কুরআনুল কারিমে বেশ কিছু আয়াত আছে যেগুলোতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ যাকে চান তাকেই হেদায়েত তথা সঠিক পথের দিশা দান করেন। যেমন সুরা ইউনুসের ২৫ নং আয়াতে বলা হচ্ছে -

وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَىٰ دَارِ السَّلَامِ وَيَهْدِي مَن يَشَاءُ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ (25)

আর আল্লাহ শান্তি-নিরাপত্তার আলয়ের প্রতি আহবান জানান এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথ প্রদর্শন করেন।

এসব আয়াতের মানে এই নয় যে, কেউ ইসলাম গ্রহণ করতে চাইলেও তা গ্রহণ করতে পারবে না যদি আল্লাহ ইচ্ছা না করেন। যদি এসব আয়াতের অর্থ তাই হত তবে কুরআন নাযিল করার এবং নবী প্রেরণ করার কোন প্রয়োজনই আল্লাহর ছিল না। এই আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতগুলো করে।

سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَسْتَغْفَرْتَ لَهُمْ أَمْ لَمْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ لَن يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ

"তুমি তাদের জন্য ক্ষমা চাও বা না চাও (দুটোই) তাদের জন্য সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ফাসিক (চরম পাপাচারী) সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।" (সুরা মুনাফিকুন, আয়াত নং: ৬)

وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

"আর আল্লাহ অন্যায়কারীদের পথপ্রদর্শন করেন না।" ( সুরা বাকারা)

উপরোক্ত আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে আল্লাহ কেবল ফাসিক (চরম পাপাচারী) এবং জালিম (অন্যায়কারী) সম্প্রদায়কেই পথপ্রদর্শন করতে চান না এবং করেন না।

এখন অনেকে বলতে পারেন কিন্তু সমাজে এমন উদাহরণও দেখা যায় যে, অনেক পাপাচারী ব্যক্তিও ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরে সৎ জীবন-যাপন করেন। এর উত্তরে বলব, তারা আসলে না জেনেই পাপ করেছেন। তাই যখনই তারা তাদের পাপ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন তখনই সেটা ছেড়ে দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। সুতরাং, উক্ত আয়াতগুলোতে পাপাচারী এবং অত্যাচারী দ্বারা তাদেরকেই বুঝানো হচ্ছে যারা ভালভাবে জেনে বুঝেই পাপ করে, অন্যায় করে।

আপনারা যদি আবু সুফিয়ান (রা) এবং ওমর (রা) এর ইতিহাস পড়েন তবে দেখতে পাবেন তারা যতদিন তাদের ধর্মকে ঠিক মনে করেছেন ততদিন তারা নিজেদের ধর্মেই অটল থেকেছেন কিন্তু যখনই তারা ইসলামের সত্যতা এবং তাদের ধর্মের মিথ্যাচার ভালভাবে বুঝতে পেরেছেন তখনই তারা ইসলাম কবুল করেছেন।

ধন্যবাদ।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে