শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড অনেক মেয়ের জীবনেই খুব সাধারণ একটি সমস্যা। তবে চটজলদি ওষুধের দিকে না গিয়ে অনেক সময় বাড়িতে বসেই ঘরোয়া চিকিৎসা হয়তো কাজে লাগে। এই চিকিৎসাগুলির মধ্যে আছে-

বাড়িতে বসেই যেসব চিকিৎসা করা সম্ভবঃ
• তলপেটে ও পিঠে গরম পানির ব্যাগ নিয়ে সেঁক দেয়া।
• পেটে মাসাজ করা।
• উষ্ণ কোমল গরম পানিতে গোসল করা।
• নিয়মিত ব্যায়াম করা।
• হালকা ও পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়া।
• যোগ ব্যায়াম চর্চা করা।
• পিরিয়ডের কাঙ্ক্ষিত দিনের কিছুদিন পুর্বেই ফোলা কমায় (Anti-inflammatory) এমন ঔষধ, যেমন আইবুপ্রোফেন নেয়া।
• ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১ ভিটামিন ই, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড (যা সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পাওয়া যায়), ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নেয়া এবং সেইসাথে লবন, অ্যালকোহল, ক্যফেইন এবং চিনি খাওয়া কমানো, রক্তের জমাট বেঁধে যাওয়া রোধের জন্য।
• শুয়ে দু’পা উপরে তোলা অথবা হাঁটু ভাঁজ করে শোয়া।

মেডিকেল চিকিৎসাঃ

যদি বাসায় নেয়া চিকিৎসায় কাজ না হয় তাহলে বিভিন্ন ধরণের মেডিকাল চিকিৎসা রয়েছে মাসিকের প্রচন্ড ব্যথা কমানোর জন্য। এসব চিকিৎসা ব্যাথার তীব্রতা এবং অন্তর্নিহিত কারণসমূহের উপর নির্ভর করবে। শ্রোণিদেশিয় ফুলে ওঠা রোগ বা যৌনবাধিত রোগের কারণে ব্যাথা হলে অবশ্যই তা ডাক্তারি চিকিৎসা দ্বারা সারিয়ে তুলতে হবে। ডাক্তাররা সাধারণত এজন্য অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ দেন সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য। ব্যাথা দূর করতেও এজন্য ডাক্তাররা ঔষধ দিয়ে থাকেন। এই ঔষধগুলো হল-

• Non-steroidal anti-inflammatory drugs (NSAIDs) যেমন নাপা, এইস প্লাস ইত্যাদি।
• ব্যাথা প্রশমনকারী ঔষধ যেমন Narcotics, Antidepressants

ডাক্তাররা হরমোনাল পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রনেরও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হরমোনাল জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরণের পিল, প্যাচ (চামড়ার ওপরে লাগিয়ে রাখার জন্য), Vaginal Ring (যোনিপথে ব্যাবহারের জন্য), ইঞ্জেকশন অথবা ইমপ্ল্যান্ট (চামড়ার নিচে স্থাপনের জন্য) –এর মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে হরমোন ব্যবহারের মাধ্যমে ডিম্বস্ফুটন (Ovulation) রোধ করা হয় যা মাসিকের সময় Cramp বা পেট কামড়ানো নিয়ন্ত্রণ করে।

এন্ডোমেট্রয়েসিস (একটি যন্ত্রণাদায়ক শারীরিক অসুস্থতা, যেখানে জরায়ূর ভেতরের রক্তজালিকার কোষোগুলি দেহের অন্য অংশে জন্মাতে শুরু করে।) অথবা জরায়ুর ফাইব্রয়েডস ( ক্যন্সার সৃষ্টি করেনা এমন টিউমার তৈরি হওয়া) রোগের জন্য সার্জারি একটি উপায় যখন অন্য কোন পদ্ধতিতে তা দূর করা যায় না। সার্জারির মাধ্যমে এন্ডোমেট্রয়েসিসের ফলে সৃষ্ট রক্তজালিকা, ফাইব্রয়েড অথবা সিস্টকে দেহ থেকে অপসারণ করা হয়।
যখন আর কোন উপায় থাকে না, তখন কিছু বিরল ক্ষেত্রে Hysterectomy ( পুরো জরায়ুকে কেটে ফেলে দেয়া) এর মাধ্যমেও মাসিকের তীব্র যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তিলাভ করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে রোগী সারাজীবনের জন্য গর্ভে সন্তান ধারনের সুযোগ হারান।

যেহেতু ঋতুস্রাব বা মাসিক মেয়েদের জীবনের একটি গুরুত্বপুর্ণ ও স্বাভাবিক ঘটনা তাই এটাকে কোনভাবেই আড়াল করে বা চেপে রাখা উচিত না। মেয়েদের উচিৎ এর সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন হওয়া এবং এর প্রক্রিয়াসমূহ সম্পর্কে সম্পুর্ণভাবে অবগত থেকে একটি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা এবং অন্যকেও সাহায্য করা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ