বজ্রপাতের সময় বাতাসের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। আমরা জানি বাতাস বিদ্যুৎ অপরিবাহী। কিন্তু মেঘে জমা হওয়া স্থির বিদ্যুৎ এত উচ্চ বিভব শক্তি (১০ মিলিয়ন ভোল্ট পর্যন্ত) উৎপন্ন করে যে, তা বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার জন্য বাতাসের একটা সরু চ্যানেলকে আয়নিত করে পরিবাহী পথ (conductive path) তৈরি করা হয়। আয়নিত পরমাণু থেকে বিকীর্ণ শক্তি তিব্র আলোক ছটা তৈরি হয়।
আলোর বেগ সেকেন্ডে তিন লাখ কিলোমিটার আর শব্দের বেগ সেকেন্ডে মাত্র ৩৪০ মিটার। এ কারণে বিদ্যুতের ঝলক আগে দেখা যায় এবং শব্দ পরে শোনা যায়।
তবে বজ্রপাত ঘটতে গেলে বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন দুটি মেঘের মধ্যে অথবা একটি মেঘ এবং ভূমির মধ্যেও হতে পারে। ভূমিতে যদি আধানের নির্গমন ঘটে সেক্ষেত্রে আধানগুলো খুব দ্রুত ভূমিতে চলে আসার ক্ষেত্রে কোনো পরিবাহী পেলেই সেটাতে আকৃষ্ট হয়। যে কারণে বড় বড় গাছের মাথায় বেশি বজ্রপাত হয়। এই উপমহাদেশে নারিকেল গাছের নতুন কচি পাতা প্রায়ই দেখা যায় মাঝখানের দিকে সূচাল হয়ে থাকে। যার ফলে এখানে নারিকেল গাছে বেশি বজ্রপাত হয়। উচ্চ বৈদ্যুতিক আধানের ফলে পরিবাহী সব সময়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এ ক্ষেত্রে এই আধান নির্গমন যদি কোনো প্রাণীর মধ্য দিয়ে হয় তখন তার মৃত্যু ঘটে। এ কারণে খোলা মাঠে বিদ্যুৎ চমকালে শুয়ে পড়তে বলা হয়।