Call

শবে বরাতের ইবাদত নিয়ে মুসলিম সমাজে মতভেদ রয়েছে। একদল আলেম বলেন সারারাত ইবাদত বন্দিগী করে পরেরদিন রোজা রাখতে পারেন। আরেক দল আলেম বলছে এটা ঠিক না। জাতি আজ পথভ্রষ্ট। এই রাতের বিষয়ে চার ইমামের ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া যায়।

ইমাম মালেক (রহঃ) ও তার অনুসারী ফকিহ ও ইমামগণ এই রাতে বিশেষ ইবাদত পালন করতে নিষেধ করেছেন।

ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) এর মতে, এই রাতে ব্যক্তিগতভাবে একাকী নিজ গৃহের মধ্যে ইবাদত ও দোয়া মোনাজাতে থাকা মুস্তাহাব।

ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) ও ইমাম আহমদ (রহঃ) এই বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট মত ব্যক্ত করেননি।

অতএব মুসলিম উম্মাহদের উচিত যিনি যেই মাজহাব অনুসরণ করেন তিনি সেই মাজহাবের পরামর্শ নিতে পারেন।

এছাড়াও বিভিন্ন আলেম উলামাদের মতামত উল্লেখ করা হলোঃ

প্রথমতঃ হাদিস বিশারদদের মতে, ফজিলতপূর্ণ বিষয়ে যঈফ হাদিস আমলযোগ্য। তা ছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিসে এসেছে এবং আইয়ামে বীজ অর্থাৎ প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার বিষয়টিও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

দ্বিতীয়তঃ মধ্য শাবানে রাত জেগে ইবাদত ও দিনে রোজা রাখা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই অর্ধ শাবানের রাতে ব্যক্তিগতভাবে বাড়ীতে বা মসজিদে বিশেষ কিছু এবাদত বন্দেগী করা শরিয়ত সম্মত নয়।

শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত সম্পর্কে হাদিসটি হচ্ছে,

আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে সালাত পড়ো এবং এর দিনে সাওম রাখো। কেননা এ দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেনঃ কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিযিকপ্রার্থী, আমি তাকে রিযিক দান করবো। কে আছো রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করবো। কে আছো এই প্রার্থনাকারী। ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত 'তিনি এভাবে আহবান করেন'।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/, হাদিস নম্বরঃ ১৩৮৮ তাহক্বীক্ব আলবানী: যঈফ)।

উক্ত হাদিসের রাবী আবু বকর বিন আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আবু সাবরাহ সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি দুর্বল।

তবে এই রাতে মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে সাধারণ ক্ষমা সম্পর্কিত একটি হাসান তথা গ্রহণযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সেজন্য ইবনে তাইমিয়া (রহঃ)সহ অনেক স্কলারগন মধ্য শাবানের ফজীলতকে স্বীকার করেছেন।

শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত সম্পর্কে, আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে আত্নপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত তার সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করেন।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/, হাদিস নম্বরঃ ১৩৯০ হাদিসের মানঃ হাসান)।

◄❖► ◄❖ আল্লাহ-ই ভাল জানেন। ❖► ◄❖► ▬▬▬▬▬▬▬ ◄❖► ▬▬▬▬▬▬▬


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ