সর্দি, কাশি, জ্বর মানেই করোনা সংক্রমণ নয়। ঋতু পরিবর্তনের সময় অনেকেই এই লক্ষণগুলি অনুভব করেন। তাই আতঙ্কিত হবেন না, আগে থেকে কঠোর অ্যান্টিবায়োটিক না নিয়ে সহজ ঘরোয়া প্রতিকারের সাথে মোকাবিলা করুন।
পেঁয়াজ
সর্দি-কাশির সবচেয়ে সহজ প্রতিকার হল পেঁয়াজ।
একটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজ ভালো করে কেটে নিন। একটি ছোট পাত্রে পানি নিয়ে পেঁয়াজ ছয় থেকে আট ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এর সাথে দুই-তিন চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দুবার খান। শিশুদের জন্যও এটি খুবই উপকারী।
সর্দি-কাশি দূর করার পাশাপাশি এটি শরীরকে ভেতর থেকে সতেজ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করে।
রসুন
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া কাঁচা রসুন ও কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে উপকার পাবেন। রসুনের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মধুর মিশ্রণ
গরম পানিতে সামান্য মধু, লেবুর রস ও আদার রস মিশিয়ে দিনে দুবার পান করুন। কফ এবং গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পান।
আদা
এক টুকরো আদা ছোট ছোট করে কেটে লবণ মিশিয়ে নিন। এই লবণযুক্ত আদা মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ চিবিয়ে নিন। সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পান!
আদা, তুলসী পাতা গুঁড়ো করে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়া গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশি, জমে থাকা কফের সমস্যা দূর হয়।
হলুদ চা
এটি হলুদ, মধু এবং লেবু দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। হলুদে কারকিউমিন নামক একটি যৌগ রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং এর শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগগুলি শরীরের ব্যথা উপশম করতেও সাহায্য করতে পারে। এই পানীয়টি তৈরি করতে 15-20 মিনিটের জন্য হলুদ সিদ্ধ করুন। তারপর স্বাদমতো লেবু ও মধু দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আরো পড়ুন: নেগেটিভ চিন্তা দূর করার উপায়
মসলা চা
এই ইমিউনিটি বুস্টারের উপাদান রান্নাঘরে সহজেই পাওয়া যায়। যেমন, আদা, দারুচিনি, গোলমরিচ, লবঙ্গ, এলাচ, তুলসী পাতা মধুর সাথে ৩০ মিনিট পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। এই পানীয়টিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দ্বিগুণ করে।
গ্রিন স্মুদি
এই স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু সবুজ স্যুপ একটি নিখুঁত খাবার বিশেষ করে গরম ঋতুতে। এটি ভিটামিন 'এ', ভিটামিন 'সি', ফলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই মিশ্রণটি তৈরি করতে আপনার কিছু পালং শাক, আম, আনারস, লেবুর রস, সদ্য কাটা আদা লাগবে। বাদামের দুধ ও দই দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করার পর ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করতে হবে।
মধু লেমনেড
চার কাপ পানিতে আদা, এক ইঞ্চি দারুচিনি, তিন কোয়া রসুন, এক চা চামচ পুদিনার রস ও লেবুর রস ফুটিয়ে এই মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তারপর মধু দিয়ে গরম করে পান করুন। এই পানীয়টি গলা ব্যথা এবং কাশি উপশম করবে। গলায় অতিরিক্ত শ্লেষ্মা জমতে দেবেন না।
কাড়া
একটি পাত্রে পানিতে তুলসী, লবঙ্গ, দারুচিনি, আদা, গুড়, হলুদ ও কালো মরিচ সিদ্ধ করুন। মধু বা গুড় পরিমাণ মতো দেওয়া যেতে পারে। সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই পানীয়টি খুবই উপকারী।
আজকে আমি খুব সহজ পাঁচটা গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে কথা বলব। এই সবগুলোই চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রমাণিত। একটা খুব সহজ ঘরোয়া সমাধান হলো বিছানার মাথার দিকটা উঁচু করে দেওয়া। এই সমাধানটা শোনার পর অনেকে যেটা করেন সেটা হলো একটা জায়গায় দুইটা বালিশ দিয়ে মাথাটা উঁচু করেন। এটা করলে সমস্যার সমাধান হয় না বরং অনেকের ক্ষেত্রে আরো বেড়ে যায়। কেন বেড়ে যায় সেটা বুঝিয়ে বলি।
আরো পড়ুন: শিশুর ত্বকের জন্য কোনটা ভালো তেল
যখন আপনি বালিশ দিয়ে মাথা উঁচু করেন তখন শরীরটা সমান ভাবে উঁচু হয় না ফলে সমস্যাটা বেড়ে যায়। এখানে একটা সমাধান আছে কিছু ম্যাট্রেস বা তোসক পাওয়া যায় যেগুলো এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে। নিচে ছবি দেওয়া আছে। দামি ম্যাট্রেস বা তোসক কিনতে হবে না খুব সহজ করে আপনি যেটা করতে পারেন সেটা হচ্ছে খাটের যে দিকটাতে আপনি মাথা দেন সেই পায়ার নিচে একটু কাঠ দিয়ে বা ইট দিয়ে অথবা শক্ত কাগজ দিয়ে মাথার দিকটা উঁচু করে দেখেন আপনার গ্যাসের সমস্যা অনেকটা আরাম পেতে পারেন।
আমাদের মধ্যে একটা ধারণা বেশ অনেকটাই প্রচলিত সেটা হলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে একসাথে অনেকগুলো খাবার পুরোপুরি নিষেধ। জিনিসটা কিন্তু আসলে এমন না সবার যে সব ধরনের খাবারের সমস্যা হবে তা না। একেকজনের একেকটা সমস্যা হয়। আমরা তো শুনে থাকি যে চা কফি ভাজাপোড়া ঝাল মসলা একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে এটা কিন্তু একাবারে ভুল ধারনা। আপনার যে খাবার খেলে গ্যাসটিকের সমস্যা বেড়ে যায় আপনি সেই খাবারটি এড়িয়ে চল্লেই হবে।
খাওয়া শেষ করে একদম সাথে সাথেই ঘুমাতে চলে যাবেন না। খাওয়া আর ঘুমের মাঝখানে অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা সময় রাখবেন। অনেকে মনে করেন যে আমি তো সাড়ে আটটার মধ্যেই খাওয়া শেষ করেছি অনেক আগে খাওয়া শেষ করেছি কিন্তু তারপরও যদি আপনি 9 টা দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে যান তাহলে কিন্তু গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন আপনার ঘুমানোর তিন থেকে চার ঘন্টা আগে রাতের খাওয়াটা শেষ করে ফেলতে।
এখানে আমি আরেকটা জিনিস বলি সেটা হল আমাদের অনেকের একটা টেন্ডেন্সি থাকে যা আমরা একেবারে অনেক বেশি খেয়ে ফেলি। এই কাজটা কিন্তু করা যাবে না। এটা করলে কি হবে? পেট অনেক ভরে গিয়ে পেটে চাপ পড়বে তাই অল্প অল্প করে খাবেন। প্রয়োজনে বারবার খাবেন কিন্তু অল্প অল্প করে। একেবারে বেশি খেয়ে ফেলবেন না।
আর শেষ পরামর্শটা হচ্ছে ওজন নিয়ে ওজন যদি বেশি হয় তাহলে গ্যাসের সমস্যা বেশি হতে পারে। অনেক গুলো কারণেই তো আমাদের ওজনটা কমানো প্রয়োজন। তাই আপনার যদি মনে হয় গ্যাসের অনেক সমস্যা হচ্ছে আর যদি দেখেন আপনার ওজনটা বেশি তাহলে ওজনটা কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন।
এখানে আরেকটা জিনিস বোধহয় আমরা একটু কম চিন্তা করি সেটা হচ্ছে যদি কেউ মানসিক চাপে থাকে তখনও কিন্তু গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি যদি মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তাহলে মানসিক চাপ থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
জ্বর ঠোসা অনেক কারণে হতে পারে, জ্বর ঠোসা হয় একটা নির্দিষ্ট ভাইরাসের কারণে নাম হারপিস ক্যামপ্লেক্স ফায়ার। এটা যদি একবার শরীরে ঢুকে এটা সারাজীবন থেকে যায়। এজন্য বারবার জ্বর ঠোসা হয়। সাধারণত ভাইরাসটা চুপ করে বসে থাকে তেমন ঝামেলা করে না। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেগে উঠে জ্বর ঠোসা তৈরি করে। কখন কখন জেগে ওঠে, যদি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় যেমন ঠান্ডা লাগলো বা জ্বর আসলো তখন এই জ্বর ঠোসা তৈরি করতে পারে। এটা দেখেই হয়তো কোন বুদ্ধিমান ওইটার নাম দিয়েছিল জ্বর ঠোসা। তারপরে অন্য কোন ইনফেকশন হলে। যেমন মানসিক চাপে থাকলে খুব ক্লান্তি লাগলে বা মেয়েদের মাসিকের সময় এরা জেগে উঠে জ্বর ঠোসা তৈরি করতে পারে।