দেশে এখন প্রচুর বজ্রপাত সহ ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশে বজ্রপাতের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারনে, দেশের বিভন্ন জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছ। অনেক জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা পুরাপুরি ঠিক হয়নি। দিন এনে দিনে খায় (দিনমজুরী) বা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ বিশেষ করে গ্রাম্য এলাকার লোকজন সব থেকে বেশি ভুক্তভুগি। গত কয়েক দিনের বজ্রপাতে, বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর এসেছে এবং বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

বজ্রপাতের সময় আপনার কি কি করনীয় ? 

বজ্রপাত সহ বৃষ্টির কারনে, প্রায় প্রতিদিনই হতাহতের খবর আসছে। পরিসংখ্যানে প্রকাশ, বিশ্বে বজ্রপাতে যত প্রাণহানি হয়, তার প্রায় অর্ধেকই হয় বাংলাদেশে। এটা থেকেই বোঝা যায় এর ভয়াবহতা কি পর্যায়ে পৌঁছেছে। একদিকে করোনার প্রভাবে (করোনা ভাইরাস লাইভ আপডেট জেনে নিন) সারাবিশ্বে চলছে রুদ্ধদ্বার অবস্থা অন্যদিকে বাংলাদেশের মানুষ ভুগছে নানান রকম প্রাকৃতিক ও মানুষ সৃষ্ট সমস্যাসমূহেতে। এর কারণে সাধারণ মানুষের জীবনের স্থবিরতা নেমে এসেছে।

  বজ্রপাতের সময় আপনার কি কি করনীয় ? 

১। ঝড় শুরু হলেই, আপনার পিসি রাউটার সহ সব ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস অফ করুন এবং কারেন্ট লাইন থেকে আনপ্লাগ করুন। ব্রডব্যান্ড লাইনের তার পিসি/রাউটার থেকে বিচ্ছিন্ন করুন!

২। আপনার ব্রডবান্ড লাইন যদি নরমাল কোরের তারের হয় তবে বজ্রপাতে পিসি রাউটারের ক্ষতির সম্ভবনা বেশি। তাই ভাল হয় IP প্রভাইডারকে বলে অপটিক্যাল কেবল দিয়ে লাইন নিন। এতে ঝুকি কিছুটা কমবে। এবং একটি ভালো ব্র্যান্ডে ভোল্টেজ টেবিলাইজার ব্যবহার করতে পারেন।

৩। নিশ্চিত হোন আপনার বাড়ির ইলেকট্রিক লাইন ঠিকমত আরথিং করা আছে কিনা। যদি না করা থাকে তবে দ্রুত এই ব্যাপারে ব্যাবস্থা নিন। লাইন আর্থিং বা গ্রাউন্ড করা থাকলে, ইলেক্ট্রনিক্স পুড়ে যাবার সম্ভবনা অনেক কমে যাবে। এছাড়া বাড়িতে সারকিট ব্রেকার লাগাতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ লাইনে বড় কোন সমস্যা হলে সাথে সাথেই, বিদ্যুৎ লাইন ডিস্কানেক্ট হয়ে যাবে। এতে মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স সামগ্রি নষ্ট হওয়া থেকে বাচবে। এর জন্য অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ানের হেল্প নিন।

৪। টিনের চালে বজ্রপাতেের ঝুকি অনেক বেশি। কারেন্ট লাইন আরথিং করার পাশাপাশি, চালের উপরে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।বিস্তারিত জানতে গুগল করুন/ইউটিউব সার্চ দিন, আর অভিজ্ঞ ইলেক্ট্রেশিয়ান এর পরামর্শ নিন।

৫। যদি বাড়িতে কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকে, তবে ঝড়ের সময় সবাই একসাথে না থেকে, আলাদা আলাদা রুমে অবস্থান করুন।

৬। বজ্রপাত শুরু হল সব ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস এবং ধাতব বস্তু থেকে দূরে থাকুন। লোহার জানালা, দরজা এবং লোহার গ্রিল থেকে দূরে থাকুন।

৭। ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে ঘর থেকে বের হবেন না, অতি জরুরি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পড়ে বাইরে বের হতে পারেন।

৮। বাহিরে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত সহ বৃষ্টি শুরু হলে, উঁচু গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার বা ধাতব খুটি, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন। সম্ভব হলে ফাঁকা জায়গায় অবস্

৯। বজ্রপাতে কেউ আহত হলে, বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মত করেই চিকিৎসা করতে হবে। কিভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হয় সেটা জানতে ইউটিউব সার্চ করতে পারেন। আপনার একটু সচেতনতা এক জনের জীবন বাঁচিয়ে দিতে পারে।

১১। প্রত্যেক প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সারের অবশ্যই IPS ব্যাকআপ থাকা উচিৎ। এলাকায় বজ্রপাত হলে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ নাও থাকতে পারে। লোকাল হ্যান্ডমেইড IPS থেকে ব্যান্ডের IPS কেনা ভাল। কারন ব্র্যান্ডের IPS এ UPS মোড ভাল কাজ করে, ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলেও, বৈদুতিক কাজে সমস্যা হবে না আর আপনার বাড়তি UPS কেনারও দরকার নেই। ৬০০VA ব্র্যান্ডের IPS এবং ১৩০AMP এর ব্যাটারিতে অনায়াসে ১০-১২ ঘন্টা পিসি এবং ১৬-২০ ঘন্টা ল্যপটপ ব্যাকআপ পাবেন।

১২। যারা অনলাইনে কাজ করেন তারা  ফ্রিল্যান্সারের কাজের পিসির পাশাপাশি, একটা বিকল্প পিসি অবশ্যই থাকা উচিৎ। নিদেন পক্ষে একটা ল্যাপটপ থাকা উচিৎ। সব ধরনের সতর্কতা নেয়ার পরেও, বজ্রপাতের কারনে পিসি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, বিকল্প একটা পিসি, বিপদের সময়ে আপনার সব থেকে কাছের বন্ধু হিসাবে হেল্প করবে।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে