসূল! প্রয়োজনেই এসেছি। পানির বালতি টেনে আমার বুকে ব্যথা হয়েছে বলে ফাতেমা রাযি. এর কাছে অনুযোগ করেছিলাম। আর চাকি ঘুরাতে ঘুরাতে তার হাত ব্যথা হয়ে গিয়েছিল বলে সে আমার কাছে অনুযোগ করেছিল। তাই আমরা আপনার কাছে এসেছিলাম যাতে আপনার কাছে আগত যুদ্ধবন্দিদের মধ্য হতে কাউকে আমাদের সেবার জন্য দেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, কা’বার রবের শপথ! আমি যুদ্ধবন্দিদের বিক্রি করবো এবং তার মূল্য আসহাবে সুফফার জন্য ব্যয় করবো। ক্ষুধার যন্ত্রণায় যাদের যকৃতগুলো গুটিয়ে গেছে। এতদিন আমি তাদের খাবারের কোনো ব্যবস্থা করতে পারছিলাম না। আলী রাযি. বলেন, এরপর বাড়িতে এসে আমরা আমাদের বিছানায় শুয়ে পড়লাম। ইত্যবসরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন তারা তাদের সাদা পশমী গালিচায় শুয়ে ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পশমী গালিচাটি ও পরিপূর্ণ একটি বালিশ এবং একটি চামড়ার তৈরি পানির পাত্র ফতেমা রাযি. কে বিবাহের সময় উপঢৌকন হিসেবে প্রদান করেছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আলী রাযি. এবং ফাতেমা রাযি. কে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তখন তারা মনে ভীষণ কষ্ট পেয়েছিল এবং খুব মর্মাহত হয়েছিল। যখন আলী রাযি. এবং ফাতেমা রাযি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের ব্যাপারটি উপলব্ধি করলেন, বিছানা থেকে উঠে তারা দাঁড়িয়ে গেলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেন, তোমরা তোমাদের জায়গায় অবস্থান করো। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পশমী গালিচার এক পাশে এসে বসলেন। এরপর বললেন, তোমরা আমার কাছে গিয়েছিলে যাতে আমি তোমাদের সেবা করার জন্য একটি গোলাম দেই। এখন আমি তোমাদেরকে এমন একটি বিষয় সম্বন্ধে অবগত করছি যা তোমাদের জন্য গোলাম থেকেও উত্তম এবং কল্যাণকর। তোমরা প্রত্যেক নামাযের পর তেত্রিশবার তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ), তেত্রিশবার তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং চৌত্রিশবার তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ করবে। আর যখন রাত্র বেলা বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন একশত বার করে পাঠ করবে। আলী রাযি. বলেন আমি জীবনে এ আমলগুলো পরিত্যাগ করেছি কি না আমার জানা নেই। আব্দুল্লাহ ইবনুল কাওয়া রাযি. আলী রাযি. কে জিজ্ঞেস করলেন, সিফ্ফীন যুদ্ধের রাত্রগুলোতেও আপনি এ দু‘আগুলো পরিত্যাগ করেননি? তখন আলী রাযি. বললেন, সিফ্ফীন যুদ্ধের রাত্রগুলোতেও আমি এ দু‘আগুলো পরিত্যাগ করিনি। (সহীহ বুখারী; হা.নং ৫৩৬২, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ; হা.নং ২৯৮৭৩)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ