সত্যি কথা হোল, সবার ক্ষেত্রে পানি ভাঙ্গার অনুভুতি একই হবেনা। প্রত্যেকটি মা ই ভিন্ন। তাই এটি বোঝা কষ্টসাধ্য। এই তরলটা একবারে অনেকটা বের হতে পারে আবার অল্প অল্প করে চুইয়ে বের হতে পারে। প্রসবের যে কোন সময় পানি ভাঙ্গতে পারে আবার তার আগেও ভাঙ্গতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে পানি নাও ভাঙ্গতে পারে এবং শিশু এমনিওটিক স্যাক সহ জন্মগ্রহণ করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় পানি ভাঙ্গা বলতে শুরুতেই মাথায় আসে হঠাৎ করে আন্ডার গার্মেন্টস ভিজে যাওয়া বা একসাথে অনেক তরল বেরিয়ে আসা। আসলে মাত্র ১০-১৫ ভাগ মায়েদের ক্ষেত্রে প্রসব বেদনা শুরুর ঠিক আগে পানি ভাঙ্গে এবং এদের মদ্ধে অল্প কিছু মায়ের এক সাথে অনেক তরল বেরিয়ে আসে।
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে পানি ভাঙার আগে মায়েদের নিয়মিত কন্ট্রাকশন হতে থাকে আবার কারো কারো প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ার পরে পানি ভাঙ্গে যা তারা বুঝতেই পারেনা।
যখন পানি ভাঙ্গে তখন যোনিপথে গরিয়ে তরল বের হতে পারে আবার প্রবলভাবে নির্গত হতে পারে। এটা নির্ভর করে তরলভর্তি থলিটি কোনদিকে ছিঁড়েছে তার উপর। বাচ্চা যখন জরায়ুর নিচের দিকে নেমে আসে তখন বাচার মাথার সামনের দিকে কিছু তরল থাকে এবং মাথার পেছনের দিকে বাকি তরলগুলো থাকে।
সামনের তরলগুলোকে বলে ফোর ওয়াটার এবং পেছনের গুলোকে হাইন্ড ওয়াটার। পানি যদি পেছনের দিকে ভাঙ্গে তবে তা গড়িয়ে পরে এবং তা প্রস্রাব নাকি এমনিওটিক ফ্লুইড তা বোঝা কষ্টসাধ্য হয়।
এমনিওটিক ফ্লুইডের ৯৯ ভাগই পানি। তাই এটি দেখতে পরিষ্কার এবং গন্ধবিহীন হয়। মাঝে মাঝে তাতে হলুদ বা গোলাপি আভা থাকতে পারে। আর ভালোভাবে বোঝার জন্য পানি ভেঙ্গেছে মনে হলে আপনি ম্যাটারনিটি প্যাড ব্যাবহার করতে পারেন।
ম্যাটারনিটি প্যাডটি ভিজে যাওয়ার পর কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। যদি দেখেন তরলগুলো হলুদ হয়ে গেছে তবে তা প্রস্রাব হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। আর এক্ষেত্রে প্যাড থেকে অ্যামোনিয়ার গন্ধ আসবে। এমনিওটিক ফ্লুইড হলে তা পানির মত পরিষ্কার থাকবে। তবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়াটাই ভালো।
যদি ডিউ ডেটের কাছাকাছি থাকেন বা ডিউ ডেট অতিক্রম করে যায় তবে নির্গত তরলের সাথে বাচ্চার প্রথম পায়খানা বা মিকোনিয়াম (meconium) মিশ্রিত থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে তরলের সাথে সবুজ বা বাদামী বর্ণের আভা থাকতে পারে। এ ধরনের দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারকে জানান কারন এমন হলে গর্ভের বাচ্চার মিকোনিয়াম মিস্রিত তরল গ্রহনের সম্ভাবনা থাকে।