,
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, বৈজ্ঞানিক প্রভৃতি। আজকের দিনে যারা শিশু তারাই হবে আগামী দিনের জাতির পথ প্রদর্শক। তারা বড় হয়ে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে। তাদের সুনাম দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিটি শিশুর মধ্যে লুকিয়ে আছে সুপ্ত প্রতিভা। তাকে খুঁজে বের করে কাজে লাগাতে হবে। পৃথিবীর মহামানব ও মনীষীদের জীবন লক্ষ করলে দেখা যায় যে, তারা শিশুকাল থেকেই নানা বিষয়ে আগ্রহী ও প্রতিভাবান ছিলেন। হযরত মুহাম্মদ (সঃ), কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আইনস্টাইন, নিউটন ও আব্রাহাম লিংকন প্রমুখের মধ্যে সম্ভাবনার বীজ শিশুকাল হতেই দেখা দিয়েছিল। শিশুরা উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বিশ্বকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারে। ইংরেজ কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ বলেছেন- ‘শিশুরাই জাতির পিতা’। কাজেই শিশুরা যদি উপযুক্ত শিক্ষা অর্জন করতে পারে তাহলেই দেশের মঙ্গল, জাতির উন্নতি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের অধিকাংশ ছেলেমেয়েই শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের দেশের অনেক শিশু অবহেলা-অনাদরে, অশিক্ষা-কুশিক্ষা এবং অপুষ্টিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। আবার অনেক শিশু বেঁচে থাকার তাগিদে শিশু শ্রমে জড়িত হচ্ছে। শিশুরা নানাভাবে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ এই শিশুরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব দিবে। কেবল শিশুর স্বার্থেই নয় জাতির কল্যাণ ও দেশের উন্নতির জন্যই শিশু বিকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত জরুরী।
শিক্ষা: আজকের শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ পিতার দায়িত্ব পালন করবে। তাই শিশুদের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা উচিত। শিশুদের সঠিক পরিচর্যাই ভবিষ্যতে উন্নত জাতি গঠনের প্রধান শর্ত।
“ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা
সব শিশুদের অন্তরে।”
মূলভাব : শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ এবং তাদের মধ্যেই নিহিত রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা।
সম্প্রসারিত-ভাব : “চাইল্ড ইজ দি ফাদার অব দি ম্যান” [Child is the father of the men] অর্থাৎ শিশুরাই হচ্ছে মানুষ তথা জাতির পিতা। শিশুরা সমাজ এবং জাতির ভবিষ্যৎ এবং দেশের স্বপ্ন ও আশা। সকলেরই এ প্রত্যাশা যে, আজকের শিশুরাই একদিন আদর্শ নাগরিক হিসেবে বিকশিত হয়ে সমাজ এবং দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং দেশ ও জাতির সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। সে জন্য শিশুদের যথাযথ শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এদেশে উপযুক্ত পরিবেশ এবং শিক্ষার অভাবে বহু শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। তাই সকলকে এ সম্বন্ধে সজাগ থাকতে হবে এবং শিশুদের উপযুক্ত বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে দেশ ও জাতির উন্নতি হবে।
শিশুদের মধ্যে সম্ভাবনার আলো নিহিত আছে। তাকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে হবে। এর মধ্যেই দেশ ও জাতির সম্ভাবনা বিদ্যমান।
“ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা
সব শিশুদের অন্তরে।”
আজকের শিশুরা একদিন বড় হয়ে জীবনের বৃহত্তর দায়িত্ব পালন করবে। তাই বর্তমানে শিশুর জীবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সে গুরুত্বের কথা চিন্তা করে শিশুদের যথাযোগ্য পরিচর্যা করতে হবে। শিশুর পিতারা আজকে যে দায়িত্বের ভার বহন করছেন একদিন শিশুরা বড় হয়ে সে পর্যায়ে উপনীত হবে। তাই শিশুর পিতার বৈশিষ্ট্য এখনকার শিশুদের মনের মধ্যে নিহিত আছে। তার মধ্যে যেন তার পিতা ঘুমিয়ে আছে। শিশু জীবনের এই বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করলে তার গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা করা যায়। একদিন শিশুটি বড় হয়ে যখন জীবনের গুরুদায়িত্ব বহন করবে তখন যাতে সে তা সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারে সে ব্যাপারে তাকে তৈরি করতে হবে। তার এমন পরিচর্যা করা বাঞ্ছনীয় যাতে সে যথার্থ যোগ্য হয়ে উঠতে পারে- তার পিতার মত দায়িত্ব বহনের ক্ষমতা জন্মায়। শিশু জীবনের এই গুরুত্ব অবশ্যই স্বীকার করে তার জীবন গঠনে তৎপর হতে হবে।