কোক বা পেপসি জাতীয় পানীয় মাঝে মাঝে পান করেন প্রায় সবাই। কিন্তু কোমল পানীয় পান না করে থাকতে পারেন না যারা, তাদের জন্য রইলো এই আসক্তি দূর করার কিছু সহজ টিপস।
নিয়মিত কোমল পানীয় পান করাটাকে নির্দোষ মনে করে থাকেন অনেকেই। কিন্তু কোলা পান করা ছাড়া একটা দিনও পার করতে পারেন না যারা, তাদের এই ব্যাপারে একটু সাবধান থাকা উচিৎ। কোলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি, যা নিয়মিত পান করার ফলে দেখা দিতে পারে ওবেসিটি এমনকি ডায়াবেটিসের মতো জটিলতা। দাঁত এবং হাড়ের ক্ষতিও করে থাকে এগুলো। ডায়েট কোলাও এর ব্যতিক্রম নয়। সবদিক বিবেচনা করে কোমল পানীয় পান বাদ দেওয়া বা কমিয়ে আনাটা অনেকের জন্যই হতে পারে স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এ কাজটি করা যদি খুব কঠিন মনে হয় আপনার কাছে, তবে কয়েকটি কৌশল রইলো আপনারই জন্য।
সাধারণত যে পরিমাণে বা যত ঘন ঘন কোমল পানীয় পান করেন আপনি, সে পরিমাণ কমিয়ে আনুন। খুব ঘন ঘন কোলা পান করাটাও এড়িয়ে চলুন। এর ফলে একেবারে ছাড়তে না পারলেও আপনার কোমল পানীয় পানের পরিমাণ কমে আসবে।
অর্ধেক পানি, অর্ধেক কোলা মিশিয়ে পান করুন। এর ফলে কোলার মিষ্টি ভাবটা কমে আসবে। একটা সময়ে এই মিশ্রণে আপনি অভ্যস্ত হয়ে যাবেন এবং তখন আর কোমল পানীয় পান করতে এতোটা ইচ্ছে করবে না আপনার।
প্রতিদিন কতো ক্যালোরির খাবার খাচ্ছেন তার হিসেব রাখুন। আপনি যখন দেখবেন কোমল পানীয়র ক্যালোরি এতো বেশি, তখন নিজে থেকেই তা পান করার ইচ্ছে অনেকটা কমে আসবে। শুধু তাই নয়, ব্যায়ামের মাধ্যমে আসলে এই ক্যালোরির কতটা ক্ষয় হচ্ছে তার হিসেব রাখলেও কোমল পানীয় পানের ইচ্ছে হবে না আপনার।
কোমল পানীয়র বদলে দুধ-চিনি ছাড়া হালকা চা পান করা শুরু করুন। এতে যেমন ক্যালোরির চিন্ত করতে হবে না, তেমনি চায়ের বিভিন্ন উপাদান আপনার স্বাস্থ্যের উপকারে আসবে। প্রথম প্রথম এভাবে চা পান করতে গেলে স্বাদটা বাজে লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে মিশিয়ে নিতে পারেন লেবু, মধু, অল্প চিনি বা সুইটনার।
বেশিরভাগই ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমরা কোমল পানীয় পান করছি শুধুমাত্র তৃষ্ণা মেটাতে। সেক্ষেত্রে পানি পান করাটাই যথেষ্ট। কোমল পানীয় পান করার ইচ্ছে হলে আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিন। দেখবেন কোমল পানীয়ের প্রতি খুব একটা আসক্তি আর থাকছে না।
শুধু পানি পান করতে ইচ্ছে করে না অনেকের। এক্ষেত্রে পানির মাঝে নিয়ে আসুন নতুনত্ব। পানির জগ অথবা বোতলে ফেলে দিন কয়েক স্লাইস লেবু, কমলা অথবা শসা। ফ্রোজেন স্ট্রবেরি, পুদিনা পাতা বা ধনেপাতাও মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে কোলার প্রতি আসক্তি কমে আসবে।
অনেক সময়ে দেখা যায় বিশেষ কিছু পরিস্থতিতে কোমল পানীয় পান করতে ইচ্ছে করে আমাদের। ধরুন ফাস্টফুড খেতে গিয়ে কোমল পানীয় পান করতে ইচ্ছে করে আপনার, অথবা অফিসে বসে বিকেল বেলায় পান করতে ইচ্ছে করে, বা বিশেষ কোনো দোকানের পাশ দিয়ে যাবার সময় কোমল পানীয় পান করেন আপনি। এসব ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। ফাস্টফুড খেতে যাবার সময়ে পানি সাথে করে নিয়ে যান বা ঠাণ্ডা পানি অর্ডার করুন কোলার বদলে। অফিসেও সম্ভব হলে পানি বা চা পান করুন। এড়িয়ে চলুন কোমল পানীয়র দোকানটি।
ধীরে ধীরে কোমল পানীয় বাদ দেওয়াটা অনেকের জন্য কাজ করলেও কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে তা কাজ নাও করতে পারে। তারা দুই সপ্তাহের জন্য একেবারে বাদ দিয়ে দিন কোলা পান। এ সময়ে খুব কোলা পান করতে ইচ্ছে হলে নিজেকে বলুন এই দুই সপ্তাহ পরেইতো আবার পান করতে পারবেন। কিন্তু দেখবেন দুই সপ্তাহ পার হতে হতে আপনার আসক্তি অনেক কমে যাবে।
মূল: Amanda MacMillan, Huffington Post