অনেকে বলে থাকে, ভগবান আর আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন একই, এই যুক্তি কতটুকু গ্রহনযোগ্য?
ইসলাম ধর্ম মতে ভগবান আর আল্লাহ এক নয়। ভগবান শব্দটিকে অনেকেই একই অর্থে ব্যবহার করেন। কিন্তু আল্লাহ, ভগবান এই দুইটি শব্দ এক নয়, যা সম্পূর্ণ আলাদা।
ভগবানঃ ভগ ও বান এই দুইটি শব্দের সন্ধির ফলে মূলতঃ ভগবান শব্দের উদ্ভব হয়েছে। ভগ শব্দটি গুনবাচক উপসর্গ এবং বান শব্দের অর্থ হলো অধিকারী কিংবা যার আছে অর্থে বুঝায়।
বান শব্দের পূর্বে গুনবাচক উপসর্গ ভগ শব্দটি বসানোর পর একত্রে ভগবান শব্দটি এসেছে। ভগ অর্থ ঐশ্বর্য্য এবং বান অর্থ অধিকারী, যার আছে। ঠিক যেভাবে যার সুন্দর রূপ আছে আমরা তাকে বলি রূপবান, যার ধন আছে ধনবান, ঠিক তদ্রুপ যিনি ভগ অর্থাত্ ঐশ্বর্যের অধিকারী তাকে বলে ভগবান।
ভগবান হলো জগদ্বীশ্বর, ঈশ্বর। এর স্ত্রী লিঙ্গ হলো ভগবতী, যার অর্থ হলো পরমেশ্বরী, দূর্গা।
আর যশ, বীর্য, ঐশ্বর্য, শ্রী, জ্ঞান, বৈরাগ্য এই ছয়টি গুন যার মধ্যে থাকে, তাকে বলা হয় ভগবান; আর সকল গুন যার মধ্যে থাকে তাকে বলে ঈশ্বর। আর ভগবান ঈশ্বর এক নয়।
অপরপক্ষে, আল্লাহ নিজেই তার পরিচয় দিচ্ছেন, আল্লাহ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে তা হলোঃ
১.বলো, তিনিই আল্লাহ, এক অদ্বিতীয়।
২.আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী।
৩.তিনি কাউকে জন্ম দেননি, এবং তাকে জন্ম দেওয়া হয়নি।
৪.আর তার সমকক্ষও নেই। (সূরা আল-ইখলাস)।
আল্লার কোন স্ত্রী লিংগ নেই। আল্লাহ শব্দটি হচ্ছে একক লা শরীক আল্লাহর ইসমে জাত বা মৌলিক নাম, মূল সত্তার পরিচায়ক নাম।
তাই সবশেষে বলব ভগবান আর আল্লাহ একই সত্ত্বা বলাটা যুক্তিযুক্ত নয়।
ধর্মীয় ভাবে দেখলে আগে কিতাবে সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য দেখতে হবে।
আল্লাহ সম্পর্কে বলা হয়েছে, আল্লাহু তায়ালা এক অদ্বিতীয়, তাহার কোন শরীক নেই, তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন। তাহার কোন মূর্তি নাই, তাহার আকার সম্পর্কেও কিছুই বলা হয়নি। সুরা ইখলাছ থেকে আরও ভাল জানতে পারবেন।
এখন ভগবানের বৈশিষ্ট্য যদি এর সাথে মিলে যায় তবে বলা যায় হ্যা এক। কিন্তু সনাতন ধর্ম ও তাদের কিতাব গ্রন্থ বা বেদ ইত্যাদি থেকে এই বৈশিষ্ট কিছুটা ঠিক আর কিছু ভিন্ন জানা যায়। এবং হিন্দু পন্ডিতদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারন পন্ডিতগন মুর্তি আছে বলে দাবি করে এর ফলে একটি আকৃতিও প্রকাশ পায়, আবার বহুজন স্রষ্টার অংশ যা ইসলামের সাথে মেলেনা তাই ভগবান ও আল্লাহ এক নয়।
তবে ধর্ম বিতর্ক বাদ দিয়া মানবিক চিন্তাই যদি এইরুপ ধরি যে, আল্লাহ যেমন সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, হিন্দু ধর্মমতে তেমনি ভগবান সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।
তবে মত যায় হোক মূল তো একজনই স্রষ্টা। কারন দুইজনের ভিন্ন ভিন্ন সৃষ্টি মানুষ নাই। হিন্দু, খ্রিস্ট, মুসলিম সকলের গঠন রক্ত মাংস একই। তাই ভিন্ন নাম হলেও যেহেতু স্রষ্টা এক তাই ভগবান ও আল্লাহ এক। শুধুমাত্র ধর্মে কি নামে ডাকতে হবে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের রীরিতে তাই নামও ভিন্ন হয়েগেছে। বিশ্বাসও ভিন্ন হয়ে গেছে।