নির্বাক মিত্র অপেক্ষা স্পষ্টভাষী শত্রু অনেক ভাল : ভাবসম্প্রসারণ 


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Jobedali

Call

স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা ভাল

অথবা

নির্বাক মিত্র অপেক্ষা স্পষ্টভাষী শত্রু অনেক ভাল

শত্রু স্পষ্টভাষী হলে সতর্ক হওয়া যায় কিন্তু বন্ধু যদি তার মনোবাসনা তুলে না ধরে তাহলে বন্ধুত্বের মধ্যে ভাঙন দেখা দেয়। শত্রু বলতে আমরা প্রতিপক্ষকে এবং মিত্র বলতে বন্ধুকে বুঝি। বন্ধুতো একনিষ্ঠ সুহৃদকেই বলা যায়। যে অশনে বসনে, শ্মশানে মশানে সাথী হয়, সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বিপদে সহমর্মী, সহগামী, সমব্যথী হয়, তাকে মিত্র বলা যায়। শত্রুকে চেনা কষ্টকর বটে। কখন শত্রুতা করে বসে তা জানাও বড় সহজ হয়। কিন্তু যে শত্রু স্পষ্টভাষী, খোলাখুলি, বলে-কয়ে শত্রুতা করে, তাকে চিনতে কষ্ট হয় না। কিংবা তার শত্রুতার প্রতিরোধ করতেও পারা যায়। বন্ধু যদি নির্বাক থাকে অর্থাৎ কোনো সৎ পরামর্শ বা সুবুদ্ধি দান না করে, তাহলে সে বন্ধু জীবনের কোনো কল্যাণমূলক কাজে লাগে না। স্পষ্টভাষী শত্রু দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে অন্যের দোষত্রুটি বলে দেয়। সে কারো দোষত্রুটি এড়িয়ে যায় না। ফলশ্রুতিতে শত্রুর বক্র সমালোচনায় সে নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায়। রবি ঠাকুর তাই নিন্দুককে সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন, যুগজনমের বন্ধু ও আঁধার ঘরের আলো হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। স্পষ্টভাদিতাই সব সমাধান আনতে পারে। কিন্তু ধুয়াসার মাঝে বিচরণ করে সমস্যা সমাধান হয় না। বরং সমস্যার পাল্লা ভারি হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Sumya Akter

Call

স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা ভাল

অথবা

নির্বাক মিত্র অপেক্ষা স্পষ্টভাষী শত্রু অনেক ভাল

মূলভাব : নির্বাক ব্যক্তি সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায় না। কিন্তু স্পষ্টভাষী মানুষকে সহজেই বোঝা যায়। সুতরাং নির্বাক বন্ধুর চেয়ে স্পষ্টভাষী শত্রুও অনেক ভাল।

সম্প্রারিত ভাব : পার্থিক জীবনে মানুষের শত্রু-মিত্র উভয়ই থাকে। শত্রু মানুষের অনিষ্ট সাধন করে। পক্ষান্তরে, মিত্রের শুভকামনায় সে আত্মশক্তির বা মনোবল অর্জন করে। ব্যক্তিজীবনে মিত্রের প্রভাব খুব বেশি। প্রকৃত বন্ধুর পরামর্শে, সুবুদ্ধি, সক্রিয়তা, শুভাকাঙ্খা ব্যক্তিজীবনকে সামনে চলার শক্তি দান করে। বন্ধুর বন্ধুত্বের সুশীতল ছায়ায় মানুষ তার অসহায় মুহূর্তগুলো কাটিয়ে দেয়। তাই এক প্রখ্যাত মনীষি বলেছেন, বন্ধুত্ব হচ্ছে ছায়াদানকারী বৃক্ষের মতো। কিন্তু যে মিত্রতা শুধুমাত্র অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে স্থাপিত হয় সেটি কল্যাণের প্রতীক নয়। যে বন্ধু শুধু সুশীতল ছায়া দান করে, কিন্তু প্রয়োজনে অলস বন্ধুকে রৌদ্রের খরতাপে দগ্ধ করে খুঁটি করে না তার চেয়ে শত্রুর স্পষ্টভাষণ অনেক গুণে শ্রেয়। ব্যক্তি জীবনে নির্বাক মিত্রের উপস্থিতি নিক্রিয়, নিষ্প্রাণ।

শত্রু মানুষকে আক্রমণের সুযোগ খোঁজে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে আক্রমণ ব্যক্তির কর্মের কড়া সমালোচনার মাধ্যমে আসে। চারিত্রিক ক্রটিসমূহ চিহ্নিত করে শত্রু তা দিয়ে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করে দিতে চায। শত্রুর এ প্রচেষ্টা মানুষের জন্য কল্যাণকর। কারণ, এতে নিজের চারিত্রিক দুর্বলতাসমূহ অবহিত হয়ে ব্যক্তি নিজেকে সংশোধন করতে পারেন। একজন মানুষের চরিত্রে ভালো-মন্দ দু’টি দিকই থাকে। নির্বাক মিত্র ব্যক্তির চরিত্রের অসৎ দিকগুলোর এড়িয়ে সৎ গুণাবলির সূত্র ধরে ঘনিষ্ঠতা লাভ করে। অন্যদিকে, শত্রু ব্যক্তির সৎ গুণাবলিকে উপেক্ষা করে অসৎ দিকগুলোর সমালোচনা করে। এতে সে শত্রুর স্পষ্ট ভাষণ থেকে অসৎ দিকগুলো সম্পর্কে জানতে পারে এবং সংশোধনের চেষ্টা করে। স্পষ্টভাষী শত্রু অবচেতনভাবে ব্যক্তির চারিত্রিক উত্তরণের পথ তৈরি করে দেয়। সে কারণে, নির্বাক মিত্রে চেয়ে স্পষ্টভাষী শত্রু ভাল।

স্পষ্টভাষী শত্রুর সমালোচনা মানুষকে সঠিক ও সুন্দর পথে পরিচালনা করে। এজন্য স্পষ্টভাষী শত্রুকে বন্ধুর মর্যাদা দেওয়া ‍উচিৎ এবং নির্বাক বন্ধুর সাহচার্য ত্যাগ করা উত্তম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

Call

জীবনে চলার পথে যেমন অনেক বন্ধু জোটে তেমনি অনেক শত্রুও সৃষ্টি হয়। তবে বন্ধুর ভূমিকা যেমন সর্বক্ষেত্রে মানুষের চলার পথে সহায়ক হয় না তেমনি কোন কোন ক্ষেত্রে শত্রুর সমালোচক ভূমিকা থেকেও মানুষ আশাতীত উপকৃত হয়ে থাকে।দৈনন্দিন বাস্তব জীবনে মানুষের বন্ধু সংসর্গের প্রয়োজন হয়। সুখ-দুঃখের সহমর্মিতা প্রকাশ, বিপদে সহায়তা, দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থায় সুপরামর্শদান ভুল পদক্ষেপ নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে বন্ধু মানুষের জীবনে পরম সুহূদের ভূমিকা রাখে। কিন্তু অনেক সময় বন্ধুত্বের কারণে অনেকে লোকের ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্দেশ করে না। ফলে মানুষ নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায় না। অনেক সময় বন্ধুত্ব নষ্ট হবার আশঙ্কায় বন্ধু-বন্ধুর প্রয়োজনের মুহূর্তে স্পষ্ট সত্য উচ্চারণ করার ভয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে। প্রয়োজনের মুহূর্তে বন্ধু যদি নির্বাক ভূমিকা পালন করে,উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবার পরামর্শ না দেয় তবে বন্ধুর ভূমিকা বন্ধুসুলভ না হয়ে বরং বিপরীত হয়। পক্ষান্তরে পরম শত্রুও যদি সুস্পষ্ট ভাষায় কারো ভুল ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে সে ভুল ত্রুটি শুধরে নেওয়া সহজেই সম্ভব হয়। এ ধরনের শত্রু মানুষের জীবনে নির্বাক মিত্রের চেয়ে বরং উপকারী সুহূদের ভূমিকা রাখে। এ জন্যে প্রজ্ঞাবান লোকেরা নির্বাক মিত্রের চেয়ে স্পষ্টভাষী শত্রুর ভূমিকা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাঁদের ধারণা,স্পষ্টভাষী শত্রু যেভাবে মানুষের দোষ-ত্রুটির দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাতে মানুষ সচেতন ও সতর্ক হবার সুযোগ পায়, নিজেদের ত্রুটি বিচ্যুতি সংশোধনের জন্য সচেষ্ট হতে পারে। পরিণামে মানুষ সঠিক পন্থা ও পদক্ষেপ নিতে পারে, চারিত্রিক ত্রুটি সংশোধন করতে সক্ষম হয়।প্রকৃত মিত্র যিনি তার ভূমিকা নির্বাক মিত্রের অনুরূপ হওয়া উচিত নয়। স্পষ্ট ভাষায় বন্ধুর ভুল-ত্রুটি দেখিয়ে দিয়ে তা সংশোধনের পরামর্শ দেয়া প্রকৃত বন্ধুর কাজ আর এটাই হচ্ছে প্রকৃত বন্ধুর সার্থকতা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

ভাব-সম্প্রসারণ : মানব জীবন সুষমাময় করে তোলার জন্য শত্রু সানি্নধ্য পরিহার করা যেমন বাঞ্ছনীয় তেমনি একজন ভালো বন্ধুর সাহচর্য কামনা করা একান্ত প্রয়োজনীয়। তবে স্পষ্টভাষী শত্রু জীবনের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর। আর নির্বাক বন্ধু জীবনের কোনো কাজে আসে না। এ ধরনের শত্রু তখন বন্ধুর চেয়ে বেশি উপকার করে থাকে। জীবনে চলার পথে মানুষ দু'ধরনের ব্যক্তির সাহচর্য পায়_ বন্ধু ও শত্রু। যে মানুষের শুভাকাঙ্ক্ষী ও হিতাকাঙ্ক্ষী সেই বন্ধু; আর যে মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর সেই শত্রু। এ ধারণাপ্রসূত জীবনবোধ থেকেই মানুষ শত্রু-মিত্রের ব্যবধান রচনা করে এবং শত্রুর সঙ্গ পরিহারপূর্বক মিত্রের সাহচর্য গ্রহণ করে। জীবনের যে কোনো পর্যায়েই মানুষ বন্ধুর পরামর্শ, সদুপদেশ গ্রহণ করে কার্যসম্পাদন করে। কিন্তু বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে তাকে হতে হবে সতর্ক ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন। কেননা জীবনে বিত্তের অভাব না থাকলে মানুষের বন্ধুর অভাব হয় না। তখন বন্ধুবেশী অনেকেই তার মনোরঞ্জনের জন্য হয়ে পড়ে ধামাধরা ও স্তাবক। যিনি দূরদর্শী তিনি সব সময়ই এ ধরনের চরিত্র সম্পর্কে সচেতন থাকেন। তারা স্বীয় কর্মপন্থা নির্ধারণে বন্ধুদের পাশাপাশি শত্রুর সমালোচনা ও মতামতকে মূল্য দিয়ে থাকেন। শত্রুর সমালোচনাই তাকে দোষ-ত্রুটি সম্পর্কে সচেতন করে। ফলে তিনি পেয়ে যান সঠিক কর্তব্য পথের নির্দেশনা। একজন বন্ধু যদি তার বন্ধুর কাজের সমালোচনা করে তবে সে তার দোষ-গুণ সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। কিন্তু যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে সে বন্ধু পদবাচ্য নয়। কেননা তার দ্বারা বন্ধু যেমন উপকৃত হয় না, তেমনি সমাজও বঞ্চিত হয়। এ রূপ বন্ধুর চেয়ে বরং শত্রু অনেক ভালো। কেননা শত্রু তার সব কাজের সমালোচনা করবে, নিন্দা করবে এবং তদুপরি তাকে জনসমক্ষে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালাবে। শত্রুর স্পষ্ট কথায় সে মনে মনে রুষ্ট হলেও নিজে সংশোধিত হওয়ার সুযোগ পায়। এভাবে শত্রু ও নিন্দুকরা তাদের নিজের অজান্তেই সমাজের প্রভূত উপকার সাধন করে থাকে। বন্ধু ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। সে তার নিস্তরঙ্গ জীবনে সঙ্গ চায়, চায় বন্ধুত্ব। কিন্তু বন্ধুত্বের মোহে আকৃষ্ট না হয়ে শত্রুকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বন্ধুর মিষ্ট ভাষণের চেয়ে শত্রুর স্পষ্ট ভাষণে মানুষ সমাজে সংকট অতিক্রমণের দিকনির্দেশনা লাভ করতে পারে এবং ব্যক্তি তথা সমাজ জীবনকে করতে পারে সার্থক।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ