শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ব্যস্ততার কারণে পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, ঠিক সময়েই যেন খাওয়া হয়ে ওঠে না অনেকের। পেটে কামড়ে কামড়ে ক্ষিদে মরে যায়, তবু পাকস্থলিতে একটা খাবারের দানাও পৌঁছায় না। আর যখন খাওয়ার সুযোগ হয়, তখন সেই খাবার শরীরের কাজে না লেগে ফ্যাট হিসেবে জমতে শুরু করে। ফলে বাড়তে শুরু করে মধ্যপ্রদেশ। আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান তাহলে আপনাকে উচ্চ-ক্যালোরির জাঙ্ক ফুড অথবা কেবল পুষ্টিকর খাদ্য খেলেই হবেনা। আপনাকে এমন খাদ্য বেছে নিতে হবে যাতে পুষ্টির ও শক্তি উভয়ই আছে পরিমাণ মত।।মোটা হওয়ার জন্য দেহে ক্যালরির প্রয়োজন। আর যদি আপনি ব্যায়াম করেন তাহলে দেহ থেকে ক্যালরি কমে যাবে তাই মোটা হতে চাইলে ব্যায়াম করা যাবেনা। কাছে কোথাও যেতে চাইলে না হেঁটে গাড়ি ব্যাবহার করুন এবং দীঘৃ সময় ধরে টিভিও দেখতে পারেন। এখনআপনাকে ২০টি খাদ্যের তালিকা জানাবো যা খেলে আপনি সু-স্বাস্থ্যের জন্য পাবেন সঠিক পরিমাণ পুষ্টি

১। চিনাবাদামের মাখনঃ সকালের নাস্তায় রুটিতে হালকা করে চিনাবাদামের মাখন মেখে খেতে পারেন। এটি আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি দিবে প্রায় ১৯২ ক্যালরি!

২। একটা গোটা ডিমঃ এটি প্রোটিন ও তিন রকমের ভিটামিনে পরিপূর্ণ। এতে আছে ভিটামিন A, D, E এবং প্রচুর পরিমাণ কলেস্টেরল।

৩। বাদাম ও মধু সমৃদ্ধ খাবারঃ সকালের নাস্তা হিসেবে বাদাম ও মধু সমৃদ্ধ খাবার আপনার নাস্তার তালিকায় রাখুন। এতে আপনি পাবেন প্রায় ৫০০ ক্যালরি। এছাড়া এটি এমন একটি খাবার যা আপনার সকালের নাস্তাকে সু-স্বাদু করে তুলবে।

৪। মাখনঃ মাখন আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদী ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তবে মাখন খেতে হবে পরিমাণ মত। কারন প্রচুর পরিমাণ মাখন আবার আপনার হার্টে সমস্যা করতে পারে।

৫। বন রুটিঃ বন রুটিতে থাকছে অতিরিক্ত ক্যালরি এবং প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট।

৬। ভুট্টা রুটিঃ ভুট্টার রুটি খেতে পারেন সকালে বা বিকেলে। ভুট্টাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট। আপনি সুপের সাথে ভুট্টার রুটি খেতে পারেন।

৭। পনিরঃ এক চামচ পনিরে থাকে ৬৯ ক্যালরি শক্তি। পনির তৈরি করা হয় দুধ থেকে তাই এতে থাকে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, চর্বি ও কলেস্টেরল।  

৮। ফলের রসঃ ফলের রস হচ্ছে ওজন বাড়ানোর স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর পথ। ১০০% ফলের রস আপনার শরীরে দেবে প্রচুর পরিমাণ চিনি ও পুষ্টি।

৯। পাস্তা ও নুডুলসঃ পাস্তা ও নুডুলস খাদ্যশস্য ও শর্করার একটি ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাদ্য যোগান তাই এটি একটি সুস্থ এবং উচ্চ ক্যালোরি খাবার হিসাবে পরিচিত। আপনি প্রতিদিন পরিমাণ মত পাস্তা অথবা নুডুলস খেতে পারেন।

১০। চিংড়িঃ চিংড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিকর ও প্রয়োজনীয় এসিড যা আপনার স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

১১। গমের পাউরুটিঃ গমের পাউরুটি খেয়ে আপনি পেতে পারেন ৬৯ ক্যালোরি শক্তি। এর ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি হবে।

১২। শুকনো ফলঃ আপনি দ্রুত ক্যালোরি পেতে পারেন শুকনো ফল খেয়ে। শুকনো ফলে পাকা ফলের মতই প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি থাকে।

১৩। যবের রুটিঃ যবের রুটিও হতে পারে আপনার সকালের নাস্তার জন্য উপযুক্ত। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ও পুষ্টি।

১৪। দইঃ দই আপনাকে ১১৮ ক্যালোরির সমপরিমাণ শক্তি যোগাবে। এটা চর্বি বিহীন শক্তিকর খাবারের মধ্যে অন্যতম। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে দই অন্তর্ভুক্তি করুন।

১৫। স্বাস্থ্যকর চর্বি ও তেলঃ আপার খাদ্য তালিকাতে পরিমাণ মত চর্বি যুক্ত করুণ এর ফলে আপনার ক্যালোরির অভাব পুরন হয়ে যাবে। ভোজ্য তেল হিসেবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

১৬। বাদামী চালঃ বাদামী চাল আপনাকে প্রচুর পরিমান কার্বোহাইড্রেট ও স্বাস্থ্য বৃদ্ধির উপাদান ফাইবার দিবে।

১৭। কলাঃ একটি কলাতে থাকে ১০০ ক্যালোরি। কলাতে ক্যাবল ক্যালোরি থাকে তাই নয় এটি আপনার কর্ম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

১৮। বাদাম এবং বীজঃ স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য বাদাম ও বীজ খেতে হবে। বাদাম ও বীজে রয়েছে polyunsaturated চর্বি যা আপনার স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

১৯। মটরশুটিঃ নিরামিষীদের জন্য মটরশুটি প্রোটিনের প্রধান উৎস। তাই আপনি মটরশুটি প্রাণীজ আমিষের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।

২০। আলুঃ আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট ও complex sugar। নিয়মিত রান্না ও সিদ্ধ আলু খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে পারেন।

পুষ্টিকর খাবার খান এবং বারে বারে খান। স্পোর্টস নিউট্রিশনিস্টরা অ্যাথলেটদের বেড়ে ওঠার সময় দিনে ৬ বার পর্যন্ত (বা কমপক্ষে ৩ বার) সবধরনের পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেনঃ

● আমিষঃ মাংস, মাছ, ডিম, দুধ এবং বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য, সিমের বিচি বা ডালজাতীয় খবার এবং সয়া মিট (soya meat)● শ্বেতসার (Starches) – আলু, ভাত, নুডলস, পাস্তা, রুটি● চর্বি – সবধরনের তেল, মাখন, ননী, ঘী● বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি

যারা ওজন কমাতে চাইছেন শুধু তাদের জন্য নয়, যারা ওজন বাড়াতে চাইছে তাদের জন্যও শাকসবজি খুব জরুরি। পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশজাতীয় খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবেনা, এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পাবে। প্রচুর শ্বেতসার বা স্টার্চ আছে এমন শাকসবজি বা ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেমনঃ কলা, আম, কাঁঠাল, খেজুর গাজর, ভুট্টা। বাদাম খান কারন এতে স্বাস্থ্যকর তেল ও অ্যান্টিওক্সিডেন্ট আছে।

বিভিন্ন ধরনের শুকনো ফল খাওয়ারও চেষ্টা করুন।

চিনির বদলে পানিয়ের সাথে কয়েক চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। এটি আপনার শরীর আরও ভালোভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে পারবে। খাবারে ক্যালরি বাড়ানোর আরও কয়েকটি সহজ পদ্ধতি হচ্ছে রোজ সকালে একগ্লাস (পূর্ণ ননীযুক্ত) দুধ বা (আপনি ল্যাক্টোজ ইন্টলারেন্ট হলে) সয়া মিল্ক খাওয়া, আপনার ডায়েটে এক কাপ দই বা সালাদে একমুঠো বাদাম যোগ করা বা রুটিতে পিনাট বাটার বা অমলেটের সাথে চিজ খাওয়া অথবা রান্নার সময় বাড়তি দুই চা-চামচ অলিভ অয়েল যোগ করা। এগুলো সঠিক মাত্রায় করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। এতে বাড়াবাড়ি করবেন না, কারন রোগা ব্যাক্তিরা হঠাত অনেক বেশি খাওয়া-দাওয়া শুরু করলে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

আপনি ওজন ওজন বাড়াতে চাইলে আপনার ক্যালরি গ্রহনের পরিমাণ বাড়াতে হবে, অর্থাৎ বেশি বেশি খেতে হবে। যদি আপনার রোজ প্রতিদিনের কাজকর্ম করতে ২০০০ ক্যালরি (আপনার ক্যালরির চাহিদা নির্ভর করবে আপনার বয়স, আকৃতি এবং কাজের পরিমাণের ওপর) প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাকে তারচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যালরির খাবার খেতে হবে। আস্তে আস্তে ক্যালরি গ্রহনের পরিমাণ বাড়ানোর চিন্তা করুন, অর্থাৎ প্রতিদিন বাড়তি ২০০ অতিরিক্ত ক্যালরি থেকে ৫০০ ক্যালরি অতিরিক্ত গ্রহণের কথা ভাবুন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিউট্রিসিয়ানের পরামর্শ নিতে পারেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ