আসসালামু আলাইকুম। আমার নিচের দুইটি প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন।
১। ইউটিউব থেকে রিওয়ার্ড হিসেবে ভিডিও ক্রিয়েটরদের প্লে বাটন দেয়া হয়। কোনো চ্যানেল যদি ১ লক্ষ সাবস্ক্রাইব অর্জন করতে পারে তাহলে ইউটিউবের পক্ষ থেকে তাকে সিলভার প্লে বাটন দেয়া হয়। ১০ লক্ষ সাবস্ক্রাইব অর্জন করতে পারলে দেয়া হয় গোল্ডেন প্লে বাটন। একইভাবে আরও ২-৩ টি প্লে বাটন দেয়া হয়। এগুলোর জন্য অতিরিক্ত কোনো অর্থ প্রদান করতে হয় না। এই প্লে বাটন নেয়া কি জায়েজ?
২। ইউটিউবে স্পন্সরশীপের মাধ্যমে টাকা আয় করা যায়। এজন্য স্পন্সরকৃত কোম্পানির কোনো পণ্য ভিডিও তে ব্যবহার করতে হয় এবং ভিডিওর ডেসক্রিপশন বক্সে সেটির ক্রয়ের লিঙ্ক দিতে হয়। এভাবে টাকা আয় করা কি হালাল?
এই সম্পর্কিত হাদিস বা কুরআনের আয়াত থাকলে তা দিলে উপকৃত হব 

জাজাকাল্লাহ খাইরান।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
ahasanchy

Call

১) ‌প্লে বাটন নেয়া জা‌য়েজ কারন এটা আপনার অর্জন। 2) স্পন্সরশীপ নি‌তে পার‌বেন ত‌বে সেটা হালাল প্রডাক্ট হ‌তে হ‌বে। ধ‌রেন আপ‌নি কো‌নো হারাম প্রডাক্ট ( যেমন মদ, সুদ কোম্পা‌নি, সি‌নেমা ইত্যা‌দি) ‌কে প্রম‌োট কর‌ছেন তখন সেটা হারাম। কিন্তু যখন হালাল প্রডাক্ট (যেমন মে‌হে‌দি, পান্জা‌বি, মোবাইল, টি শার্ট, হালাল পণ্য বি‌ক্রি ক‌রে এমন কো‌নো কোম্পা‌নি ইত্যা‌দি) প্র‌মোট কর‌বেন তখন সেটা হালাল। ‌মোট কথা স্পন্সরশীফ এর প্রডাক্ট টা হালাল হ‌লে আপনার ইনকাম ও হালাল। 

আর এড‌সেন্স টাকাটা হারাম হ‌বে যে‌হেতু কিছু অশালীন বিজ্ঞাপন প্রদ‌র্শিত হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

(১) শরীয়তের বিধান অনুযায়ী যেসব ভিডিও দেখা জায়েজ নয়, সে সব ভিডিও আপলোড দেওয়া, তা থেকে ইনকাম করা, সেসব ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে রিওয়ার্ড হিসেবে ভিডিও ক্রিয়েটরদের প্লে বাটন নেওয়া কোনোটাই জায়েজ নেই।

অন্যায় কাজ নিজে করা যেমন বৈধ নয়, তেমনি সহযোগিতা করাও বৈধ নয়। তাই কোনো নাজায়েজ ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে রিওয়ার্ড হিসেবে ভিডিও ক্রিয়েটরদের প্লে বাটন নেওয়া জায়েজ নেই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (সূরা মায়িদা-২)।

হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯)।

★ সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেসব ভিডিও দেখা জায়েজ, সেসব ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে ভিডিও ক্রিয়েটরদের প্লে বাটন নেওয়া জায়েয আছে।

 (০২) যদি নাজায়েজ ভিডিও না হয়,তাহলে নিম্নের শর্তের ভিত্তিতে টাকা ইনকাম করা জায়েজ আছে।

★★ আমাদের জানতে হবে, ইউটিউব এর মাধ্যমে যে টাকা আয় করা হয় তার সোর্স কী, কেন আমাকে গুগল টাকা দিচ্ছে!

মূলতঃ গুগলের একটি বিশেষ সার্ভিস–গুগল এডসেন্স। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন অর্থের বিনিময়ে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সম্প্রচার করে। আর ওখান থেকে একটা নির্ধারিত একটা অংশ তারা ইউটিউবারদের দিয়ে থাকে।

সুতরাং বিজ্ঞাপনগুলো যদি অশ্লীল ও হারাম পণ্যের হয় তাহলে তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ হালাল হবে না। বরং, হারাম অর্থ হওয়ার পাশাপাশি হারামের প্রচার ও সহযোগিতা করার গোনাহ হবে।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য ইহকালে ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’। (নূর ১৯)।

নু'মান ইবনে বশির রাযি থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর এ উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন কোন রাখাল সংরক্ষিত চারণভূমির পাশে পশু চরায়, আশংকা রয়েছে সে পশু তার ভেতরে গিয়ে ঘাস খাবে। সাবধান! প্রত্যেক রাজারই সংরক্ষিত এলাকা থাকে, সাবধান আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হলো তার হারামকৃত বিষয়গুলো। জেনে, রেখো, দেহের মধ্যে এক টুকরা গোশত আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সমস্ত দেহই সুস্থ থাকে। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহই নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো, তা হলো 'কালব' হৃদয়। (সহীহ মুসলিম-১৫৯৯)।

★ সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্পন্সরকৃত কোম্পানির পণ্যের ভিডিও যদি শরয়ী সীমারেখার আওতায় থাকে,জায়েজ হয়, তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত স্পন্সরশীপের মাধ্যমে টাকা আয় করা জায়েজ হবে। অন্যথায় জায়েজ হবেনা।

★ সতর্কতা মূলক এহেন ইনকাম থেকে বেঁচে থাকাই উচিত। মুফতী ওলি উল্লাহ এর লিখন থেকে কপিকৃত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ