আজকে আমি খুব সহজ পাঁচটা গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে কথা বলব। এই সবগুলোই চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রমাণিত। একটা খুব সহজ ঘরোয়া সমাধান হলো বিছানার মাথার দিকটা উঁচু করে দেওয়া। এই সমাধানটা শোনার পর অনেকে যেটা করেন সেটা হলো একটা জায়গায় দুইটা বালিশ দিয়ে মাথাটা উঁচু করেন। এটা করলে সমস্যার সমাধান হয় না বরং অনেকের ক্ষেত্রে আরো বেড়ে যায়। কেন বেড়ে যায় সেটা বুঝিয়ে বলি।

আরো পড়ুন: শিশুর ত্বকের জন্য কোনটা ভালো তেল

যখন আপনি বালিশ দিয়ে মাথা উঁচু করেন তখন শরীরটা সমান ভাবে উঁচু হয় না ফলে সমস্যাটা বেড়ে যায়। এখানে একটা সমাধান আছে কিছু ম্যাট্রেস বা তোসক পাওয়া যায় যেগুলো এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে। নিচে ছবি দেওয়া আছে। দামি ম্যাট্রেস বা তোসক কিনতে হবে না খুব সহজ করে আপনি যেটা করতে পারেন সেটা হচ্ছে খাটের যে দিকটাতে আপনি মাথা দেন সেই পায়ার নিচে একটু কাঠ দিয়ে বা ইট দিয়ে অথবা শক্ত কাগজ দিয়ে মাথার দিকটা উঁচু করে দেখেন আপনার গ্যাসের সমস্যা অনেকটা আরাম পেতে পারেন।


আমাদের মধ্যে একটা ধারণা বেশ অনেকটাই প্রচলিত সেটা হলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে একসাথে অনেকগুলো খাবার পুরোপুরি নিষেধ। জিনিসটা কিন্তু আসলে এমন না সবার যে সব ধরনের খাবারের সমস্যা হবে তা না। একেকজনের একেকটা সমস্যা হয়। আমরা তো শুনে থাকি যে চা কফি ভাজাপোড়া ঝাল মসলা একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে এটা কিন্তু একাবারে ভুল ধারনা। আপনার যে খাবার খেলে গ্যাসটিকের সমস্যা বেড়ে যায় আপনি সেই খাবারটি এড়িয়ে চল্লেই হবে।

খাওয়া শেষ করে একদম সাথে সাথেই ঘুমাতে চলে যাবেন না। খাওয়া আর ঘুমের মাঝখানে অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা সময় রাখবেন। অনেকে মনে করেন যে আমি তো সাড়ে আটটার মধ্যেই খাওয়া শেষ করেছি অনেক আগে খাওয়া শেষ করেছি কিন্তু তারপরও যদি আপনি 9 টা দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে যান তাহলে কিন্তু গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন আপনার ঘুমানোর তিন থেকে চার ঘন্টা আগে রাতের খাওয়াটা শেষ করে ফেলতে।

এখানে আমি আরেকটা জিনিস বলি সেটা হল আমাদের অনেকের একটা টেন্ডেন্সি থাকে যা আমরা একেবারে অনেক বেশি খেয়ে ফেলি। এই কাজটা কিন্তু করা যাবে না। এটা করলে কি হবে? পেট অনেক ভরে গিয়ে পেটে চাপ পড়বে তাই অল্প অল্প করে খাবেন। প্রয়োজনে বারবার খাবেন কিন্তু অল্প অল্প করে। একেবারে বেশি খেয়ে ফেলবেন না।

আর শেষ পরামর্শটা হচ্ছে ওজন নিয়ে ওজন যদি বেশি হয় তাহলে গ্যাসের সমস্যা বেশি হতে পারে। অনেক গুলো কারণেই তো আমাদের ওজনটা কমানো প্রয়োজন। তাই আপনার যদি মনে হয় গ্যাসের অনেক সমস্যা হচ্ছে আর যদি দেখেন আপনার ওজনটা বেশি তাহলে ওজনটা কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন।

এখানে আরেকটা জিনিস বোধহয় আমরা একটু কম চিন্তা করি সেটা হচ্ছে যদি কেউ মানসিক চাপে থাকে তখনও কিন্তু গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি যদি মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তাহলে মানসিক চাপ থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম-বেশি সবারই হয়। গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো হল পেটে জ্বালা-পোড়া করা, বদহজম, বমি বমি ভাব, বমি করা, পেটে ক্ষুধা, ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া, খাওয়ার পর উপরের পেট বেশি ভরে গিয়েছে অনুভূতি হওয়া ইত্যাদি। খাবার সময়মতো খাওয়া হয়না, বাইরের ভাজা-পোড়া বেশি খাওয়া, জাঙ্কফুড খাওয়া, পরিমাণ মতো পানি না খাওয়া ইত্যাদি কারণে গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা দেখা দেয়। গ্যাস্ট্রিকের হাত থেকে নিস্তার পেতে জেনে রাখুন কিছু ঘরোয়া উপায়- আলুর রস ১. গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রোধ করার অন্যতম ভাল উপায় হল আলুর রস। আলুর অ্যালকালাইন উপাদান গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণগুলো রোধ করে থাকে। ২. একটি বা দুটো আলু নিয়ে গ্রেট করে নিন। এর গ্রেট করা আলু থেকে রস বের করে নিন। এরপর আলুর রসের সাথে গরম পানি মিশিয়ে নিন। এই পানীয় দিনে ৩ বার পান করুন। প্রতি বেলায় খাবার ৩০ মিনিট আগে খেয়ে নিন আলুর রস। তবে অন্তত ২ সপ্তাহ পান করুন এই পানীয়। আদা ১. আদাতে আছে এমন কিছু উপাদান যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় জ্বালাপোড়া হলে তা রোধ করতে সাহায্য করে। আদা খেলে বমি সমস্যা, বদ হজম, গ্যাস হওয়া কমে যায়। ২. আদার রসের সাথে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। দুপুরে ও রাতে খাওয়ার আগে এটি খেয়ে নিন। ৩. আদা কুচি করে পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ১০ মিনিট ডেকে রাখুন, এরপর সামান্য মধু মিশিয়ে চায়ের মতো বানিয়ে নিন। এই পানীয়টি দিনে ২/৩ বার পান করুন উপকারিতা পেতে। ৪. আপনি চাইলে আস্ত আদা ধুয়ে কেটে চিবিয়েও খেতে পারেন।