শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কর্মপরিধি বেড়ে গেলেও কমে গিয়েছে কায়িকশ্রম। বেশির ভাগ কাজই দেখা যায় চেয়ার-টেবিলভিত্তিক। অনরবরত বসে থাকার ফলে পিঠে ব্যথা করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে সামান্য বিশ্রাম আপনাকে পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু ব্যথা যখন ক্রনিক হয়ে যায় বা ব্যাধির আকার ধারণ করে, তখন বিশ্রামের পাশাপাশি মেনে চলতে হয় বেশ কিছু নিয়ম-কানুনও! পিঠের ব্যথা খুব বেশি হলে প্রথম কাজ হলো পূর্ণ বিশ্রাম গ্রহণ করা। একেবারে না করলেই নয় এমন হাঁটাহাঁটি ছাড়া পায়ের পূর্ণ বিশ্রাম দিন অন্তত দুদিন। ব্যথার জায়গার পাশে বরফ রেখে জায়গাটি ৭-৮ মিনিট ম্যাসাজ করুন, আরাম পাবেন। প্রথম দু একদিন বরফ-চিকিত্‍সা দেয়ার পরও যদি ব্যথা ভালো না হয় তাহলে গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে গরম ভাপ দিয়ে দেখতে পারেন। এ পদ্ধতিতেও যদি ব্যথা না কমে তাহলে ঠান্ডা-গরম পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। এ পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমে প্রথমে ৩০ মিনিট বরফ চিকিত্‍সা তারপর ৩০ মিনিট ভাপ চিকিত্‍সা প্রয়োগ করুন। প্রতিবারে অন্তত দুই বার করে দিনে দুই বার। প্রয়োজনবোধে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন। পিঠব্যথার অন্যতম কারণ হলো মাংসপেশীর জড়তা। বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর দুই হাঁটু বিছানা থেকে তুলে বুকের দিকে ভাঁজ করুন, হালকা চাপ প্রয়োগ করুন এবং ছেড়ে দিন। এভাবে কয়েকবার করুন, আরাম পাবেন। বিছানা থেকে চট করে উঠে না পড়ে গড়িয়ে নামুন। বিছানার প্রান্তে চলে আসার পর পিঠ শক্ত করে ফেলুন, পা নামিয়ে দিন নিচে এবং দেহকে বিছানা থেকে তুলে আনুন। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যথা উপশমের জন্য এটা বেশ কার্যকর। ফোম বা গদিতে মোড়া বিছানা পরিহার করুন। সমতল এবং শক্ত বিছানায় শোবার অভ্যাস করুন। মাথার নিচে বালিশ রেখে চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটুর নিচে বালিশ রাখুন। এ পদ্ধতিতে শোয়া ব্যথা উপশমের জন্য কার্যকর। কাজের সময় ব্যথা অনুভূত হলে নিজের সুন্দর স্মৃতিগুলো মনে করুন, দেখবেন ব্যথা কম টের পাচ্ছেন! ক্রনিক পিঠের ব্যথার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত ফলদায়ক। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন, তবে তা অবশ্যই চিকিত্‍সকের পরামর্শ সাপেক্ষে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ব্যথা থেকে মুক্তি ‘ব্যাকপেইন’ থেকে মুক্ত থাকার জন্য দরকার সুস্থ জীবনা-যাপন। ডা. বাছেত পরামর্শ দেন, “চেয়ারে বসার সময় মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। সামনে ঝুঁকে বসবেন না। খাবারের তালিকায় রাখুন পুষ্টিকর শাকসবজি। ছোট মাছের কাঁটা ও মুরগির হাড়ে থাকে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম। তাই এসব খাওয়ার অভ্যাস করুন। শিশুদেরও ছোট মাছ খেতে উৎসাহিত করুন।” “অন্যান্য উপসর্গের পাশাপাশি মানসিক চাপ বাড়লেও ব্যাকপেইন হতে পারে। মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে রুটিন অনুসারে কাজ করুন। নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো কিংবা অন্য কোনো ধরনের ব্যয়াম নিয়মিত চর্চায় ব্যাকপেইনের ঝুঁকি কমে। শরীরের ওজন যেন হঠাৎ করে বেড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।” বললেন বাছেত। ব্যথা কমাতে ব্যায়াম খুবই কার্যকর। বাছেত বলেন, “যদি পিঠ ব্যথা হতে থাকে তবে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে শক্ত কোনো বিছানায় বা মেঝেতে মাদুর বা ম্যাট বিছিয়ে টান টান হয়ে শুয়ে থাকা। প্রতিদিন ১৫ মিনিটের এই ব্যায়াম পিঠ ব্যথা কমাতে অনেক সাহায্য করে।” পরামর্শ দিলেন বাছেত। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ‘রিলাক্সেশন’ বা বিনোদনের মধ্যে থাকা ও ‘মেডিটেশন’ বা ধ্যান চর্চায় ‘ব্যাকপেইন’ ও ‘স্ট্রেস’ বা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা যায়। মেডিটেশনের ফলে শরীরের মাংসপেশীগুলো শিথিল হয়, এতে ব্যথা উপশম হয় বলে জানালেন ডা. বাছেত। মানসিক চাপ যুক্ত পেশা, দুশ্চিন্তা ও ধূমপানের ফলে যে ‘ব্যাকপেইন’ হয় তা দূর করতে ওষুধের প্রয়োজন নেই। মানসিক চাপ কমাতে রুটিন করে কাজ করুন। ধূমপানের কারণেও ‘ব্যাকপেইন’ হয়। তাই এই অভ্যাস থাকলে বর্জন করুন। ব্যথা বেশি হলে তাড়াতাড়ি স্নায়ু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ