Call

পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় পথের দু’ধারে আছে মোর দেবালয়

 ,

তীর্থ পবিত্র স্থান ও পুণ্যক্ষেত্র। অনেক মানুষ মনে করে সৃষ্টিকর্তার স্থান তীর্থে বা মন্দিরে। মানুষ তাই পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভের জন্য তীর্থে তীর্থে ভ্রমণ করে। পুণ্য প্রত্যাশী মানুষ লোকালয় থেকে বহুদূর পথের প্রান্তে নির্জন স্থানে বা মন্দিরে পবিত্র মনে স্রষ্টাকে স্মরণ করে। স্রষ্টার করুণা লাভের চেষ্টা করে। মানুষ ভাবে তীর্থই বুঝি সৃষ্টিকর্তার সাথে মিলনের একমাত্র পবিত্র স্থান। এই ভুল বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে যারা পথের দু’পাশের অসহায় মানুষকে অবহেলা করে অন্ধভাবে চলে, পথের শেষে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভে তারা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। কেননা দেবতার অধিস্থান শুধু মন্দিরে বা তীর্থে নয়, তিনি সর্বত্রই বিরাজমান। সুঃখ-দুঃখের এই মানব সংসারে সৃষ্টিকর্তা বহুরূপে তার সৃষ্টির মধ্যেই বিরাজ করেন। তাঁকে পথের দু’পাশেও পাওয়া যায়, গহীন অরণ্যেও পাওয়া যায়, আবার জনাকীর্ণ লোকালয়েও পাওয়া যায়। সব মানুষকে একটি গভীর সত্য মনে রাখতে হবে যে, মানুষকে ভালোবাসা ও সেবার মাধ্যমেই সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া সম্ভব। যিনি মানুষকে ভালোবাসতে পেরেছেন পৃথিবীর সকল স্থানই তার কাছে তীর্থভূমি মনে হয়। মানুষকে ভালোবেসে জগৎ সংসারকে তীর্থক্ষেত্রে পরিণত করাই মানুষের বড় ধর্ম। মনুষ্যত্ত্বের গুণে মানুষ যখন নিজের স্বার্থের কথা ভুলে পরার্থে, মানুষের কল্যাণে, অসহায়ের সাহায্যে, আর্ত-পীড়িতের সেবার নিজেকে বিলিয়ে দেয় তখনই সৃষ্টিকর্তার সন্ধান পায়। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন “জীব সেবাই ঈশ্বর সেবা।” অর্থঃ াৎ সৃষ্টিকর্তাকে পেতে হলে প্রথমেই তাঁর সৃষ্টিকে ভালোবাসতে হবে। মানব সমাজের প্রত্যেক জীবকে ভালোবাসাই সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়ার একমাত্র উপায়। সমাজ বিচ্ছিন্ন কোনো দূরবর্তী স্থানকে তীর্থ বা দেবালয় ভাবা ভুল।

শিক্ষা: সৃষ্টিকর্তার কাছে পৌঁছাতে বহু দূরের তীর্থ ভ্রমণ নয়, সৃষ্টিকর্তার প্রত্যেক সৃষ্টিকে ভালোবাসা, সেবা করা ও মানব কল্যাণে জীবন বিলিয়ে দেওয়াই একমাত্র উপায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয়, 

পথের দু'ধারে আছে মোর দেবালয়

মূলভাব : এ পৃথিবীতে মানুষ স্রষ্টার প্রতি ভক্তির জন্য উপাসনালয় গড়ে তুলেছেন। নিবৃতে স্রষ্টার ধ্যান করলে তাঁকে পাওয়া যাবে; এটাই মানুষের বিশ্বাস। 

ভাবসম্প্রসারণ : মানুষ জগৎ সংসারে লক্ষ লক্ষ বছর আগে থেকে বাস করে আসছে। পৃথিবীতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বসবাস। ধর্মীয় অনুভূতি, স্রষ্টাকে অনুসন্ধান ও স্রষ্টার প্রতি ভক্তির কারণে মানুষ উপাসনালয়, মন্দির-মসজিদ ইত্যাদি গড়ে তুলেছে। মানুষ মনে করে উপাসনাগৃহে নিভৃতে স্রষ্টার ধ্যান করলে তাঁকে পাওয়া যায়। মানুষের ধারণা স্রষ্টা শুধু এখানেই বিরাজ করেন, অন্য জায়গায় স্রষ্টা নেই। কিন্তু নির্দিষ্ট উপাসনাগৃহে গিয়ে মুক্তি পেতে চাইলে এবং পুণ্য অর্জনের আশা করলে কি হবে, সেখানে মুক্তি নেই এবং স্রষ্টাকেও পাওয়া যায় না। কারণ স্রষ্টা বিরাজ করেন সৃষ্টির মধ্যে, মানুষের মধ্যে। দেবালয়ের বা উপাসনাগৃহের চারপাশে রয়েছে সৃষ্টি জগৎ, দেবালয়ের পথ জুড়ে আছে অসংখ্য মানুষের দল। তাদের সেবা করতে পারলে এবং তাদের আপন করে নিতে পারলে প্রকৃত কাজ হবে। মানুষের সেবাই হলো প্রকৃত উপাসনা। মানুষই শ্রেষ্ঠ দেবালয়। 

সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ কেবল উপাসনালয়ের মধ্যে নয়; উপাসনালয়ের বাইরেও অনেক দেবালয় আছে। আসলে, শ্রেষ্ঠ দেবলয় হলো মানুষ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Sumya Akter

Call

পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয়, 

পথের দু'ধারে আছে মোর দেবালয়

ভাব-সম্প্রসারণ : সমগ্র জীবনের সাধনার শেষে মানুষ সিদ্ধিলাভ করতে চায়। জীবন-পথের শেষ প্রান্তে এসে মানুষ জীবনের পরম বাঞ্ছিতকে পেতে চায়। সে জন্যে দূর-দূরান্তের দুর্গম যাত্রাপথ অতিক্রম করে পরিণত বয়সে মানুষ পবিত্র তীর্থস্থানে এসে উপস্থিত হয়। সেখানে স্রষ্টা কিংবা দেবতার আরাধনা করে তারা তৃপ্তিলাভ করে। আবহমান কাল ধরে মানুষ এভাবেই ধর্মসাধনা করে আসছে।

কিন্তু ধর্মসাধনা কেবল পবিত্র তীর্থস্থান দর্শনের মধ্যেই সীমিত হতে পারে না। প্রকৃত ধর্মসাধক জানেন, স্রষ্টার অধিষ্ঠান কেবল উপাসনালয়ে নয়, দেবতার অধিষ্ঠান কেবল তীর্থস্থানে বা প্রতিষ্ঠিত পাষাণের মূর্তির মধ্যে নয়। স্রষ্টা ও দেবতার আসন রয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে। দুঃখী, নিরন্ন মানুষের জীবনের সধ্যে তাঁর মহিমাময় আসন পাতা। মানুষের প্রেম, প্রীতি, মমতা ও ভালোবাসার মধ্যে স্রষ্টার স্বরূপের বিচিত্র প্রকাশ। সুতরাং ধর্মসাধনা করতে হলে কিংবা স্রষ্টার লীলা উপলব্ধি করতে হলে কেবল তীর্থক্ষেত্রে গেলে চলে না, জীবনের চলার পথে পদে পদে তাঁকে পাওয়ার সাধনা করা যায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা কাজকর্মের মধ্যেই আমরা স্রষ্টার অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি। জীবনের চলার পথে প্রতিটি লগ্নে দুঃখী ও বিপন্ন মানুষের কল্যাণে ছোট ছোট অবদান রেখেও আমরা স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করতে পারি। এ জন্যে জীবনের শেষ প্রান্তে উপনীত হওয়ার জন্যে অপেক্ষা করতে হয় না। প্রাত্যহিক জীবনের চলার পথে সৎকাজ, মহৎ চিন্তা ও মঙ্গল সাধনার মাধ্যমেই আমরা ধর্মসাধনায় অংশ নিতে পারি।

বস্তুত মানুষের সমগ্র জীবনই এক অর্থে তীর্থস্থান। কারণ, পরম স্রষ্টা বিরাজ করেন সব মানুষের মধ্যেই।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ