সুফীগণ পূর্নাঙ্গ ইসলামের ৪ টি স্তরের কথা
উল্লেখ করেছেন। যেমন:
১। শরীয়ত। ২। তরীকত। ৩। হাকিকত। ৪. মা’রিফত।
শরীয়তের পরিচয় : ইসলামী জীবন ব্যবস্থার যাবতীয় বিধানকে শরীয়ত বলা হয়। সর্বপ্রথম শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী হতে হয়। শরীয়তের যাবতীয় বিধানের মধ্য দিয়ে
সুফী তার প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে প্রতিটি
অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে আত্মার অনুগত করেন।
শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ ব্যতীত কেউ
সুফী হতে পারবে না।
জীবনের সকল দিককে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি বাহ্যিক এবং অন্যটি অভ্যন্তরীন বা আধ্যাত্মিক। ইহলৌকিক জীবনের অভাব অভিযোগ প্রয়োজন ও গুরুত্ব এবং ঈমান, নামাজ, রোজা,
হজ্জ ও যাকাত এর বাহ্যিক ক্রিয়া পদ্ধতির রূপ শরীয়তের অন্তর্গত।
তরিকতের পরিচয় : এর আধিভানিক অর্থ পথ, রাস্তা, নির্দেশনা। আর পারিভাষিক অর্থ পথ চলার নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান,
আইন-কানূন, নিয়মাবলী, পদ্ধতি-প্রণালী,
নির্দেশনা, নির্দেশিকা, দিশা-দিশারী প্রভৃতি।
তরিকত হচ্ছে আল্লাহকে পাওয়ার একটি সহজ পথ।
হাকিকতের পরিচয় : তরিকতের আমল সমূহ যথাযথভাবে পালন করার দ্বারা অন্তরে যে নূর সৃষ্টি হয় তাকে হকিকত বলে। আন্তরিকভাবে খোদার প্রেমের স্বাদ ও পরমাত্মার সাথে তার যোগাযোগ হয়। এটা হচ্ছে সুফী সাধনার চুড়ান্ত স্তর। এ স্তরে উন্নীত হলে সুফী ধ্যানের মাধ্যমে নিজস্ব অস্তিত্ব খোদার নিকট বিলীন করে দেন।
মা’রিফতের পরিচয় : অন্তরের নূরের দ্বারা
আল্লাহ পাকের সঙ্গে গড়ে উঠা সম্পর্ককে
মা‘রিফত বলে। এ পর্যায়ে উত্তীর্ণ ব্যক্তিকে
আ‘রিফ বা সুফী বলে। যাঁরা মাটির তৈরী মানুষ হয়েও মর্যাদায় আগুণের তৈরী জ্বীন এবং নুরের তৈরী ফেরশতেদার উর্দ্ধে উঠতে
সক্ষম হন।
সুফীদের পরিভাষায় মা’রিফত হচ্ছে, এমন এক স্তর যার মধ্যে বান্দাহ উপনীত হলে সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে অবগতি অর্জন করতে পারে। এ স্তরে পৌঁছতে পারলে তার অন্তর
আলোক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। তখন তিনি বস্তুর নিকট তত্ত্ব উপলব্ধি করতে শুরু করেন। মানব জীবন ও সৃষ্টি জীবনের গুপ্ত রহস্য তার নিকট স্পষ্ট হয়ে ভেসে ওঠে।